ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিশাল জয় পেয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ভোটগণনা শেষে দেখা যায়, রাজ্যের মোট ২৯৪টি আসনের মধ্যে ২১১টি আসন পেয়েছে মমতার দল। অন্যদিকে, বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস জোট ৭৫টি, বিজেপি চারটি এবং অন্যান্য দল চারটি আসন পেয়েছে।
জয়ের পর রাজ্যের মানুষকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় নিজের বাসভবনে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, গত দুই বছর ধরে তার সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার ষড়যন্ত্র হয়েছে।
তার দাবি, এই ভোটের আগে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দুর্নীতির ইস্যু তোলা হয়েছিল, কিন্তু মানুষ দুর্নীতির অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। এমনকি যারা দুর্নীতির ইস্যু তুলেছেন তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
বৃহস্পতিবার নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর তৃণমূল নেত্রী ফের নিশানা করেছেন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীকেও, যারা গত দুই মাস ধরে রাজ্যে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল। মমতা বলেন, ভোটের সময় এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর মাধ্যমেই সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করা হয়।
তিনি আরো বলেন, ভোটের আগে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হয়েছে। তবে একইসঙ্গে তিনি বলেছেন ভুল থেকে তারা শিক্ষা নেবেন।
স্বীকার করেছেন, রাজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভুল হয়েও থাকতে পারে। বিরোধী জোটকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বামপন্থীদের সাথে জোট কংগ্রেসের রাজনৈতিক ভুল হয়েছিল। পাশাপাশি কংগ্রেসের সাথে জোট করার জন্য সিপিএম’র সমালোচনা করেন তিনি। তিনি বলেন, এই ভোটের ফলে জাতীয় ক্ষেত্রে কংগ্রেস ও রাজ্যে সিপিএমের ক্ষতি হয়েছে।
মমতা ব্যানার্জি জানান, শুক্রবার তৃণমূলের নবনির্বাচিত পরিষদীয় দলের বৈঠক হবে। বৈঠকে নির্বাচিত হবেন পরিষদীয় দলনেতা এবং রাজ্যপালের কাছে সরকার গঠনের দাবি জানানো হবে। এরপর ২৭ মে শপথ নেবে নতুন মন্ত্রিসভা, ওই দিনই দ্বিতীয় দফায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন মমতা।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে মমতা আরো বলেন, বিজেপির সাথে তাদের মতাদর্শগত পার্থক্য রয়েছে। তবে কেন্দ্রে বিজেপিকে ইস্যুভিত্তিক সমর্থনে তৃণমূলের আপত্তি নেই।
সম্মেলনের কিছুক্ষণ আগেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি কলকাতায় টেলিফোন করে মমতাকে তার বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানান।
রাজ্যে তৃণমূলের বিপুল বিজয়ের পর পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিজয় উৎসব হবে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে মমতা ব্যানার্জি জানান ঠিক বিজয় উৎসব নয় – তবে আগামী ১০ দিন ধরে নানা ধরনের ‘সাংস্কৃতিক কর্মসূচি’ পালন হবে। সূত্র: বিবিসি ও আনন্দ বাজার