কলকাতা-কথিত আছে তিনিই ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গীত শিক্ষা গুরু। তাঁর প্রয়াণের পর কেটে গিয়েছে ২০০ বছরের বেশি। আজও অবহেলিত থেকে গিয়েছেন নদিয়ার আনুলিয়া গ্রামের বিষ্ণু চক্রবর্তী।
রানাঘাট পুরসভা লাগোয়া চুর্নি নদীর ধার ঘেঁষে এক বর্ধিষ্ণু জনপদ আনুলিয়া। অষ্টাদশ শতকে এই গ্রামেই বাস ছিল বিষ্ণু চক্রবর্তী নামে সেই সময়ের খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পীর। মূলত তার প্রচেষ্টায় ভারতীয় সঙ্গীত ধারার সঙ্গে বাংলার যোগসূত্র স্থাপিত হয়। হিসনুল খাঁ এবং দেলওয়ার খাঁ-এর কাছে ধ্রুপদী এবং মিঞা মীরসেনের কাছে তাঁর খেয়াল গানের শিক্ষা। সেই সময় বাংলায় ধ্রুপদী গানের প্রধান শিল্পী হিসাবে তাঁকেই মনে করা হয়। এক সময়ে তিনি ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের গায়ক, সুরকার এবং সঙ্গীতাচার্য। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এক সময় বিষ্ণু চক্রবর্তীকে ঠাকুর বাড়ির সঙ্গীতাচার্য নিয়োগ করেন। বিষ্ণু চক্রবর্তী ছিলেন রবীন্দ্রনাথের প্রথম সঙ্গীত গুরু। নদিয়ার আনুলিয়ায় ছিল তাঁর আদি বাড়ি। যদিও সেই বাড়ির বর্তমানে কোনও অস্তিত্ব খুজেঁ পাওয়া যায়না। কারও কারও মতে তা চুর্নি গর্ভে চলে গিয়েছে। আর কালের নিয়মেই ক্রমশ যেন বিস্মৃত হয়েছেন বিশ্বকবির প্রথম সঙ্গীত গুরু। স্থানীয় একটি পাঠাগারে স্থাপিত হয়েছে তার স্মৃতি স্তম্ভ। রয়েছে বিষ্ণু চক্রবর্তীর নামাঙ্কিত মঞ্চ। সেই পাঠাগারে রয়েছে এই সঙ্গীত সাধকের মুর্তি। কিন্তু সবই পড়ে আছে অবহেলায়। চুর্নির পাড়ে বিস্মৃতির আধারেই ঠাঁই হয়েছে তাঁর। সরকারি তরফেও এই জায়গার কোনো উন্নয়ন বা বিষ্ণু চক্রবর্তীর স্মৃতি সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এখন সকলেই চাইছেন এই বিষয়ে উদ্যোগ নিক সরকার।
আনুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এর উপপ্রধান স্বপন ঘোষ জানান, এতো বড়ো এক মহান ব্যাক্তিত্ব আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। আমরা গ্রাম থেকে সাধ্য মতো যতটুকু পড়েছি বিষ্ণু বাবুর নাম রক্ষা করার চেষ্টা করছি। তাঁর বাড়ির কোনো অস্তিত্ব নাই।এখুনি সরকারি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ওনার স্মৃতি যাতে ভালো ভাবে রক্ষা পায়।