ঢাকা, মে ৩, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৮:০৫:৪৮

রোগী বাঁচাতে ভারত থেকে আসছে বিরল রক্ত

| ৫ আষাঢ় ১৪২৩ | Sunday, June 19, 2016

 

বাংলাদেশের এক মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে এগিয়ে এলো প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত। ভারতের মুম্বাই থেকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিরল গোত্রের ‘মুম্বাই ব্লাড গ্রুপ’-এর চার ইউনিট রক্ত। আজ শনিবার রাতের মধ্যেই তা বিমানযোগে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা।

গত ২১ মে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন বাংলাদেশের বাসিন্দা মুহাম্মদ কামরুজ্জামান নামে বছর পঁচিশের এক যুবক।  মাল্টিপল ফ্র্যাকচার হয় কামরুজ্জামানের। এরপরই দ্রুততার সঙ্গে তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে। তাঁর জীবন বাঁচাতে প্রয়োজন হয়ে পড়ে রক্ত।

কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন কামরুজ্জামানের শরীরের রক্তের গ্রুপ আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো নয়। তাঁকে বাঁচাতে চাই বিরল গোত্রের ‘মুম্বাই ব্লাড গ্রুপ’-এর রক্ত। কিন্তু সারা বাংলাদেশের ব্লাড ব্যাংকগুলোতেও সেই রক্তের জোগান না থাকায় চিন্তিত হয়ে পড়েন চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনরা। বাধ্য হয়েই খোঁজ পড়ে অন্যত্র। এমনকি প্রতিবেশী রাষ্ট্র  ভারতের খোঁজ শুরু হয় ওই রক্তের।

১২১ কোটির দেশ ভারতেও যেখানে রক্ত পরিবেশনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত শক্ত নেটওয়ার্ক রয়েছে সেখানেও মাত্র ৪০০ জন মানুষের শরীরে রয়েছে ‘মুম্বাই ব্লাড গ্রুপ’-এর রক্ত। এর মধ্যে আবার হাতে গোনা কয়েকজনই এই বিরল গ্রুপের রক্তদান করে থাকেন।

স্বাভাবিকভাবেই আরো চিন্তায় পড়ে যান চিকিৎসকরা। যদিও হাল ছাড়েননি তাঁরা। শুরু হয় অনলাইন এবং অফলাইনে রক্ত খোঁজার পালা। অবশেষে খোঁজ মেলে মুম্বাই শহরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘থিংক ফাউন্ডেশন’-’এর।

প্রতিবেশী দেশের এই মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন চার বিরল রক্তদাতা স্বপ্না সাবন্ত, কৃষ্ণানন্দ কোরি, মেহুল ভেলেকর এবং প্রবীণ শিন্ডে। আর গত বৃহস্পতিবারই সেই রক্ত নিতে বাংলাদেশ থেকে মুম্বাইয়ে ছুটে আসেন রোগীর ভাই শেখ তুহিনুর আলম।

তুহিনুর আলম বলেন, ‘আমরা কামরুজ্জামানকে বাঁচানোর আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। দুর্ঘটনায় তাঁর বাম পা ও হাতের হাড় ভেঙে টুকরো হয়ে গিয়েছে। তাঁর শ্রেণিচক্রও ভেঙে গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একমাত্র অস্ত্রোপচারের মধ্যে দিয়েই তাঁকে ভালো করা সম্ভব। তাঁকে বাঁচাতে আমরা ঢাকার সব হাসপাতাল ও ব্লাড ব্যাংকে তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি। কিন্তু তাঁদের অধিকাংশই এই রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে কোন হদিস দিতে পারেনি। এরপর হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীর স্বজনদেরও ব্লাড গ্রুপ পরীক্ষা করেন। কিন্তু একমাত্র তাঁর বোনের রক্তের সঙ্গে কামরুজ্জামানের গ্রুপ মিললেও বয়স অল্প হওয়ায় তার কাছ থেকে রক্ত নেওয়া যায়নি।