কাশ্মীরে জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড পরিচালনার লক্ষ্যে ’৯০-র দশকে লস্কর-ই-তৈয়বার (এলইটি) মতো অনেক জঙ্গি সংগঠনকে প্রশিক্ষণ এবং সমর্থন দিয়েছে ইসলামাবাদ। গত রবিবার পাকিস্তানি সংবাদভিত্তিক চ্যানেল দুনিয়া নিউজকে দেয়া সাক্ষাত্কারে একথা বলেন দেশটির সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফ। সারা বিশ্বে ধর্মীয় জঙ্গিবাদ পাকিস্তানের হাত ধরেই সৃষ্টি হয় বলেও মন্তব্য করেন মোশাররফ। এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ রেডিও পাকিস্তানকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, আফগান তালেবানের ওপর আমাদের প্রভাব থাকলেও নিয়ন্ত্রণ নেই। খবর এনডিটিভি ও ডনের।
সাক্ষাত্কারে সাবেক সেনাপ্রধান মোশাররফ বলেন, ওই সময় লস্কর নেতা হাফিজ সাঈদ ও জাকিউর রেহমান লাকভি বীরোচিত সম্মান উপভোগ করতেন। তিনি বলেন, ’৯০-র দশকে কাশ্মীরে স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়। সেই সময় লস্কর-ই-তৈয়বাসহ ১১ থেকে ১২টি সংগঠন গড়ে ওঠে। আমরা তাদেরকে সমর্থন দেই এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করি, যাতে তারা কাশ্মিরে জীবন দিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে পারে। স্বাধীনতাকামী যোদ্ধা হাফিজ সাঈদ এবং লাকভি ওই সময় আমাদের কাছে ছিলেন নায়ক। পরে ধর্মীয় সংগঠনগুলো সন্ত্রাসী রূপ পরিগ্রহ করে। এখন পাকিস্তানে কথিত এসব সন্ত্রাসী নিজেদের মানুষকেই হত্যা করছে যা নিয়ন্ত্রণ এবং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
সাঈদ ও লাকভিকে নিয়ন্ত্রণ এবং থামানো যায় কিনা এমন প্রশ্নে মোশাররফ কোন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। মোশাররফ বলেন, সোভিয়েতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সারা বিশ্বে ধর্মীয় জঙ্গিবাদের সূত্রপাত ঘটে পাকিস্তানের হাত ধরেই। রাশিয়ার বিরুদ্ধে তালেবানকে আমরাই প্রশিক্ষণ দেই। তালেবান, হাক্কানি, ওসামা বিন লাদেন এবং জাওয়াহিরি তখন আমাদের কাছে ছিল বীর। কিন্তু পরে তারাই হয়ে যায় খলনায়ক। আমাদেরকে ওই সময়ের পরিস্থিতিটা অনুধাবন করতে হবে।
২০০৮ সালে সাঈদ এবং লাকভি মুম্বাই হামলার পরিকল্পনা করে। এতে ১৬৬ জন নিহত হয়েছিল। অথচ এ বছরের প্রথমদিকে পাকিস্তানের একটি আদালত লাকভিকে জামিন দেয়। এতে ভারতজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের সূচনা হয়।