ঢাকা, এপ্রিল ৩০, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০১:৪৫:৫৮

বাচ্চাদের ওজনাধিক্য ও ওজন কমানোর মজার উপায়

| ৬ অগ্রহায়ন ১৪২৩ | Sunday, November 20, 2016

Blog pic-76

 

আপনার শিশুর ডাক্তার বলতে পারে বাচ্চার ওজন বেশি নাকি স্বাভাবিক। এর জন্য তিনি বাচ্চার ওজন ও উচ্চতা থেকে পরিমাপ করবেন তার Body Mass Index (BMI) বা বি এম আই। এটির উপর নির্ভর করে ডাক্তার বলতে পারেন বাচ্চার উচ্চতা অনুযায়ী তার ওজন ঠিক আছে কিনা এবং ডাক্তার আপনার বাচ্চার বি এম আই এর সাথে একই বয়সের ও একই সেক্সের অন্য বাচ্চার বি এম আই এর সাথে তুলনা করে দেখতে পারেন বাচ্চার ওজনআধিক্য আছে কিনা।

আপনার বাচ্চার স্বাস্থ্যকর ওজন কেন প্রয়োজন?
এটি অত্যন্ত জরুরি আপনার বাচ্চার ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা, কারণ অনিয়ন্ত্রিত ওজন বাচ্চার বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে যেমন-
# লিভারের সমস্যা
# অ্যাজমা যা ফুসফুসের এমন এক সমস্যায় যাতে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হয়
# উচ্চ রক্তচাপ
# পিঠে ও পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা
# স্লিপ এপনিয়া- যাতে ঘুমানোর সময় হঠাৎ করে কিছু সময়ের জন্য শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারে না ব্যাক্তি।

তাই এটি অনেক গুরুত্তপূর্ণ যে বাচ্চাদের ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা, তাছাড়া তাদের বড় হয়ে ওজন বেশি হবার সম্ভাবনা থাকে যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, হার্ট অ্যাটাক এবং কিছু ধরনের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও থাকে।

বাচ্চাদের ওজন কি কারণে বাড়তে পারে?
বাচ্চাদের ওজন বেশি হতে পারে বিভিন্ন কারণে। কিছু বাচ্চার খুব সহজেই অন্য বাচ্চাদের চাইতে ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এসব বাচ্চার ওজন বেশি হওয়ার কারণ মূলত অধিক পরিমানে খাবার গ্রহন, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও শারীরিক ভাবে কম পরিশ্রম বা সব সময় বসে বসে থাকা।

বাচ্চার কি কোন রকমের পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন হবে?
ডাক্তার বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে বাচ্চার জন্য কিছু টেস্ট বা পরীক্ষা নিরীক্ষা দিতে পারেন যেমন-
১। যেসব কারণে বাচ্চার ওজন বাড়তে পারে তার জন্য কিছু রক্ত পরীক্ষা করা।
২। ওজন বেশি থাকার জন্য যেসব স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে তা দেখতে কিছু রক্ত পরীক্ষা করা।

বাচ্চার স্বাস্থ্যকর ওজন ফিরে পেতে কি করা উচিত?
ওজন নিয়ন্ত্রিত রাখতে বাচ্চাকে স্বাস্থ্যকর খাবার ও শারীরিকভাবে এক্টিভ রাখতে হবে। জীবনধারায়  পরিবর্তন একবারে নিয়ে আসা অনেক সময় কঠিন হয়ে পরে। তাই এসব পরিবর্তন আনতে আপনাকে মনে রাখতে হবে এই নাম্বারগুলো ৫-২-১-০। এখানে প্রতিটি নম্বর আপনার বাচ্চার জন্য একটি লক্ষ্য হিসেবে কাজ করবে এবং প্রতিদিন এই নম্বর কে লক্ষ্য রেখে বাচ্চাকে তার পরিবর্তিত জীবনধারায় অভ্যস্ত করতে হবে।
# বাচ্চাকে সারদিনে ৫ বার ফল বা শাকসবজি খেতে দিন। ফ্রিজে রাখা ফল বা শাক সবজি খেতে পারে কিন্তু ফলের জুস এখানে হিসেবে আনা যাবে না। ৫ বারের প্রতি বার বলতে ১টি গোটা ফল (যেমন আপেল, কলা ইত্যাদি) বা অর্ধেক কাপ সবজি বোঝাবে। বাচ্চারা খেতে না চাইলে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করতে হবে।
# বাচ্চার প্রতিদিন পর্দার সামনে থাকা ২ ঘণ্টার নিচে নামিয়ে আনতে হবে যেমন টিভি দেখা, ভিডিও গেমস খেলা বা কম্পিউটারে সময় কাটানো ইত্যাদি।
# বাচ্চাকে প্রতিদিন অন্তত ১ ঘন্টা বা তার বেশি শারীরিক ব্যায়াম করতে উৎসাহিত করুন যেমন বিভিন্ন খেলাধুলা, নাচ বা বাহিরে খেলাধুলা করা ইত্যাদি।
# বাচ্চাকে ০ (শূন্য) পরিমান চিনিযুক্ত জুস বা ড্রিংকস পান করাতে হবে যেমন বিভিন্ন ফলের জুস যাতে অতিরিক্ত চিনির পরিমান একদম থাবে না।
এর মধ্যে সবগুলো লক্ষ্য একবারে মেনে চলা সম্ভব না হলে ধীরে ধীরে ১ টি বা ২ টি লক্ষ্য পূরণে বাচ্চাকে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে।

আর কি করা যেতে পারে ওজন নিয়ন্ত্রনে ?
# বাসায় অস্বাস্থ্যকর বা ওজন বাড়ায় এমন খাবার নিয়ে আসা কমাতে হবে।
# বাচ্চা পরিমিত ঘুম পাচ্ছে কিনা লক্ষ্য রাখতে হবে। ৬ বছর বয়সের বেশি বাচ্চার ১০-১২ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত যা বড় দের জন্য ৮-১০ ঘন্টা।
# সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিক ব্যায়াম একসাথে পুরো পরিবার মিলে করতে হবে যাতে বাচ্চার এতে আগ্রহ বাড়ে।
# বাচ্চাকে বুঝাতে হবে যে, এই সব কিছুই তাকে স্বাস্থ্যবান ও শক্তিশালী হতে মেনে চলা উচিত।
# বাচ্চাকে সাহায্য করুন যদি সে অধিক ওজন নিয়ে চিন্তিত থাকে বা স্কুলে এর জন্যমনোযোগ আনতে না পারে।

 এছাড়া বাচ্চার অধিক ওজন থাকলে ডাক্তারের কাছে গিয়ে নিয়মিত বি এম আই চেক আপ করাতে হবে এবং প্রয়োজনে একজন ডায়াটিশিয়ান কে দেখানো যেতে পারে।

দেশজুড়ে অভিজ্ঞ ডাক্তারদের খোঁজ পেতে ও অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে ভিজিট করুন www.doctorola.com অথবা কল করুন 16484 নম্বরে।