ঢাকা, মে ৬, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৫:৫৯:৩১

বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস আগামীকাল

| ২৪ বৈশাখ ১৪২৩ | Saturday, May 7, 2016

ঢাকা : বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা দিবস আগামীকাল। বাংলাদেশে এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে ‘নিশ্চিত হোক নিরাপদ ও কার্যকর ঔষধ।’
থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তের রোগ। এ রোগে রক্তে অক্সিজেন পরিবহনকারী হিমোগ্লোবিন কণার উৎপাদনে ত্রুটি হয়। রক্তে যদি স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিন কম থাকে তাহলে থ্যালাসেমিয়া হয়। এর ফলে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। থ্যালাসেমিয়া ধারণকারী মানুষ সাধারণত রক্তে অক্সিজেন স্বল্পতা বা অ্যানিমিয়াতে ভুগে থাকেন। অ্যানিমিয়ার ফলে অবসাদগ্রস্থতা থেকে শুরু করে অঙ্গহানি ঘটতে পারে।
বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতির তথ্য অনুযায়ী দেশে বর্তমানে প্রায় দেড় কোটি মানুষ থ্যালাসেমিয়ার বাহক। প্রতিবছর প্রায় ১৫ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এভাবেই বাড়ছে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, থ্যালাসেমিয়া অনেক ধরনের হতে পারে। তবে এর মধ্যে থ্যালাসেমিয়া মেজর ও বিটা থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের প্রায় শতকরা ৩ ভাগ মানুষ বিটা থ্যালাসেমিয়ার বাহক এবং প্রায় ৫ ভাগ মানুষ হিমোগ্লোবিন-ই-এর বাহক। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আমাদের দেশে অন্যান্য দেশের তুলনায় বিটা থ্যালাসেমিয়া এবং হিমোগ্লোবিন-ই ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় ১০ লাখ মানুষ বিটা থ্যালাসেমিয়ার বাহক এবং প্রায় ১ লাখ শিশু প্রতিবছর থ্যালাসেমিয়া মেজর রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুরা প্রতি ২ থেকে ৪ সপ্তাহ পরপর শরীরে রক্ত নিয়ে বেঁচে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পিতা-মাতার কারণে সন্তানরা থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়। এর থেকে প্রতিরোধের একমাত্র উপায় বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা এবং এ রোগের বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলা। থ্যালাসেমিয়ার জিন বহনকারী নারী গর্ভবতী হলে তার সন্তান প্রসবের আগে অথবা গর্ভাবস্থায় ৮ থেকে ১৪ সপ্তাহের মধ্যে প্রি-মেটাল ডায়াগনোসিস করিয়ে নিতে হবে। এ পরীক্ষার ফলে যদি দেখা যায় অনাগত সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে, তবে সন্তানটির মারাত্মক পরিণতির কথা ভেবে সন্তান গ্রহণ থেকে বিরত থাকা বা গর্ভপাত করার সুযোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আগামীকাল সকাল ৮ টা ৫০ মিনিটে এক শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। শোভাযাত্রার উদ্বোধন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান। পরে তিনি বর্হিবিভাগের ১ নং ভবনে থ্যালাসেনিয়া সেন্টার উদ্বোধন করবেন।
এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে আগামীকাল সকাল ৯টায় উত্তরার ল্যাব ওয়ান হাসপাতালে এক সচেতনতামূলক আলোচনাসভা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।