ভারত: সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীর পূজিত দেবী মহাকালীর নামের সঙ্গে মিল রেখে ভারত এক মহাশক্তিশালী অস্ত্র গোপনে নির্মাণ করেছে। যার নাম কালী-৫০০০।
রক্ষা কালীর মতই এই ভয়ঙ্কর অস্ত্র ভারতকে শত্রুর যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র ও জঙ্গি বিমান হামলা থেকে রক্ষা করবে। এটি ভারতের একটি প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র হিসেবে তার অস্ত্র ভাণ্ডারে যোগ করেছে।
গোপন বলা হলেও এই অস্ত্র নির্মাণ কাজ আর গোপন থাকলো না। আর এসব কারণেই ভারতের প্রতিবেশী চীন চিন্তায় পড়ে গেছে। কালী-৫০০০ মত অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কাছেও নেই। বিশ্বে ভারতই একমাত্র দেশ যে এই অস্ত্র নির্মাণ করেছে। করেছে বললে ভুল হবে। ভারত এ ধরনের অস্ত্র নির্মাণ করতে পেরেছে।
ভারত কালী-৫০০০ অস্ত্র দিয়ে তার দিকে ধেয়ে আসা বিশ্বের যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্রকে ও জঙ্গি বিমানকে ধ্বংস করে দিতে পারে। এমনকি এই অস্ত্র দিয়ে ভারত মহাকাশে ঘুরতে থাকা বিভিন্ন দেশের কৃত্রিম উপগ্রহকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
১৯৮৫ সালে ভারত গোপনে কালী অস্ত্রের নির্মাণ কাজ শুরু করে। এর প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ছিলেন আর-চিদাম্বরম। ভারতের ভাবা গবেষণা ইন্সটিটিউট ও ডিআরডিওর বিজ্ঞানীরা মিলে ভয়ঙ্কর এই অস্ত্র তৈরি করে। ২০০৪ সালে কালী-৫০০০ অস্ত্রের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। KALI এর পুরো নাম ( কিলো অ্যাম্পিয়ার লিনিয়ার ইনজেক্টর)। কালী বানানোর সময় ভারত বলেছিল যে সে শিল্প কারখানার জন্য যন্ত্র বানাচ্ছে। পরে জানা গেল এটি ভারতের গোপন অস্ত্র। ভারতের সশস্ত্র বাহিনীতে কালী অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর গোটা বিশ্ব কালী সম্পর্কে জেনেছে।
কালী অস্ত্র কাজ করবে অনেকটা আধুনিক লেজার অস্ত্রের মত। কিন্তু এটি লেজার নয়। এটি বীম। কালী অস্ত্র থেকে নির্গত বীম ৪০গিগাওয়াট শক্তির ইলেকট্রন স্রোত ছাড়তে পারে। এই ইলেকট্রন স্ত্রোত শত্রু পক্ষের সকল অস্ত্র ধ্বংস করে দেবে।
কী ভাবে কাজ করবে কালী-৫০০০? কোনও ক্ষেপণাস্ত্র বা জঙ্গি বিমান ভারতের দিকে ধেয়ে আসছে দেখলেই, তাকে লক্ষ্য করে অসংখ্য ইলেকট্রন কণার তীব্র গতি-বেগসম্পন্ন স্রোত ছাড়বে কালী-৫০০০।
এই ইলেকট্রন কণার স্রোত প্রচণ্ড তপ্ত এবং বিদ্যুৎবাহী। সেই তপ্ত কণার স্রোত বা রশ্মি তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণে পরিণত হবে। সেই বিকিরণ মহাকাশে ছড়িয়ে থাকা মাইক্রোওয়েভের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম। ফলে কালী-৫০০০ থেকে নির্গত ইলেকট্রন স্রোত শেষ পর্যন্ত পরিণত হবে মাইক্রোওয়েভ বিকিরণে।
এই মাইক্রোওয়েভ বিকিরণ প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে গ্রাস করবে ভারতের দিকে ছুটে আসা যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র বা জঙ্গি বিমানকে। লেজার অস্ত্র দিয়েও ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা যায়। কিন্তু লেজার রশ্মি ক্ষেপণাস্ত্রে আঘাত করে তাতে ছিদ্র তৈরি করে সেটিকে ধ্বংস করে। এই পদ্ধতি সময় সাপেক্ষ। কালী-৫০০০ যে মাইক্রোওয়েভ বিকিরণ ছাড়ে, তা ছুটন্ত ক্ষেপণাস্ত্রের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্রটি ঝলসে যাবে। চোখের নিমেষে আকাশেই ধ্বংস হয়ে যাবে ক্ষেপণাস্ত্র।
পাকিস্তান তো বটেই, চীনও কালী মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমকে বিপজ্জনক হিসেবে দেখতে শুরু করেছে।
২০১৫ সালে ভারতের লোক সভায় কালী অস্ত্র সম্পর্কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রশ্ন করা হয়েছিল। তখন মনহোর পারিক্কর দেশের নিরাপত্তার জন্য এ সম্পর্কে তথ্য দেয়া যাবে না বলে জানায়।