টোকিও : জাপানের দক্ষিণাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে নয়জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে অন্তত ৭৬১ জন। বহু ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে। এতে অনেক জায়গায় বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুন ধরে যায় এবং বহু লোক আহত হয়। এদিকে উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকেপড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। শুক্রবার কর্মকর্তারা একথা জানান।
জাপানের কিউশু দ্বীপে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে এর তীব্রতা ছিল ৬.৫। এতে হাজার হাজার লোক তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরে চলে যায়।
প্রথম দফা ভূমিকম্পের পর পরে আরো কয়েকবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ৯ টা ২৬ মিনিটের দিকে এটি আঘাত হানে।
ধসেপড়া বহু ভবনে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে কর্মকর্তারা আশংকা করছেন।
কুমামোতো নগরীর আঞ্চলিক কর্মকর্তা শানসুক সাকুরাগি এএফপিকে বলেন, ‘আমি প্রচন্ড ঝাঁকিতে কেঁপে উঠি। আমার এরকম অভিজ্ঞতা এর আগে আর কখনো হয়নি।’ এতে লোকজন আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
শুক্রবার সকাল নাগাদ সরকার জানায়, ভূমিকম্পের আঘাতে আহত অন্তত ৭৬১ জনের মধ্যে ৪৪ জনের অবস্থা আশংকাজনক। স্থানীয় কুমামোতো দুর্যোগ সংস্থার এক কর্মকর্তা কমপক্ষে নয়জন নিহত হওয়ার কথা জানান।
জাপানের সরকারি সম্প্রচার কেন্দ্র এনএইচকে জানায়, ধ্বংসস্তুপের ভিতর থেকে আট মাস বয়সী এক কন্যা শিশুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
দুর্যোগ মন্ত্রী তারো কোনো বলেন, ‘পুলিশের একটি হেলিকপ্টার থেকে উঠানো বিভিন্ন ছবিতে বহু সংখ্যক ঘরবাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস বা অধের্ক ধ্বংস অবস্থায় দেখা যায়।’
‘সেখানে আহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলেও আশংকা করা হচ্ছে।’
শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর মাশিকি শহরের বহু লোক টাউন হলের সামনে জড়ো হয়।
তবে এ অঞ্চলের পরমাণু কেন্দ্র অক্ষত থাকলেও হোন্ডা, ব্রিজস্টোনসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সনি জানায়, এ এলাকার তাদের বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।
অপারেটর জেআর কিউশুর মুখপাত্র ইউসুক নানরি জানান,বৃহস্পতিবারের ভূমিকম্পে কিউশুর ট্রেন সার্ভিস সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয় এবং দ্রুত গতির একটি বুলেট ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। সৌভাগ্যবশত: ট্রেনটি এসময় খালি ছিল।
প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে অনুসন্ধান ও উদ্ধারে ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে যা কিছু করা সম্ভব সরকার তার সবগুলো করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি ভূমিকম্পে ফলে ঘরবাড়ি ছেড়ে যাওয়া লোকজনকে সহায়তা দেয়ার কথাও বলেন।
শুক্রবার সকালে অ্যাবে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আফটারশকের কারণে দ্বিতীয় ধাপের দুর্যোগ এড়াতে আমরা সবকিছু করছি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব দিচ্ছি।’
সরকারের মুখপাত্র ইয়োশিহিদ সুগা শুক্রবার জানান, উদ্ধার কাজে ১ হাজার ৩শ’ দমকল কর্মীর পাশাপাশি ২ হাজার পুলিশ ও ১ হাজার ৬শ’ সেনা সদস্য নিযুক্ত করা হয়েছে।