ঢাকা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৯:৫০:৫৯

ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় দৈনিক বাড়তি পানি পানের দরকার রয়েছে?

| ২ কার্তিক ১৪২৪ | Tuesday, October 17, 2017

সাধারণত দৈনিক আট গ্লাস পানি পানে ত্বক ভালো থাকে। ছবি : সংগৃহীত

সুস্থ থাকার জন্য বয়স্কদের ক্ষেত্রে দৈনিক তিন লিটার পানি পান করা উচিত। ত্বক কোমল রাখার জন্য এই পরিমাণ পানি পানই যথেষ্ট। এর চেয়ে বেশি পানি ত্বকের কোমলতা রক্ষার জন্য দরকার নেই। এটিই বাস্তব।

তবে এ বিষয়টিই অনেকে মানতে রাজি নন। তাঁদের ধারণা, বেশি পানি পান করলে ত্বক কোমল থাকবে। আসলে ব্যাপারটি তা নয়। ত্বক কোমল রাখার জন্য বা ত্বকের কোমলতা রক্ষার জন্য প্রতিদিন আট গ্লাস পানি পান করলেই চলে। তবে দৈনিক তিন লিটার পানি পান করা শুধু ত্বক নয়, শরীরের জন্যও ভালো। ত্বক কোমল রাখার জন্য বিষয়টি শুধু পানি গ্রহণের ওপর নির্ভরশীল নয়, ত্বকের উপরিভাগে সেবাম নামে এক ধরনের তৈলাক্ত পদার্থ থাকে, যা ত্বকে পেলবতা জোগায়। তা ছাড়া সেবাম ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। সেবাম ত্বকের উপরিভাগে এমন একটি আবরণ তৈরি করে। এটি ভেদ করে ত্বকের মধ্যকার পানি উবে বের হয়ে যেতে পারে না। ত্বকের কোমলতা কিংবা পেলবতা রক্ষায় এই সেবামকে ত্বকের উপরিভাগে ধরে রাখাটাই আসল কাজ।

ত্বকের সেবামকে রক্ষা না করা কিংবা ত্বকের ওপর ময়েশ্চারাইজার কিংবা ক্রিমজাতীয় উপকরণ না মেখে শুধু পানি পান করে ত্বকের পেলবতা-কোমলতা কিংবা ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখা সম্ভব নয়। সেবাম ত্বকের মধ্যস্থিত গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত এক ধরনের তৈলাক্ত পদার্থ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেবাম নিঃসরণকারী গ্রন্থির নিঃসরণ ক্ষমতা লোপ পেতে থাকে। এতে ত্বকের উপরিভাগে সেবামের উপস্থিতি কমে যায়। এ কারণেই প্রবীণদের ত্বক খসখসে রুক্ষ হয়ে যায়।

এ ছাড়া বারবার গোসল করলে কিংবা দীর্ঘ সময় ধরে গোসল করলে, অর্থাৎ শরীর ভেজা থাকলেও ত্বকের উপরিভাগে সেবামের উপস্থিতি কমে যায়। এতে করেও ত্বক কোমলতা হারাতে পারে। সুতরাং গোসলের কারণে ত্বকের কোমলতা হ্রাস প্রতিরোধকল্পে গোসলের পরপরই ত্বকে ভেজা ভাব থাকা অবস্থায় তাকে ময়েশ্চারাইজিং প্রসাধন মেখে দিতে হবে। এতে ত্বক ভেজানোর কারণে ত্বকের মধ্যে শুষে যাওয়া পানিটুকু ভেতরে আটকা পড়ে যাবে এবং ত্বক কোমল থাকবে।

কাজেই ত্বকের কোমলতা রক্ষায় অযথা পানি পানের বাড়তি সতকর্তা না দেখিয়ে ত্বকের উপরিভাগের সেবামকে ধরে রাখা কিংবা ত্বকের মধ্যকার আর্দ্রতাকে হারিয়ে না যাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের বাড়তি সচেতনতা দেখাতে হবে।

লেখক : ডা. সজল আশফাক, সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।