ঢাকা, মে ৮, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১০:৩৫:৪৩

ধর্মীয় উৎসবে পুলিশের প্রহরা কেন? ইসকনের রথযাত্রানুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সত্য রঞ্জন বাড়ৈ

| ১২ শ্রাবণ ১৪২২ | Monday, July 27, 2015

ছবি লোড হচ্ছে
‘মাদের ধর্মীয় উৎসবের সময় আজ কেন পুলিশ প্রহরার প্রয়োজন হয়? চারপাশে কেন এতো হিংসা বিদ্বেষ? এর উত্তর জানতে হলে অবশ্যই যেতে হবে গভীরে।
বেশি দুর যেতে হবে না, পার্শ্ববর্তী ভারতের কোন মুসলিম নাগরিককে যদি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী গিয়েও বলেন- আপনি বাংলাদেশে নাগরিকত্ব নিতে আসুন, আপনাকে অনেক সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে, একবারে চলে আসুন আরামে আয়েশে থাকবেন, তবু তারা আসবেন না। অথচ দেখুন, বাংলাদেশ থেকে কাউকে না জানিয়ে মুখ বুজে নীরবে প্রতিবেশী দেশে চলে যাচ্ছেন। সমস্যাটা কোথায় কেউ জানতেও চান না! আসলে আমাদের পারিবারিক ঐক্যই যেখানে ভঙ্গুর প্রায়, একজনের নিমন্ত্রন আরেকজন গ্রহণ করেন না, অসম্মান করেন, সেখানে অন্যরা সুযোগতো নেবেন সেটাই স্বাভাবিক। আমরা ধর্মীয় অনুষ্ঠান করি, অনুশাসন মানি না।ধর্মীয় উৎসবে পুলিশের প্রহরা কেন? ইসকনের রথযাত্রানুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সত্য রঞ্জন বাড়ৈধর্মের কথা শুনাই, নিজেরা অধর্মের কাজ করি। নিজের দোষ দেখি না, অন্যের দোষ ধরি। আসলে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধের জায়গাটা ফাঁকা হয়ে এসেছে। তাই সমাজের এই দূর্গতি।’ নারায়ণগঞ্জের সাহাপাড়ায় রবিবার বিকেলে উল্টো রথযাত্রা উপলক্ষ্যে ‘ইসকন’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান আতথির ভাষনে ‘বাংলাদেশ ইসকন’ এর সভাপতি ও পুলিশের সাবেক ডিআইজি সত্য রঞ্জন বাড়ৈ একথা বলেন। তিনি সাম্প্রতিককালে নারায়ণগঞ্জের একটি পরিবারের উদাহরণ টেনে বলেন,তাঁর ভাসুরের মেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে তাই তিনি উপবাস রয়েছেন। কি চমৎকার মমত্বমোধ। আমাদের পারিবারিক ঐক্য ও মায়ার বন্ধনের এটি একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তিনি পূর্ববর্তী এক বক্তার প্রসঙ্গ টেনে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এই সাহা পাড়ারই বেশ কয়েকজন বিশিষ্টজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সাহাপাড়ার এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে, তাঁরা কেউ আসেন নি।ধর্মীয় উৎসবে পুলিশের প্রহরা কেন? ইসকনের রথযাত্রানুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সত্য রঞ্জন বাড়ৈ
প্রধান অতিথি আরো একটি ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, বিদেশে পুলিশের চাকরির সুবাদে ‘উল্টোরথ’ উপলক্ষ্যে দেখেছি নানা ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের মানুষ সব ভেদাভদে ভুলে একসঙ্গে উল্টো রথের দড়ি ধরে টেনেছেন। ওই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানটি নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। আমাদের এই সোনার বাংলায় কবে হবেসেই দিন, সেই পরিবেশ, যেদিন সবাই মিলে এক রসিতে টানবো রথ। পুলিশের প্রহরা ছাড়াই নির্বিঘে পালন করবো সার্বজনীন উৎসব।
এসময় অনুষ্ঠানে শিল্পপতি নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা, বাসুদেব চন্দ্র সাহা প্রমূখ বিশেষ অতিথিদের অনুপস্থিতি নিয়ে কানাঘুষা শোনা যায়। রঞ্জিত কুমার দাসের সভাপতিত্বে ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্য্যে অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মন্দির অধ্যক্ষ্য শ্রী হংষ কৃষ্ণ দাস ব্রম্মচারী, বিষের বাঁশী সম্পাদক সুভাষ সাহা,শ্রী দীনবন্ধু গৌরাঙ্গ দাস, শ্রীগোপেশ্বর কৃষ্ণ দাস, শ্রী চন্দ্রভানু দাস, দেবদাস সাহা, লিটন সাহা, গোপিনাথ দাস প্রমূখ।আরোচনা শেষে শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ মন্দির তথা আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) এর তত্ত্বাবধানে শ্রী শ্রী জগন্নাথ বলদেব ষভদ্রা মহারানীর উল্টোরথযাত্রা মহোৎসব পালন করা হয়।ধর্মীয় উৎসবে পুলিশের প্রহরা কেন? ইসকনের রথযাত্রানুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সত্য রঞ্জন বাড়ৈএ উপলক্ষ্যে টানবাজার সাহাপাড়া থেকে রথযাত্রা উদ্ভোধন করেন প্রধান অতিথি সত্য রঞ্জন বাড়ৈ। রথযাত্রা টানবাজার থেকে শুরু হয়ে নিতাইগঞ্জের বলদেব আখড়া হয়ে শহরের বিভিন্ন এরাকা প্রদক্ষিণ করে শ্রী শ্রী রাধগোবিন্দ মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষ এ্ রথযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। কোন প্রকার অপ্রিিতকর ঘটনা ছাড়াই উল্টোরথযাত্রার মধ্য দিয়ে নয় দিনব্যাপী ইসকনের বর্ণাঢ্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালা শেষ হতে চলেছে। উল্লেখ্য, সোমবার, এরই ধারাবাহিকতায় শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ মন্দিরে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে বাউল ও পালা গানের আয়োজন করা হয়েছে। কৃষ্ণ ভক্তরা এজলসা উপভোগ করবেন।