ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান জেলার খাগড়া্গড়ে গত বৃহস্পতিবার বোমা তৈরির সময় দুই জঙ্গির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি এখন ব্যাপক উত্তপ্ত। ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্তজুড়ে কড়া সতর্কতা জারি করেছে রাজ্য পুলিশ। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্তের অরক্ষিত এলাকাগুলো বন্ধ করে (সিল) দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাজ্য পুলিশের মহাপরিচালক (ডিজি) জি এম পি রেড্ডি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে স্পেশাল আইজি (সিআইডি) দয়মন্তী সেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পরই রাজ্য পুলিশের ডিজি পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্তের অরক্ষিত এলাকা সিল করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি রাজ্য পুলিশকে কড়া সতর্ক অবস্থায় থাকারও নির্দেশ দেন তিনি। এ ছাড়া রাজ্যের প্রতিটি থানাকে নাশকতা প্রতিরোধে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ডিজি জি এম পি রেড্ডি।
গত বৃহস্পতিবার বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত শাকিল আহমেদ ও সুবহান মণ্ডল নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য বলে দাবি করেছে রাজ্য পুলিশ। পুলিশ জানায়, ঘটনার পর গ্রেপ্তার হওয়া শাকিল আহমেদের স্ত্রী রাজিয়া বিবি ও আহত আবদুল হাকিমের স্ত্রী আলিমা বিবিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুজন বলেন, তাঁরা জেএমবির সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা আরও জানান, নিহত শাকিল আহমেদ ও তাঁর সঙ্গীরা খাগড়া্গড়ে তৃণমূলের এক কর্মীর বাড়িতে ভাড়াটে হিসেবে অবস্থান করে সেখানে নাশকতার জন্য বিস্ফোরক দ্রব্য তৈরি করে আসছিলেন।
ঘটনার তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআইডির গোয়েন্দারা আরও জানান, মধ্য কলকাতার বড়বাজারের একটি দোকান থেকে রাসায়নিক দ্রব্য কিনে এনে বিস্ফোরক বানাতেন ওই ব্যক্তিরা।
এদিকে বোমা বিস্ফোরণে নিহত শাকিল আহমেদের মোবাইল ফোনের কল লিস্ট দেখে পুলিশ জানতে পেরেছে, শাকিল আহমেদ বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেটের বেশ কিছু লোকজনের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলতেন। ওই কলগুলো খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ঘটনার পর তৃণমূল কংগ্রেস এখন সন্ত্রাসবাদী ও রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির আখড়া বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা।