ঢাকা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৪:৫১:৫২

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

পূর্ব লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল জিম্মি চুক্তিতে হামাসকে রাজি করাতে মিসর ও কাতারের দ্বারস্থ বাইডেন দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক মহড়া চীনের গাজা যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে রমজানে মুসলমানদের আল আকসায় নামাজ পড়ার অনুমতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ গাজায় তুমুল যুদ্ধ ॥ চলছে যুদ্ধবিরতির বৈঠক জর্ডানে মার্কিন সৈন্য হত্যা ॥ দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার অঙ্গীকার যুক্তরাষ্ট্রের গাজা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে জাতিসংঘ দূতদের সাক্ষাত জি৭ নেতাদের ভিডিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী না হলে বাইডেন ও অনিশ্চিত

ধর্ষণ নিয়ে ভারতে তুলকালাম

| ২৭ ফাল্গুন ১৪২২ | Thursday, March 10, 2016

ধর্ষণ নিয়ে ভারতে তুলকালাম

ঢাকা: সারা পৃথিবীতেই প্রতিদিন কম-বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এটি যেন একটি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে ভারত সব থেকে এগিয়ে। দেশটিতে হরহামেশা নবজাতক থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। ভারতীয় সেনাবাহিনী, বিএসএফ সদস্যরাও ধর্ষণের সঙ্গে যুক্ত। ধর্ষণ হচ্ছে চলন্ত ট্রেন, বাস, মাইক্রোবাস, পার্ক, হোটেল কিংবা বাসা বাড়িতে। নারী হচ্ছেন গণধর্ষণের শিকার। ধর্ষণের পর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে কিংবা অন্য কোনও উপায় হত্যার ঘটনাও ঘটছে দেশটিতে।

ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরবঙ্গ, বিহার সব রাজ্যেই ধর্ষণ বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। এ যেন রীতিমতো প্রতিযোগিতার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশটিতে। সম্প্রতি দেশটির কেন্দ্রীয় বিধান সভার সদস্যদের মধ্যে যুক্তিকর্ত শুনে এমনটাই মনে করছেন বিশ্লষকরা।

এদিকে ধর্ষণ থেকে রক্ষা পেতে রাতে ভারতের নারীরা লাঠি হাতে নিজেদের পাহারা দিচ্ছেন। এমন খবরও প্রকাশ হয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমে। রাতে একা নারী ঘরে থাকলেই ধর্ষণের জন্য ছুটে আসছে প্রতবেশীরা। তাই অস্ত্র হাতে নিয়ে নিজেদের সম্ভ্রম রক্ষা করতে না ঘুমিয়ে লড়াই করতে হচ্ছে গৃহবধূদের।

দেশটির গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ধর্ষণে পশ্চিমবঙ্গ এক নম্বরে। অন্তত মামলার নিরিখে। গত ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবসে দেশটির কেন্দ্রীয় লোকসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে এ তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হরিভাই প্রতিভাই চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, গত দু’বছরে (২০১২-১৪) গোটা দেশের মধ্যে ধর্ষণের মামলায় এক নম্বরে স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ১৬৫৬টি ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিহার। সেই রাজ্যে ওই সময়ে নথিভুক্ত ধর্ষণের ঘটনা ৪৮৪টি।

লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ধর্ষণ সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন করেছিলেন দেশটির সংসদ সদস্য বি সেনগুত্তুভান।

যা শুনে তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের পাল্টা দাবি, ‘‘প্রতিটি ধর্ষণের ঘটনাই অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু মহিলারা এখন অন্তত অত্যাচারের ঘটনা নির্ভয়ে থানায় জানাচ্ছেন। যা আগে সম্ভব ছিল না। সেই কারণে সংখ্যাটা এত বড় লাগছে।’’

ডেরেকের মতে, ‘‘বিহার ও উত্তরপ্রদেশে প্রকৃত সংখ্যা হয়তো দশ গুণ বেশি হবে। কিন্তু সেখানে ভয়ে কেউ থানায় যায় না।’’

তবে তৃণমূল নেতার যুক্তিকে হাস্যকর বলেই মনে করেছেন সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দাবি, রিপোর্ট খুঁজেই দেখা যাক না, কত জন অপরাধী শাস্তি পেয়েছে।

পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যে ধর্ষণের ঘটনায় ১৮৪৮ জন গ্রেফতার হলেও, দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন মাত্র ৫৭ জন। এক্ষেত্রে গোটা দেশে ২৮তম স্থান পেয়েছে রাজ্য।

ঋতব্রতের মতে, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ এখন গোটা দেশে ধর্ষণের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে। জঙ্গলের শাসন চলছে। মহিলারা সব চেয়ে অরক্ষিত।’’

এদিকে বৃহস্পতিবার আনন্দবাজরের এক খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের রায়নার বলাগড় গ্রামের আগুরিপাড়ার ঘটনা। গৃহবধূ দুপুরে বাড়িতে দুই মেয়ের সঙ্গে শুয়েছিলেন। স্বামী খেতে কাজ করতে গেছেন। এই সুযোগেই বাড়িতে ঢোকে প্রতিবেশী বিকাশ পোড়েল (৪৪)।

হঠাৎ কেউ একজন পা ছোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গে গৃহবধূ ভাবেন, স্কুল থেকে বড় মেয়ে ফিরেছে। বলে ওঠেন, ‘‘সরে যা, মাথা ধরেছে।’’ কিন্তু তখনই পাশে থাকা এক মেয়ে বলে ওঠে, ‘‘এ তো বিকাশ কাকু।’’

এরপরই মহিলা জেগে যান। বিকাশকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু নাছড় বিকাশ এরপর দু’শো, পাঁচশো টাকার নোট দেখিয়ে প্রলোভন দেখায় বলে অভিযোগ। এরপরই বিকাশ বলে ওঠে, ‘‘মেয়ে দু’টোকে মেরে ফেলব।’’

এবার আর চুপ থাকতে পারেননি ওই গৃহবধূ। হাতের সামনে থাকা লাঠি নিয়ে তিনি চড়াও হন বিকাশের ওপরে। তবে তাতেও ক্ষান্ত হয়নি বিকাশ। এরপরই এক মোক্ষম মার, সোজা বিকাশের পেটে।

ওই বধূ জানান, আর সাহসে কুলোয়নি বিকাশের। মার খেয়ে ঘরের বাইরে বারান্দায় চলে যায় সে। তবে ফের ঘরের শিকল বাইরে থেকে তুলে দেয়ার চেষ্টা করতেই ঢিল ছুড়তে থাকেন ওই গৃহবধূ। আর শুরু করেন চিৎকার। চিৎকারে বাড়িতে চলে আসেন প্রতিবেশীরা। খেত থেকে চলে আসেন বধূর স্বামীও।

শেষ পর্যন্ত গণধোলাই খেয়ে পালায় বিকাশ। সম্ভ্রম রক্ষা পায় সাহসী ওই গৃহবধূর। কিন্তু সবাই কি এমন সাহস দেখাতে পারছেন? সে প্রশ্ন ভারতীয়দের।