ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণসহ বেশ কিছু জরুরি কাজ শুরু করেছি যাতে স্বাস্থ্য খাতে মানুষের আস্থা ফিরে আসে।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৫৪তম বৈঠকের বিষয়বস্তু তুলে ধরা, সায়মা ওয়াজেদ এর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে যোগদান এবং সমসাময়িক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
সামন্ত লাল সেন বলেন, চিকিৎসা নিয়ে মানুষের আস্থা কম থাকায় অনেক মানুষ দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছে। অন্যদিকে, তৃণমূল পর্যায়ে মানুষ আস্থা না পেয়ে ঢাকায় চলে আসছে। ঢাকা থেকে মানুষ বিদেশে যাচ্ছে চিকিৎসা নিতে। সবখানেই একটা আস্থাহীনতা কাজ করছে মানুষের মনে। সেটি আমি বুঝি। সেটি বুঝেই আমি কাজ শুরু করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবার মান এমনভাবে বাড়াতে হবে যাতে স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে আস্থার অভাবে না থাকে। মানুষের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনা না গেলে মানুষ দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যাবেই।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে চিকিৎসা সেবার মান, ভালো চিকিৎসক ও চিকিৎসা সেবার প্রয়োজনীয় মেশিন বা যন্ত্রপাতি ঠিকভাবে দেওয়া গেলে তৃণমূলে মানুষের আস্থা চলে আসবে। সেটাই আমরা শুরু করে দিচ্ছি।
আগামী ১লা ফেব্রুয়ারি সায়মা ওয়াজেদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে যোগ দিবেন উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এটি একটি বিরাট অর্জন আমাদের দেশের জন্য। সায়মা ওয়াজেদ কেবল আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কন্যাই নন, তিনি অটিজম নিয়ে কাজ করে বিশ্বব্যাপী আলাদাভাবেও একজন পরিচিত মুখ।
সুইজারল্যান্ডে সভায় যোগদানের ফলপ্রসূ অগ্রগতি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী মার্চে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি (এনসিএল) পরিদর্শনে বাংলাদেশে আসবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিনিধি দল। তারা বাংলাদেশে টিকা পরীক্ষার সক্ষমতা পরীক্ষা করবে। বাংলাদেশে টিকা ও ওষুধ পরীক্ষার জন্য পরিপূর্ণ সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে কিনা তা তারা জানাবেন।
দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ডব্লিউএইচও ডিজির সাথে কথা হয়েছে জানিয়ে সামন্ত লাল সেন বলেন, স্বাস্থ্য বিষয়ে বাংলাদেশে সচেতনতা বৃদ্ধি করা সবচেয়ে জরুরি বলে আমরা একমত হয়েছি। আমাদের গ্রামের অনেক মানুষই জানে না পোড়া থেকে বাঁচার কৌশলগুলো। স্তন ক্যান্সারের বিষয়ে গ্রামের মানুষ এখনও লজ্জা পায়। পোড়ার চিকিৎসা ও সচেতনতার কাজে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিজি। সেখানে ইন্দোনেশিয়ার একটি দলও এসেছিল। তাদের সাথেও আমাদের কথা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশে ২০২৬ সালে বার্নের উপরে একটি আন্তজার্তিক সম্মেলন করতে চাই।
বেসরকারি অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উল্লেখ করে মন্ত্রী সঙ্গে করোনার বিষয়েও সচেতন হওয়ার আহবান জানান।
এ সময়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. সাইদুর রহমান, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।