ঢাকা, মে ১৯, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৬:৩৪:৪৯

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

পূর্ব লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল জিম্মি চুক্তিতে হামাসকে রাজি করাতে মিসর ও কাতারের দ্বারস্থ বাইডেন দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক মহড়া চীনের গাজা যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে রমজানে মুসলমানদের আল আকসায় নামাজ পড়ার অনুমতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ গাজায় তুমুল যুদ্ধ ॥ চলছে যুদ্ধবিরতির বৈঠক জর্ডানে মার্কিন সৈন্য হত্যা ॥ দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার অঙ্গীকার যুক্তরাষ্ট্রের গাজা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে জাতিসংঘ দূতদের সাক্ষাত জি৭ নেতাদের ভিডিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী না হলে বাইডেন ও অনিশ্চিত

‘রথচাইল্ড পরিবার’ যাদের হাতে নিয়ন্ত্রন হয় বিশ্ব অর্থনীতি!

| ২৭ পৌষ ১৪২২ | Sunday, January 10, 2016

‘রথচাইল্ড পরিবার’ যাদের হাতে নিয়ন্ত্রন হয় বিশ্ব অর্থনীতি!

ঢাকা: ইসরায়েল নিয়ে কথা উঠলেই অনেকে বলে উঠেন ওরা অনেক শক্তিশালী, সংঘবদ্ধ। তাই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ওদের পায়ের তলায়। আর এজন্যই ইসয়ালের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলে না। আবার অনেকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ইহুদীরা অনেক সম্পদশালী তাই ইসরায়েলকে ঘাটায় না কেউ। কিন্তু আসল ব্যাপার খানা যে আসলে কি, সেটিই আপানাদেরকে জানাব।

১৯৭৪ সালের কথা একজন ইহুদী ঋণ ব্যবসায়ী ও স্বর্ণকার ‘মোজেস আমসেল বউয়ার’ এর ঘর আলো করে জন্ম নেয় ‘মায়ের আমসেল বঊয়ার’। ছোট বেলা থেকেই তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন মায়েরের ব্যবসার হাতেখড়ি হয় বাবা মোজেসের জার্মানীর ফ্রাংকফুর্টে ইহুদী স্ট্রীটের একটা দোকান। এরপর বাবার মৃত্যুর পর কিছুদিন চাকরী করেন একটা ব্যাংকে। অসাধারন বুদ্ধিমত্তার গুনে কিছুদিনের মধ্যেই সেই ব্যাংকের পার্টনারও বনে যান তিনি। পরে আবার ফ্রাংকফুর্টে ফিরে বাবার ব্যবসা পূনরায় কিনে নিয়ে নিজের নাম বদলে রাখেন রথচাইল্ড । যা এখন মানুষ রথচাইল্ড ফ্যামিলি নামে চেনে।

তার পিছনে অবশ্য আরেকটি কারনও আছে। ১৭৬০ সালে সারা বিশ্বে প্রথম আধুনিক ব্যঙ্কিং ব্যবস্থার প্রবর্তন করা এই রথচাইল্ডের সাথে তার ব্যবসায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাত লাগান তার ৫ ছেলে। আর এখানে সার্থকতা পায় ‘রথ চাইল্ড ফ্যামিলি’ নামের।

ইউরোপের সর্বত্র ব্যাংকিং বা সোজা ভাষায় ঋণ ব্যবসায় একচ্ছত্র আধিপত্য আনতে রথ চাইল্ড ইউরোপের ঐ সময়কার সবচেয়ে সমৃদ্ধ শহর গুলাতে নেপলস (ইটালি), প্যারিস (ফ্রান্স) , ভিয়েনা (অস্ট্রিয়া) ও লন্ডন (ইংল্যান্ড) এ তার ৪ ছেলেকে পাঠিয়ে দেয় । এক ছেলে ফ্রাঙকফুর্ট থেকে যায় ব্যবসা দেখার জন্য । এই ৫টি শহর থেকে ইউরোপের সমস্ত রাজকীয় পরিবারের সাথে রথচাইল্ডরা ব্যবসা গড়ে তোলে। রথচাইল্ডরা বিভিন্ন দেশের রাজা-বাদশাদেরকে উচ্চ সুদে ঋণ, বন্ড ইত্যাদি দিত।

