ঢাকা, মে ৩, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৬:৪৮:০২

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

পূর্ব লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল জিম্মি চুক্তিতে হামাসকে রাজি করাতে মিসর ও কাতারের দ্বারস্থ বাইডেন দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক মহড়া চীনের গাজা যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে রমজানে মুসলমানদের আল আকসায় নামাজ পড়ার অনুমতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ গাজায় তুমুল যুদ্ধ ॥ চলছে যুদ্ধবিরতির বৈঠক জর্ডানে মার্কিন সৈন্য হত্যা ॥ দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার অঙ্গীকার যুক্তরাষ্ট্রের গাজা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে জাতিসংঘ দূতদের সাক্ষাত জি৭ নেতাদের ভিডিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী না হলে বাইডেন ও অনিশ্চিত

হিন্দু সংহতির ৮-ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ফ্রাসঁওয়া গোটিয়ে – কে উনি ?

| ২২ মাঘ ১৪২২ | Thursday, February 4, 2016

শ্রী তপন কুমার ঘোষ

এবার আমাদের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ফ্রাসঁওয়া গোটিয়ে। তাঁর বিষয়ে অনেকে জানতে চেয়েছেন।

এই ব্যক্তির জন্ম ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। জাতিতে ফরাসী। পেশায় সাংবাদিক ও লেখক। বর্তমানে থাকেন পন্ডিচেরীর অরোভিল-এ। মহর্ষি অরবিন্দ এবং শ্রীশ্রী রবিশংকরজীর অনুগামী।
gotiye

হিন্দু ধর্মের চরম অনুরাগী, ভারতীয় দর্শন ও ইতিহাসের বিশেষজ্ঞ। শুধু বিশেষজ্ঞই নন, তিনি আমাদের একজন জোরালো প্রবক্তা । ভণ্ড সেকুলারিজমের নামে হিন্দুধর্মের ও ভারতের যে চূড়ান্ত শত্রুতা করা হয়, সেই ভন্ডামিকে ভেঙ্গে চূরমার করে দিতে উনি সদা সক্রিয়। বর্তমানে ফ্রাসঁওয়া গোটিয়ে যে কাজটি হাতে নিয়েছেন, তার জন্য ভারত এবং হিন্দুরা ওঁর কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবে। উনি মহারাষ্ট্রের পুনে-তে একটি মিউজিয়াম বা সংগ্রহালয় তৈরী করেছেন। নাম “ছত্রপতি শিবাজী মিউজিয়াম”। উনি এটার নাম রাখতে চেয়েছিলেন “হিন্দু হলোকষ্ট মিউজিয়াম”, অর্থাৎ “হিন্দু গণহত্যা সংগ্রহালয়”। বিশ্ববিখ্যাত ঐতিহাসিক উইল ডুরান্ট (Will Durant) লিখেছেন, “মুসলমানের ভারত বিজয় ইতিহাসের সবথেকে বেশী রক্তাক্ত অধ্যায়।” (The Mohammedan Conquest of India is probably the bloodiest story in history)। অথচ ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা পড়ে- মুসলিম আক্রমণকারীরা ছিল মোলায়েম, মানবিক, শিল্প-সংগীতের গুণগ্রাহী। ইতিহাসের এই বিকৃত পাঠ আমাদের জাতিকে শেষ করে দিয়েছে। তাই একে সংশোধনের জন্য ফ্রাসঁওয়া গোটিয়ে তাঁর সংগ্রহালয়ের নাম “HINDU HOLOCAUST MUSEUM” দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এতটা কড়া সত্য সেকু ভারত হজম করতে পারবে না। তাই তাঁকে নাম পাল্টে “শিবাজী মিউজিয়াম” রাখতে হয়েছে।

হাজার বছর পরাধীন থাকার কারণে ভারতের অন্যতম দুর্ভাগ্য হল – আমাদের নিজেদের লেখা ইতিহাস না থাকা। এটা শুধু আমাদের দুর্ভাগ্য নয়, আমাদের আরো বহু দুর্ভাগ্যের মূলও এটা। সাধারণ ভারতবাসী তাদের নিজেদের ইতিহাস জানে না। জানেনা এই দেশ ও জাতির উপর বিদেশী ও বিধর্মী আক্রমণকারীদের কি বীভৎস, কি নৃশংস অত্যাচার হয়েছে। ভারতবাসী জানেনা আমাদের কি বিপুল সম্পদ ছিল, কি বিপুল জ্ঞানভান্ডার ছিল। মুসলিম আক্রমণে কিভাবে সেগুলো লুন্ঠিত ও ধ্বংস হয়েছে। বিদেশীর লেখা ও তাদের পেটোয়া ঐতিহাসিকদের লেখা ইতিহাস পড়ে আমাদের কয়েক প্রজন্মের মানুষ আত্মসম্মান হারিয়ে ফেলেছে। আত্মবিশ্বাস হারিয়ে চরম হীনমন্যতায় ভুগছে। স্বাধীন ভারতে বিখ্যাত ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের লেখা ইতিহাস বাদ দিয়ে কংগ্রেসী দালাল তারাচাঁদের ইতিহাস ছাত্রদেরকে পড়ানো হয়। শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকারের লেখা ইতিহাসকে বাদ দিয়ে তৃতীয় শ্রেণীর মার্কসবাদী ঐতিহাসিক ইরফান হাবিব, রোমিলা থাপার, বিপান চন্দ, তপন রায়চৌধুরী-দের লেখা বিকৃত ইতিহাসকে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য করা হয়েছে।
কিন্তু এসবের সংশোধন করবে কে ? কেউ এগিয়ে আসেনি। এগিয়ে এসেছেন ওই বিদেশী ফ্রাসঁওয়া গোটিয়ে। তারই পরিণাম পুনের এই “ছত্রপতি শিবাজী মিউজিয়াম”। চিত্র প্রদর্শনী ও বর্ণনার মাধ্যমে ভারতের সঠিক ইতিহাসকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন ও করে চলেছেন। আমার সঙ্গে ফ্রাসঁওয়া গোটিয়ের পরিচয় অনেকদিনের। আমার কাজে সবসময় তাঁর সোচ্চার সমর্থন পেয়েছি। আমি তাঁর পুনের মিউজিয়ামও দেখে এসেছি। এখানে শিবাজী, রানা প্রতাপ, ঔরঙ্গজেব, কাশ্মীর, বাংলাদেশ ইত্যাদি বিষয়ে একটি করে প্রদর্শনী হল আছে। মাঝে মাঝে ভারতের বিভিন্ন স্থানে এই প্রদর্শনীগুলো তিনি FACT (Forum Against Continuous Terrorism) নামক সংস্থার পক্ষ থেকে দেখানোর আয়োজন করেন। ২০০৮ সালে ঠাকুরনগরে মতুয়া মেলায় FACT-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আমরা হিন্দু সংহতি এরকম একটি বিরাট প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলাম। বিষয় – বাংলাদেশে হিন্দুর উপর অত্যাচার। লক্ষ লক্ষ মানুষ সেই প্রদর্শনী দেখেছিলেন।
ফ্রাসঁওয়া তাঁর পুনের মিউজিয়ামকে আরো সমৃদ্ধ করার কাজ তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি এবার আমাদের ১৪-ই ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি।