ঢাকা, এপ্রিল ২৮, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০০:২৭:৩৩

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

পূর্ব লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল জিম্মি চুক্তিতে হামাসকে রাজি করাতে মিসর ও কাতারের দ্বারস্থ বাইডেন দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক মহড়া চীনের গাজা যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে রমজানে মুসলমানদের আল আকসায় নামাজ পড়ার অনুমতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ গাজায় তুমুল যুদ্ধ ॥ চলছে যুদ্ধবিরতির বৈঠক জর্ডানে মার্কিন সৈন্য হত্যা ॥ দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার অঙ্গীকার যুক্তরাষ্ট্রের গাজা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে জাতিসংঘ দূতদের সাক্ষাত জি৭ নেতাদের ভিডিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী না হলে বাইডেন ও অনিশ্চিত

বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমানটি সরকারকে দিতে চান ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন

| ২৪ মাঘ ১৪২২ | Saturday, February 6, 2016

Feature Imageস্বাধীনবাংলা২৪.কম ঢাকা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাহাত্তর সালের ১০ জানুয়ারি যে বিমানটিতে চড়ে লন্ডন থেকে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন, সেই ঐতিহাসিক ডিসি-১০ বিমানটি সরকারকে উপহার দিতে চান এর বর্তমান মালিক।
জানা গেছে, এয়ারফোর্সের প্রকাশ্য নিলামে পুরনো ২৩টি বিমান কিনে ভেঙে ফেলা হলেও, ভাঙা হয়নি ওগুলোর মধ্যে থাকা সেই ডিসি ১০ বিমানটি। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত বিমানটির বর্তমান মালিক রাজবাড়ীর ক্যাপ্টেন মোস্তফা আজিম আওলাদ। ব্রিটেন থেকে এই বিমানটি নিলামে কিনেছিলেন তিনি।
ক্যাপ্টেন আওলাদ জানিয়েছেন, ডিসি-১০ বিমানের ভিআইপি লগবুক পরীক্ষা করে দেখা যায়, বিমানটিতে চড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমে করাচি থেকে লন্ডন ও পরে লন্ডন থেকে ভারত হয়ে সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি রাখা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুদ্ধে দেশের বিজয় অর্জিত হলেও বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৮ই জানুয়ারি।
সেদিনই বঙ্গবন্ধু ও ড.কামাল হোসেনকে পাকিস্তান থেকে বিমানে তুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তারা লন্ডনের হিথ্রো বিমান বন্দরে পৌঁছান। বেলা ১০টার পর থেকে ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, স্বাধীন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে তিনি কথা বলেন।
পরদিন ৯ জানুয়ারি ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি ডিসি-১০ বিমানে দেশের পথে যাত্রা করেন বঙ্গবন্ধু। ১০ই জানুয়ারি সকালে নামেন দিল্লীতে। এরপর ঢাকায় এসে পৌঁছান।
২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর নিলামে তোলা পুরনো তিনটি বিমান কিনে নেয় ব্রিটিশ এয়ারলাইনসের সিনিয়র ক্যাপ্টেন ও প্রশিক্ষক রাজবাড়ীর বাসিন্দা ক্যাপ্টেন মোস্তফা আজিমের মালিকানাধীন ইম্পেরিয়াল এভিয়েশন।

তিনটি বিমানের মধ্যে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকায় কেনা ডিসি-১০ বিমানটির ভিআইপি যাত্রী পরিবহন লগবুক পরীক্ষা করে ক্যাপ্টেন মোস্তফা আজিম জানতে পারেন ওই বিমানযোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। এরপর তিনি বিমানটি আর ভাঙতে দেননি। বর্তমানে লন্ডনে থাকা এই বিমানটি তিনি রক্ষণাবেক্ষণ করছেন।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের স্মৃতিযুক্ত হওয়ায় বিমানটি তিনি বাংলাদেশ সরকারকে উপহার হিসেবে দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি সাবেক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খানকে জানিয়েছেন এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলেও যোগাযোগ করেছেন। সরকার থেকে তাকে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিমানটি পরিদর্শন করার সম্ভাবনা রয়েছে।

ক্যাপ্টেন মোস্তফা আজিম আওলাদ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল গ্রামের ফেরদৌস রেজা আওলাদের বড় ছেলে। এক বছর বয়সে বাবার সঙ্গে সপরিবারে ইংল্যান্ডে চলে চান। বর্তমানে সেখানেই বসবাস করছেন।

তিনি ক্যাডেট হিসেবে ১৯৮৫ সালে ইংল্যান্ডের কিং এয়ার স্কুল অফ ফ্লাইন (বিগেন হিল) বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৯১ সালে তিনি ব্রিটিশ এয়ারলাইন্সে যোগ দেন। ২০০৫ সাল থেকে ইংল্যান্ডে গড়ে তোলেন ইমপেরিয়াল এভিয়েশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পুরান বিমান কিনে ভেঙে বিক্রি করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। বর্তমানে তিনি ওই এয়ারলাইন্সের সিনিয়র ক্যাপ্টেন ও নতুন ভর্তি হওয়া ক্যাপ্টেনদের প্রশিক্ষণ দেন। এর পাশাপাশি ইউএন চার্টের ফ্লাইট রক্ষণাবেক্ষণ করেন।