ঢাকা, নভেম্বর ২১, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১২:৫৮:১৬

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ইস্কনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সংবাদ সম্মেলন। মওলানা ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল ব্রাজিলের বিনিয়োগ চায় ঢাকা তিন শূন্যের ধারণার ওপর ভিত্তি করে পৃথিবী গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে অস্ট্রিয়ার অনাবাসিক রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাত রোমে ‘পোপ ফ্রান্সিস ইউনূস ত্রি-জিরো ক্লাব’ উদ্বোধন দুর্বল ব্যাংকগুলোকে চলতি সপ্তাহেই বিশেষ তারল্য-সহায়তা দেওয়া হচ্ছে শুধু শিক্ষায় এসেই কেন থমকে যায় পদোন্নতি আইয়ুব, এরশাদ, হাসিনার বিরুদ্ধে মুখে মুখে ফিরেছে যেসব স্লোগান বিএনপির রোববারের সমাবেশ হচ্ছে না

সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ইস্কনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সংবাদ সম্মেলন।

| ২ অগ্রহায়ন ১৪৩১ | Saturday, November 16, 2024

—

স্বাধীনতা উত্তর বিগত ৫৩ বছর সহ ৫ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে সনাতন ধর্মালম্বীদের বাড়ি-ঘর, উপাসনালয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নি-সংযোগ ও লুটপাট এবং আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) সম্পর্কে উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপপ্রচারের প্রতিবাদে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদ এর উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে ।

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি- অধ্যাপক হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি, অধ্যাপক অশোক তরু, প্রধান সমন্বয়ক- শ্যামল রায়, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ আচার্য্য, যুগা-সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায়, মানিক চন্দ্র সরকার, লায়ন চন্দন কুমার ঘোষ,বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি)-এর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় প্রমুখ।

উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে নেতৃবৃন্দ বলেন ১৯৪৭ সাল থেকে ২০২৪ ইং সাল পর্যন্ত সনাতন সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর-মন্দির ভাংচুর, সম্পদ লুণ্ঠন, হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, ধর্মান্তরিত ও ধর্মীয় অবমাননার নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। কিন্তু একটি ঘটনারও সঠিক বিচার পাওয়া যায় নাই।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন- অনতিবিলম্বে ২০০১-২০২৪ সন পর্যন্ত সনাতনী সম্প্রদায়ের উপর সংগঠিত সকল অত্যাচার, নির্যাতন ও মঠ-মন্দির, জমি দখলের সুষ্ঠু বিচার, ৫ আগস্টের পর সংগঠিত সকল অত্যাচার ও নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দুষ্কৃতিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন, চাকুরিচ্যুতদের চাকুরিতে পুনর্বহাল, গণহারে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং সম্প্রতি ঐক্যবদ্ধ সনাতনী সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ঘোষিত ০৮ (আট) দফা দাবী বাস্তবায়ন করার জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সহ সকল উপদেষ্টাদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

সংগঠনের সমন্বয়ক শ্যামল রায় বলেন- ৫ আগস্ট ২০২৪ রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে সনাতন ধর্মালম্বীদের বাড়ি-ঘর, উপাসনালয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নি-সংযোগ ও লুটপাট চালানো হলেও সনাতনী সম্প্রদায় নিরাপত্তা ও বিচারের দাবীতে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে থানা বা বিজ্ঞ আদালতে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে নাই। প্রতিনিয়ত সনাতন সম্প্রদায়ের ব্যবসা ও সাধারণ মানুষের নিকট চাঁদা দাবী করা হয়েছে এবং হচ্ছে। দেশে আইন- শৃঙ্খলার চরম অবনতি হওয়ায় সনাতনী সম্প্রদায় এখন দেশে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। কোথাও কোথাও অভিযোগ এবং দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে বিচারের দাবীতে আন্দোলন সংগ্রাম করলেও সরকার সনাতনী সম্প্রদায়ের জান-মাল- সম্পদ ও নিরাপত্তায় তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায় নাই।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ আচার্য্য বলেন- ৫ আগস্টের পর ৯ তারিখ থেকে অদ্য পর্যন্ত সনাতনী সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রক্ষায় ৮। আট) দফা দাবী নিয়ে সনাতনী সম্প্রদায় ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করলেও দাবী আদায়ে অন্তবর্তীকালীন সরকারের দুর্গা পূজার একদিন ছুটি ব্যতিত তেমন কোন পদক্ষেপ দেখা যায় নাই। বরঞ্চ বক্তারা অত্যান্ত দুঃখের সাথে বলেন যে, বাংলাদেশের স্বনামধন্য ও জনপ্রিয় ‘জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’ পত্রিকায় ৫ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত ১০৬৮টি ঘটনার চিত্র তুলে ধরলেও সরকার বা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ঘটনাগুলোকে অস্বীকার এবং ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। যা সনাতনী সম্প্রদায়কে মর্মাহত ও ব্যতিত করেছে। বর্তমান সরকার উক্ত ঘটনাগুলো সুষ্ঠু তদন্তের জন্য কোন তদন্ত কমিশন এখনও গঠন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে নাই। যা অত্যান্ত দুঃখজনক, হতাশা, বৈষম্যমূলক ও বিমাতাস্বরূপ আচরণ বলে সনাতনীয় সম্প্রদায় মনে করে। যা জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী সফল আন্দোলন ও বিপ্লব-এর সাথে সাংঘর্ষিক।

ডাঃ মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায় বলেন- সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলায় একান্ন শক্তিপীঠের অন্যতম পীঠস্থান হইতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী কর্তৃক উপহারকৃত কালী মাতার স্বর্ণের মুকুটটি ১০ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখে বিকেলে চুরি হয়। দীর্ঘ ০১ (এক) মাস পার হলেও মুকুটটি উদ্ধার করা হয়নি। উক্ত মুকুটটি দ্রুত উদ্ধার করে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এই জঘন্য কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবী জানান।নিরীহ ব্যক্তিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানাচ্ছি।

অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় বলেন- কিছু ব্যক্তি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ও সেবামূলক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)-কে নিষিদ্ধ করার কথা বলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টসহ দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন। এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। সম্প্রতি আরও দেখা যাচ্ছে যে, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ঢালাও ভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আওয়ামী লীগের ট্যাগ লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে এবং বিভিন্ন অযুহাতে সরকারি চাকুরী থেকে সনাতনীয় সম্প্রদায়কে চাকুরীচ্যুতকরণ, নতুন সরকারি নিয়োগগুলোতে ও সংস্কার কমিটিগুলোতে সনাতনী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব না থাকা, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চাকুরীরত সনাতনীয় সম্প্রদায়ের লোকদের ও সনাতনী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গণহারে ঢালাও ভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের এবং সনাতনী শিক্ষক সহ সকল শিক্ষকদের চাকুরীচ্যুত ও লাঞ্ছনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। অনতিবিলম্বে চাকুরীচ্যুতদের পুনর্বহাল ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবী জানান।