ঢাকা, মে ৭, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ২০:৪৭:৫৭

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

পূর্ব লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল জিম্মি চুক্তিতে হামাসকে রাজি করাতে মিসর ও কাতারের দ্বারস্থ বাইডেন দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক মহড়া চীনের গাজা যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে রমজানে মুসলমানদের আল আকসায় নামাজ পড়ার অনুমতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ গাজায় তুমুল যুদ্ধ ॥ চলছে যুদ্ধবিরতির বৈঠক জর্ডানে মার্কিন সৈন্য হত্যা ॥ দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার অঙ্গীকার যুক্তরাষ্ট্রের গাজা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে জাতিসংঘ দূতদের সাক্ষাত জি৭ নেতাদের ভিডিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী না হলে বাইডেন ও অনিশ্চিত

মুসলিম বহুবিবাহ নিয়ে যুগান্তকারী রায় দিলেন হিন্দু বিচারপতি

| ২৩ কার্তিক ১৪২২ | Saturday, November 7, 2015

_original

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত বহুবিবাহ সম্পর্কিত আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা করে অনেক মুসলিম তাদের একাধিক বিয়েকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করেন। ভারতের গুজরাট রাজ্যের হাইকোর্ট একটি মামলার রায় ঘোষণার সময় এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

ভারতের গুজরাটের হাইকোর্ট অভিন্ন দেওয়ানি দণ্ডবিধি তৈরি ও মুসলিম বহুবিবাহ প্রথা বন্ধের পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে ভারতের মুসলিম সমাজে বহুবিবাহ প্রথাকে ‘চরম জঘন্য পিতৃতান্ত্রিক’ আচরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন আদালত।রাজধানী আহমেদাবাদে বিনা অনুমতিতে দ্বিতীয় বিয়ে করায় জাফর আব্বাস নামের এক লোকের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার প্রথম স্ত্রী। উচ্চ আদালতে মামলা লড়ার সময় স্বামীটি কোরআনের বহু বিবাহের অনুমতিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে আদালত থেকে খুব শক্ত জবাব দেন।

গত বৃহস্পতিবার মামলার শুনানির সময় আদালত বলেন, কোরআন কখনোই বলেনি যে একজন মুসলমান তার স্ত্রীর সঙ্গে নিষ্ঠুর এবং অন্যায় আচরণ করতে পারবে বা প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ব্যাতিত দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবে।

আদালত আরো বলেন, “কিছু ‘ধান্দাবাজ’ মুসলিম একের অধিক বিয়ে করার অজুহাতে পবিত্র কোরআনকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছে।”

ইতিহাসের উদ্ধৃতি দিয়ে বিচারক পারদিওয়ালা আরও বলেন, ‘একটি শোষণমূলক সমাজে এতিম শিশু ও তাদের মায়েদের রক্ষা করতে পবিত্র কোরআনে শর্তসাপেক্ষে বহুবিবাহের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনকার দিনে নিজ স্বার্থের জন্য মানুষ এ রীতিকে ব্যবহার করছে।’বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এই মামলার পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘একটা সময় কোরআন যখন বহুবিবাহের অনুমতি দিয়েছিল তার পেছনে ন্যায়সঙ্গত কারণ ছিল। এখন যখন মানুষ কোরআনের এই পূর্বশর্তগুলো ব্যবহার করে তখন সেটা তারা করে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য।’

শুনানিতে স্ত্রী সাজিদা বলেন, তার স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে অবৈধ কারণ ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধি বহুবিবাহ সমর্থন করে না।

প্রথমে নিম্ন আদালতে রায় স্ত্রীর পক্ষে যাওয়ায় জাফর আব্বাস উচ্চ আদালতে আপিল করেন এই কারণ দেখিয়ে যে, মুসলমানদের নিজস্ব নিয়মে তারা চারটি পর্যন্ত বিয়ে করতে পারে।

আদালত এই দাবির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, ‘বহুবিবাহের কথা কোরআনে মাত্র এক জায়গায় বলা আছে, তাও সেখানে শর্ত প্রযোজ্য করে দেয়া আছে।’

বিচারপতি বলেছেন, ‘কিছু মুসলমান পুরুষ নবীজির পবিত্র বাণী এবং তার মাধ্যমে অবতীর্ণ হওয়া পবিত্র কোরআনকে ভুলভাবে ব্যাখা করে তাদের নিজস্ব কু-ইচ্ছা পূরণ করছে। কোরআন কখনোই বলে না যে পুরুষ তার স্ত্রীর প্রতি কোনো রকম অন্যায় করতে পারবে, তার অনুমতি ছাড়া আবার বিয়ে করতে পারবে।’

বিচারপতি আরও বলেন, ‘এখন সময় এসেছে মানুষ দেওয়ানি দণ্ডবিধি ঠিক মতো স্মরণ এবং মেনে চলবে। আধুনিক চিন্তাশীল সমাজের জন্য এইসব বিধি আর এড়িয়ে চলা উচিৎ নয়।’

বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এই মামলা চলাকালে অনেক ধর্মীয় এবং আইন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করেন, তারপর এই রায় দেন।

সুত্র- টাইমস অব ইন্ডিয়া