দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়ার একটি অন্যতম কারণ আইবিএস বা ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রম। তবে অন্যান্য কারণেও দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়া হয়। তবে আইবিএসের কারণে হলে এটি পুরোপুরি নিরাময় করা যায় না। কারণ, আইবিএস একেবারে সারে না।
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৯৪০তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. আবুল কালাম আজাদ। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়ার সমস্যা নিয়ে যখন রোগী আসে তখন কী কারণে হয়েছে, সেটি বোঝেন কীভাবে?
উত্তর : বিশাল একটি কারণ হলো ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রম। তবে সব সময় দেখার চেষ্টা করি যে রেড ফ্লাক্স সাইন রয়েছে কি না। টিউবার কলোসিসের কারণে হতে পারে। এগুলোকে আমাদের ইতিহাস নিয়ে জেনে নিতে হবে।
যদি রোগী বলে আমার ছোটবেলা থেকে সমস্যা হচ্ছে, তাহলে ধরে নিই এটি অনেক দিন ধরে হচ্ছে। এরপর আমরা দেখার চেষ্টা করি তার এর সঙ্গে ওজন কমে যাওয়ার কোনো ইতিহাস রয়েছে কি না। কারণ, আইবিএসের রোগীর সাধারণত ওজন কম থাকে না। এর পর আমরা দেখতে চাই যে তার পায়খানার সঙ্গে কোনো রক্ত গেল কি না। আমরা বলি ম্যালিগনেন্সি বা টিবি হলে হাতে অনেক সময় চাকা পাওয়া যায়। কোনো চাকা পাওয়া যাচ্ছে কি না। আমরা এই জিনিসগুলো খোঁজার চেষ্টা করি। যদি দেখি যে এগুলোর কোনোটাই হচ্ছে না, তখন আমরা চিন্তা করি যে আইবিএস। এর মানে আমার সব রোগ বাদ দিলে কিন্তু আইবিএস পাই। তবে বাংলাদেশের অবস্থায় আমার জন্য তো সব রোগীর জন্য সব পরীক্ষা করা যাবে না। আমাকে যদি এগুলো বের করতে হয়, আমাকে প্রতিটা রোগী কোলনোস্কোপি করে নিতে হবে। বাংলাদেশের অবস্থা অনুযায়ী অর্থনৈতিক কারণে এটি সম্ভব নয়।
আইবিএসের ক্ষেত্রে অনেক রোগীরা এসে বলে আমার ক্রনিক ডায়রিয়া। এখন কিছু রোগ নির্ণয়ের বিষয় রয়েছে। এগুলোকে আমরা পূরণ করার চেষ্টা করি। যখন সেটি পূর্ণ হয়ে যায়, আমরা বোঝার চেষ্টা করি। আইবিএসে হয় পায়খানা কষা হয়ে যাবে বা পায়খানা পাতলা হবে। আরেকটি হলো ফ্রিকুয়েন্সটি পরিবর্তন হয়ে যায়। আর এই রোগী সব সময় বলবে আমার পায়খানার সঙ্গে আম যায়। আর পেটটা ফোলা ফোলা থাকে। আইবিএসের রোগী বলবে ঘুম থেকে উঠে পায়খানা হয়। আবার দেখা যাবে খাওয়ার পর বাথরুমে যাচ্ছে। তবে যদি আমরা দেখি পায়খানার জন্য তার রাতের ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। তখন কিন্তু আমরা আইবিএস ভাবব না। আইবিএস এমন এটি রোগ, যা কখনো ভালো হয় না। তাই আমাদের লক্ষ্যই থাকে তার যেন অস্বস্তি কম হয়, সেই ব্যবস্থা করা।