ঢাকা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৮:৩৩:৪৭

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

পূর্ব লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল জিম্মি চুক্তিতে হামাসকে রাজি করাতে মিসর ও কাতারের দ্বারস্থ বাইডেন দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক মহড়া চীনের গাজা যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে রমজানে মুসলমানদের আল আকসায় নামাজ পড়ার অনুমতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ গাজায় তুমুল যুদ্ধ ॥ চলছে যুদ্ধবিরতির বৈঠক জর্ডানে মার্কিন সৈন্য হত্যা ॥ দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার অঙ্গীকার যুক্তরাষ্ট্রের গাজা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে জাতিসংঘ দূতদের সাক্ষাত জি৭ নেতাদের ভিডিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী না হলে বাইডেন ও অনিশ্চিত

মোদির নেতৃত্বে দিল্লির রাজপথে যোগসাধনা : অংশ নিলেন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ

| ৯ আষাঢ় ১৪২২ | Tuesday, June 23, 2015

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উৎসাহ আর উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বিশ্বজুড়ে গতকাল রোববার পালিত হলো ইন্টারন্যাশনাল ইয়োগা ডে বা আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। এদিন দিল্লির রাজপথে এক জমায়েতে বজ্রাসন আর পদ্মাসনে বসে ৪০ হাজার মানুষ। আর এর নেতৃত্ব দেন মোদি নিজে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গতকাল ভোরে দিল্লির প্রাণকেন্দ্র ইন্ডিয়া গেটের কাছে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণে এই যোগচর্চাই ছিল এ দিবসের মূল আয়োজন। সাদা পাজামা আর ফুল হাতা গেঞ্জির সঙ্গে তেরঙা স্কার্ফ গলায় ঝুলিয়ে রাজপথে বিছানো লাল মাদুরে যোগাসনে বসেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। মাইকে যোগ গুরু রামদেবের নির্দেশনা অনুসরণ করে মোদির পেছনে বিভিন্ন আসন চর্চা করেন অংশগ্রহণকারীরা। রাজপথের সবুজ চত্বরে বেজে উঠল তানপুরার সুর। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, ভারতীয় বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য ও পুলিশ মিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ ৩৫ মিনিটের এই কর্মসূচিতে অঙশ নেয় বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। ৩০ কোটি রুপি খরচ করে দিল্লির এই যোগ জমায়েতের আরেকটি লক্ষ্য ছিল একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি মানুষের যোগসাধনের গিনেজ রেকর্ড গড়া। এর আগের রেকর্ডটি হয়েছিল ২০০৫ সালে গোয়ালিয়রে।

বিবেকানন্দ আশ্রমের সেই আয়োজনে ২৯ হাজার ৯৭৩ জন অংশ নিয়েছিলেন। দিল্লির নয়নাভিরাম জনপথে মধ্য জুনের গনগনে সূর্যের নিচে দাঁড়িয়ে কিশোর-যুবা শিক্ষার্থী আর নানা বয়সী নাগরিকদের উদ্দেশে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রশ্ন রাখেন, এই রাজপথ একদিন যোগপথ হয়ে উঠতে পারে এমনটা কেউ কখনো ভেবেছিল? ৬৪ বছর বয়সী মোদি বলেন, যোগ কেবল দেহকে নমনীয় করার ব্যায়াম নয়, আত্মিক উন্নয়নেরও তরিকা। যোগ কেবল শরীরচর্চা নয়, তাহলে সার্কাসের দড়াবাজও যোগী হয়ে যেত। যে গুরুরা ভারতীয় এই প্রাচীন শাস্ত্রকে শত শত বছর ধরে রক্ষা করেছেন, তাদের প্রতি ভক্তি জানান প্রধানমন্ত্রী মোদি।

তিনি বলেন, মানব মনকে শান্তি আর সম্প্রীতির শিক্ষা দেয়ার নতুন এক যুগের সূচনা হলো আজ। টুইটার আর ফেসবুকে মোদির পৃষ্ঠায় প্রায়ই যোগের উপকারিতা নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট দেখা যায়। তিনি নিজেও প্রতিদিন যোগসাধন করেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর। মূলত তার ক‚টনীতিতেই জাতিসংঘ ২১ জুনকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ঘোষণা করে। কেবল ভারত নয়, জাতিসংঘের সদস্য ১৯৩টি দেশের মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন ছাড়া সব রাষ্ট্রেই যোগ দিবসের কিছু না কিছু অনুষ্ঠান থাকবে বলে বিবিসির খবরে বলা হয়।

এদিকে, নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে ৩০ হাজার মানুষের অংশগ্রহণে যোগ দিবসের অনুষ্ঠানে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ নিজেও আসনে বসেন। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনেরও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো সভ্যতার বিভিন্ন নমুনা থেকে ধারণা করা হয়, আর্যরা বেদ নিয়ে ভারতবর্ষে আসার অনেক আগে থেকেই এ ভূখণ্ডের পূর্ব অংশে, বিশেষ করে বঙ্গে যোগের চর্চা ছিল। পরে হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের সঙ্গে যোগ হয় যোগ সাধনা। শাস্ত্রের ভাষায়, জীবাত্মা ও পরমাত্মার মিলনই হলো যোগ, যার জন্য দরকার দেহ ও মনের প্রগাঢ় সংযোগ। অবশ্য মোদির এই যোগপ্রচারের বিরোধিতা রয়েছে খোদ ভারতেই। দেশটির মুসলমানদের একটি অংশের অভিযোগ, যোগ হিন্দু উপাসনার একটি অংশ এবং মোদি তা সবার ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রগতিশীলদের মধ্যেও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর যোগ উদ্যোগ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাদের মতে, মোদি ভারতের এই প্রাচীন শাস্ত্রকে হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনীতির হাতিয়ার বানাচ্ছেন। এসব সমালোচনার জবাবে ভারত সরকার বলেছে, গতকালের যোগ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া বাধ্যতামূলক নয়। আর মুসলমানরা এ উদ্যোগের বিরোধিতা করছেন বলে যেসব খবর আসছে, তা ‘অতিরঞ্জিত’।