বেশ কিছুদিন ধরেই প্রচারটা চলছিল। প্রথমে ঠিক ছিল ২৭ শে জুন সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশে ঘটে চলা অবিরত হিন্দু নিপীড়নের বিরুদ্ধে হিন্দু সংহতি পথে নামবে। পরে রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রনব মুখার্জীর কলকাতা সফর’কে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান সূচীরর সামান্য পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তী দিন হিসেবে এই দিন ২৯ জুন তাই সংহতি সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহের অন্ত ছিল না।
নির্দিষ্ট সূচনা অনুসারে সকাল থেকেই দূরদূরান্ত থেকে কাতারে কাতারে মানুষ কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশনের সামনে ভীড় জমাতে শুরু করেন।
নির্ধারিত সময় দুপুর ১২টা’র ঠিক অব্যবহিত পরেই বেলা ১২টা ২০ মিঃ নাগাদ হিন্দু সংহতির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সংঘটনের মাননীয় প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শ্রী তপন ঘোষের পৌরহিত্যে প্রতিবাদ মিছিলটি তার পথ চলা শুরু করে। সভাপতি’র সূচনা ভাষনের মাধ্যমে মিছিলের শুভারম্ভ হয়।
…. ভাষনের শুরুতেই শ্রী ঘোষ তার চিরাচরিত জ্বালাময়ী ভঙ্গীমায় বাংলাদেশের প্রশাসনের তরফে সে দেশের মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী শেখ হাসিনা’কে তার দেশের হিন্দুদের জেহাদী আক্রমনের হাত থেকে বাঁচানোর অক্ষমতা প্রসঙ্গে তীব্র ভাষায় আক্রমন করেন। তিনি তার বক্তব্যে আরও তুলে ধরেন, কি ভাবে বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের বীজ অত্যন্ত গোপনে এবং সন্তর্পনে তবলীগ জামাতের হাত ধরে সীমান্ত পার হয়ে এই পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে সঞ্চারীত হচ্ছে। এর কুফল সম্পর্কে বিশেষ সচেতন থাকবার জন্য তিনি সভামঞ্চ থেকে উপস্থিত সমবেত শোতৃবৃন্দকে সতর্ক থাকতে উপদেশ দেন।
এর পর আকাশ বাতাশ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারের সেই মিছিল সর্পিল গতিতে অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ভাবে কলকাতার রাজপথ অতিক্রম করে ধীর গতীতে এগিয়ে চলে। বি আর সিং এবং এন আর এস হাসপাতাল’কে পিছনে ফেলে মৌলালীর পাশ দিয়ে মিছিল এর পর এ জে সি রোড ধরে। পথচলতি অজস্র মানুষের মাঝে লিফলেট বিলি করেন সংহতির কর্মীরা। মেঘ বৃষ্টি রোদ গায়ে মেখে কলকাতার মানুষ অবাক চোখে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ মিছিলের বিরল অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়ে থাকলেন। গন্ডগোলের আশঙ্কায় সম্পূর্ন মিছিলটিকে পুলিশ দিয়ে যেন এক দূর্ভেদ্য দূর্গে পরিনত করা হয়। এইসময় জোড়া গির্জার কাছে, পুলিশ মিছিলের গতি রোধ করলে সংহতি কর্মীদের সঙ্গে প্রশাসনের বচসা শুরু হয়।
পরিশেষে প্রশাসনের অনুমতিক্রমে সংহতি’র সম্পাদক শ্রী দেবতনু ভট্টাচার্য্যের নেতৃত্বে শ্রীমতি অর্পিতা মৈত্র সহ চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের মাননীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে দেখা করে বেলা ২টো নাগাদ স্মারকলিপি প্রদান করেন।
ইত্যাবসরে সংহতি কর্মীদের উদ্দেশ্যে ভাষন দেন শ্রী রাজকুমার সর্দার, শ্রী সমীর গুহরায়, শ্রী ব্রজেন দে এবং সর্বোপরি শ্রী তপন ঘোষ। সভাপতির ভাষনে শ্রী ঘোষের সাম্প্রতিক বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের সবিশেষ বর্ননা শেষে বিকেল সাড়ে তিন’টে নাগাদ মিছিলের পরিসমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।
হিন্দু সংহতি মিডিয়া, কলকাতা; ২৯শে জুন, ২০১৬…