ঢাকা, নভেম্বর ২৮, ২০২৩, ১৪ অগ্রহায়ন ১৪৩০, স্থানীয় সময়: ২১:৩৭:৩৮

ওসির বিরুদ্ধে দুধের শিশুসহ মাকে রাতভর হাজতে আটকে রাখার অভিযোগ

| ২২ আশ্বিন ১৪৩০ | Saturday, October 7, 2023

ছবি: ইত্তেফাক

ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় ৪ মাসের শিশুসহ মা সুমি আক্তারকে (২৬) রাতভর হাজতে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে মুরাদনগর থানার ওসি আজিজুল বারীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তার স্বামীকেও ৪ ঘণ্টা আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

 

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) রাতে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে স্থানীয়দের মধ্যে।

 

জানা যায়, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদরের উত্তরপাড়া গ্রামের আব্দুল মোতালেবের স্ত্রী সুমি আক্তার তার ভাই দেলোয়ার হোসেনের ঋণের টাকার জিম্মাদার হয়। পরে সেই ঋণের কিস্তির টাকা দিতে না পারায় জিম্মাদার সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয় ঋণদাতা কোম্পানি। তারই ধারাবাহিকতায় সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আসে। শুক্রবার বিকালে মুরাদনগর থানার এসআই আলমগীর ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি সুমি আক্তারকে না পেয়ে তার অসুস্থ স্বামীকে বাড়ি থেকে থানায় নিয়ে যায়। এবং ৪ ঘণ্টা হাজতে আটকে রাখে। বিষয়টি জানতে পেরে সুমি আক্তার কোলের শিশু তোহাকে নিয়ে থানায় হাজির হলে ছেড়ে দেওয়া হয় তার স্বামীকে।

muradnagar, cumilla-1

 

স্বামী আব্দুল মোতালেব অভিযোগ করে বলেন, অপরাধ করেছে আমার স্ত্রী। তার অপরাধে তো অসুস্থ আমাকে ৪ ঘণ্টা হাজতে আটকে রাখতে পারে না। আমার শিশু কন্যা তোহা কি অপরাধ করেছ? যে তাকেও সারারাত হাজতে আটকে রাখতে হলো? পুলিশ চাইলে কি আমার স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে থানার ভিকটিম রুমে রাখতে পারতো না? আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

প্রবীণ আইনজীবী সৈয়দ নুরু বলেন, একজনের অপরাধে অন্যজনকে সাজা দিতে পারে না পুলিশ। শিশুদের জন্য আলাদা সেল থাকে। যদি পুলিশ হাজতে শিশুটিকে রাখে তাহলে এটা ঠিক হয়নি।

এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার এসআই আলমগীর বলেন, ওয়ারেন্ট তামিলের জন্য সুমি আক্তারের বাড়িতে গেলে সে পালিয়ে যায়। এ সময় তার স্বামীকে দেখে নেশাগ্রস্থ মনে হওয়ায় ওসিকে জানালে তিনি তাকে থানায় নিয়ে আসতে বলেন। পরে তার স্ত্রী থানায় আসলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকে হাজতে রাখা হয়নি। একটি রুমে রাখা হয়েছিলো।

muradnagar, cumilla pc 07-10-2023 (2)

মুরাদনগর থানার ওসি আজিজুল বারী জলিল বলেন, ওয়ারেন্ট-ভুক্ত আসামি সুমি আক্তার ও তার শিশু সন্তানকে থানার হাজতে রাখার বিষয়টি মিথ্যা। কারণ থানায় কোনো নারী সেল নেই। তাকে থানার নারী ও শিশু ডেস্কে রাখা হয়েছে। অপরদিকে স্বামীকে তুলে এনে ৪ ঘণ্টা আটকে রাখার বিষয়টিও মিথ্যা। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিযুষ চন্দ্র দাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, বিষয়টি আমরা খোঁজ নিয়ে দেখবো। যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।