ইসলামাবাদ: সেনা শহর রাওয়ালপিন্ডির বহুদিনের পুরানো ঐতিহ্যবাহী একটি মন্দির ভাঙার নোটিস ঘিরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দুদের মধ্যে।১৯৩৫ সালে তৈরি চাকালালার গ্রেসি লাইনস এলাকার মহাঋষি ওয়ালমেক স্বামী জি মন্দির ও সংলগ্ন একটি হিন্দু সমাধিক্ষেত্র সেনাবাহিনীর ব্যারাক তৈরির জন্য ভাঙা পড়বে বলে গত ১২ অগাস্ট হিন্দু সম্প্রদায়কে জানানো হয়েছে।
প্রাক-স্বাধীনতা আমলের মন্দিরটি বালাকনাশ মন্দির নামেই বেশি পরিচিত।হিন্দু সমাধিক্ষেত্র ছাড়াও তার পাশেই আছে ৫৩টি সিঙ্গল রুমের একটি বাড়ি।সেনাছাউনির জায়গা দিতে সবই ভাঙা পড়বে।এর বিরুদ্ধে স্থানীয় আদালতে পিটিশন পেশ করা হয়।আপাতত মন্দির, সমাধিক্ষেত্র ভাঙার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে আদালত।
মন্দির ও সমাধিক্ষেত্রটি সামরিক কর্তৃপক্ষ পরিচালিত রাওয়ালপিন্ডি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের এক্তিয়ারে পড়ে।
সাময়িক মন্দির ভাঙা বন্ধ থাকলেও হিন্দুদের মধ্যে অসন্তোষ ধুমায়িত হয়েছে।কেননা রাওয়ালপিন্ডির ক্ষুদ্র হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার এই একটিমাত্র জায়গাই আছে।
অশোক চাঁদ নামে এক সংখ্যালঘু ব্যক্তির বক্তব্য, স্বাধীনতার আগেই আইন মেনে তৈরি হয়েছিল ওই মন্দির।এখন তা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার কোনও যুক্তি নেই। অভিমান মেশানো গলায় তিনি বলছেন, আমরা তো ভারতে যেতে চাইনি।জিন্নার পাকিস্তানকেই নিজেদের ঘর বলে মেনেছি।আর আজ কিনা আমাদের ভিটেমাটি ছাড়া করা হচ্ছে! পবিত্র মন্দির ধুলায় মিশিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে! আমরা কি পাকিস্তানের কেউ নই? পাকিস্তানের না হলেও অন্তত মানুষও কি নই?
জানা গিয়েছে, মন্দির সংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দাদের জন্য বিকল্প জায়গার কথা ভাবা হচ্ছে।তবে নতুন মন্দির গড়ে দেওয়া হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
দেশভাগের আগে হিন্দু জনসংখ্যা বেশ ভালই ছিল রাওয়ালপিন্ডিতে।কিন্তু এখন সেখানে বসবাস করে মেরেকেটে মাত্র ৬০টি হিন্দু পরিবার।