গত ৬ আগস্ট কুমিল্লার দেবিদ্বারের ললিতাসার গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক কালিপদ মজুমদার এর গ্রামের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা ও ভাংচুর সহ তার পরিবারের উপর নির্যাতনের অংশ হিসেবে তার ভাতিজা তুষার কুমার মজুমদারকে বেধড়ক মারধর সহ তার হাতে মারাত্মক যখম করার অভিযোগ করেছেন কালিপদ মজুমদারের ছোট ভাই তুষার কুমার মজুমদারের বাবা ভুক্তভোগী পীযূষ কুমার মজুমদার ও তার স্ত্রী। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে প্রতিবেদককে তারা বলেন আমার ভাসুর কালিপদ মজুমদার একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সমাজ সেবক ও হিন্দুধর্মীয় নেতা দানশীল ব্যক্তিত্ব তিনি দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন সামাজিক কাজে যুক্ত থেকে মানব কল্যাণে কাজ করে আসছেন।
কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় গত ২০১৭ইং সালে ২৫ শে মার্চ ললিতাসার গ্রামে নারায়ন নাহার বাড়ীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী সহ কালিপদ মজুমদার পরিবারটি পাশে থেকে তাদেরকে আইনি সহায়তা সহ মানসিক বল জুটিয়ে মামলাটি সঠিক তদন্তের জন্য পুলিশের সহযোগিতায় বেশ কিছু আসামি গ্রেফতার করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে সহযোগিতা করেন। আর এই সহযোগিতাই আমাদের পরিবারের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ডাকাতি মামলার আসামী আজাদ গংয়ের নেতৃত্বে তাদের সাথে যুক্ত দুর্বৃত্তরা সুযোগ নিয়ে গত ৬ই আগস্ট বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে আমাদের বাড়িতে প্রায় এক দেড়শ লোকের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে দাঙ্গা ও লুটপাট এর উদ্দেশ্যে বিল্ডিং এর সিসি ক্যামেরা থাই গ্লাস, বাগানবাড়ী ভাঙচুরসহ ফ্যান লাইট ও অন্যান্য সামগ্রী লুটতরাজ করে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পুকুরে থাকা মাছ ধরে নিয়ে যায় এবং যাওয়ার সময় তারা হুমকি প্রদান করে বলেছেন যে, নাহা বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় যে মামলা হয়েছে সেই মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে এবং আসামীদেরকে ক্ষতিপূরণ না দিলে আমার বড় ভাই কালিপদ মজুমদারকে গ্রামে আসতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি প্রদান করেছেন,যদি কালিপদ মজুমদার গ্রামে আসে বা এ ঘটনায় থানা পুলিশ বা অন্য কাউকে জানানো হয় তাহলে আমাদের পুরো পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করা হবে বলে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন। বর্তমানে আমার বড় ভাই কালিপদ মজুমদার আসামিদের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে বাড়িতে আসতে পারছেন না। উপরোক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আসামিদের ভয়ে আমরা থানায় কোন প্রকার অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি করতে পারিনি।বর্তমানে আসামিদের ভয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন বলে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য পীযূষ কুমার মজুমদার। পরবর্তীতে উপরোক্ত ঘটনার খবর পেয়ে গত ২৯ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ১১ টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন হিউম্যান রাইট ডেভলপমেন্ট সেন্টার (এইচ.আর.ডি.সি) এর সম্পাদক মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান রামকৃষ্ণ সাহা, সাধারণ সম্পাদক মানিক চন্দ্র সরকার, দপ্তর সম্পাদক গোপাল চন্দ্র মন্ডল, সনাতন ট্রিবিউন এর সম্পাদক বিজয় দাস কাব্য,বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সনজিৎ দাস প্রমুখ। পরিদর্শনকালে তারা বলেন একজন সমাজসেবক দানশীল ও ধর্মানুরাগী ব্যক্তির বাড়িতে এ ধরনের ঘটনা নিন্দনীয় আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানোর পাশাপাশি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনুরোধ করবো যাতে করে তারা এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনকে একটি সুস্থ তদন্তের নির্দেশ সহ আসামিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে, ভুক্তভোগী পরিবারটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে সহযোগিতা করেন । পরে তারা গ্রামে বিভিন্ন পরিবার ও ব্যক্তির সাক্ষাৎ শেষে ঢাকায় ফিরে যান।