এই পরিবারটি ওই সময় এত প্রভাবশালী আর ক্ষমতাবান ছিল যে, ষড়যন্ত্র করে দুই দেশের রাজার মধ্যে যুদ্ধ লাগিয়ে দিতে পারত তারা । এরপর দুই রাজাকেই উচ্চ সুদে ঋণ দিত যুদ্ধের খরচ মেটানোর জন্য । যে দেশই জিততো না কেন, লাভের ভাগ রথচাইল্ডের হাতেই যেত।

একটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টি আপনাদের কাছে পরিস্কার হবে। যেমন নাথান রথচাইল্ড ১৮১১ সালে ফ্রান্সের নেপোলিয়নের সাথে ইংল্যান্ডের রাজার যুদ্ধ বাঁধিয়ে দিয়েছিল, যেটা বিখ্যাত ওয়াটার লু যুদ্ধ নামে পরিচিত। সেসময় যুদ্ধের কারণে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে কোন জাহাজই চলাচল করতে পারতো না । কিন্তু দেখা যেত একটি জাহাজ ঠিকই ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ড কিংবা ইংল্যান্ড থেকে ফ্রান্সে বাধাহীনভাবে যাচ্ছে । সেটাই ছিল এই রথ চাইল্ড পরিবারের ব্যবসায়িক জাহাজ ।

রথ চাইল্ড পরিবার তাদের ব্যবসায়িক বিষয়ে মুল্যবোধের ধার ধারে না। তারা নিজেরা ইহুদী হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারকে অর্থ যোগান দিয়েছে। আবার হিটলার বিরোধী পক্ষকেও অর্থ ঋন দিয়েছে। পরে আবার হলোকাস্ট ঘটিয়ে ইহুদীদের জন্য ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার পেছনেও বড় ভূমিকা রেখেছে । যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যবহার করে ইসরায়েল রাষ্ট্র টিকিয়ে রাখার পেছনেও এরা কলকাঠি নাড়ায় । ।

বর্তমান যুগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সাহায্যে ওই দেশসহ পুরো বিশ্বের অর্থনীতিকে নিজেদের ইচ্ছেমত নাচায় রথ চাইল্ড পরিবার। পাঠকদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক কিন্তু একটি বেসরকারি ব্যাংক। আর এর পুর্ণ নিয়ন্ত্রন রথ চাইল্ড পরিবারের হাতে। এই ব্যাংকের মাধ্যমে তারা ডলার ছাপায়, আমেরিকানদের থেকে ট্যাক্স সংগ্রহ করে এবং সেই ট্যাক্সের টাকাই সরকারকে ধার দেয় দেশ চালানোর জন্য। একই কাজ করে তারা ব্রিটিশ পাউন্ড নিয়েও।

এত প্রভাবশালী যে পরিবার তার অভ্যন্তরীন নিয়ম কানুনও কিন্তু বেশ কড়া। কেউ জানেনা এই পরিবারের কী পরিমাণ অর্থ সম্পদ রয়েছে । সেই ১৭৬০ সাল থেকেই এই পরিবার কঠোর গোপনীয়তা আর বংশের নিয়ম কানুন মেনে আসছে। মেয়ার রথ চাইল্ড মারা যাওয়ার আগে উইলে স্পষ্ট করে উল্লেখ করে গিয়েছিলেন যে, তাদের ব্যবসা কোনোভাবেই পরিবারের বাইরে যাবে না ও পরিবারের বড় ছেলেই হবে ব্যবসার প্রধান। বংশের রক্তের বিশুদ্ধতার জন্য বাইরের কাউকে বিয়ে করা যাবেনা, তাদের বিয়ে হবে শুধুমাত্র কাজিনদের মধ্যে। পরিবারের যারা ব্যবসার সাথে সরাসরি জড়িত থাকবেনা, তারাও ব্যবসার লাভের একটা ভাগ পেতে থাকবে। আড়াইশ বছর ধরে তাদের পারিবারিক এই নিয়ম একইভাবে চলে আসছে ।