ঢাকা: কলকাতার ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়ামের পরিসংখ্যান উজ্জীবিত করেছিল পাকিস্তানকে। কারণ এই মাঠে কোনদিনই ভারতের কাছে হারেনি তারা। চার ওয়ানডের সবকটিতেই জিতেছিল পাক শিবির। অন্যদিকে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হারের রেকর্ড ছিল না ভারতেরও। প্রথমবারের মতো ইডেন গার্ডেনে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মোকাবেলায় শেষ অবধি শেষ হাসি ধোনি শিবিরেরই।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টানটান উত্তেজনার ম্যাচে শনিবার রাতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে পরাজিত করেছে ধোনি শিবির।
বৃষ্টির কারণে আউট ফিল্ড ভেজা থাকায় বিলম্বে টস অনুষ্ঠিত হয়। টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় টিম ইন্ডিয়ার দলপতি মহেন্দ্র সিং ধোনি। দুই দল ১৮ ওভার করে ব্যাট করার সুযোগ পায়।
১৮ ওভার শেষে পাকিস্তান ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ১১৮ রান। জবাবে, ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ উইকেট হারানো ভারত ১৫.৫ ওভার ব্যাট করেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায়।
পাকিস্তানের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন ৯ ম্যাচ খেলা শারজিল খান ও ৪২ ম্যাচ খেলা আহমেদ শেহজাদ। ভারতের হয়ে বোলিং শুরু করেন ২০তম ম্যাচে নামা আশিষ নেহারা। প্রথম ওভার থেকে পাকিস্তানের দুই ওপেনার তুলে নেন মাত্র ৩ রান। ৪০ ম্যাচ খেলা অভিজ্ঞ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে আসে ২ রান।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে বিদায় নেন পাকিস্তানের ওপেনার শারজিল খান। সুরেশ রায়নার বলে হারদিক পান্ডের দারুণ ক্যাচে ফেরেন ২৪ বলে দুটি চারে ১৭ রান করা শারজিল। তার বিদায়ে মাঠে আসেন শহীদ আফ্রিদি।
দশম ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহ ফেরান আরেক ওপেনারিআহমেদ শেহজাদকে। জাদেজার তালুবন্দি হওয়ার আগে শেহজাদ ২৮ বলে তিনটি বাউন্ডারিতে করেন ২৫ রান।
দলীয় ৪৬ রানে দুই উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন শহীদ আফ্রিদি ও উমর আকমল। তবে, ইনিংসের ১২তম ওভারে বিদায় নেন আফ্রিদি। ১৪ বলে ব্যক্তিগত ৮ রান করে হারদিক পান্ডের বলে বিরাট কোহলির হাতে ধরা পড়েন পাকিস্তান দলপতি।
১৬তম ওভারে ফেরেন উমর আকমল। জাদেজার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২২ রান। ১৬ বল মোকাবেলা করা আকমল একটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান। পরের ওভারে শোয়েব মালিককে ফিরিয়ে দেন নেহারা। ১৬ বলে ২৬ রান করা মালিকের ব্যাট থেকে আসে তিনটি চার আর একটি ছক্কা।
মোহাম্মদ হাফিজ ৫ ও সরফরাজ আহমেদ ৮ রান করে অপরাজিত থাকেন।
১১৯ রানের সহজ টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নামেন ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে মোহাম্মদ আমিরের বলে শোয়েব মালিকের হাতে ধরা পড়েন রোহিত শর্মা (১০)।
টিম ইন্ডিয়ার ওপেনার রোহিত শর্মা বিদায় নিলে উইকেটে জুটি গড়েন বিরাট কোহলি ও শিখর ধাওয়ান। তবে, ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আরেক ওপেনার ধাওয়ানকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান মোহাম্মদ সামি। আউট হওয়ার আগে ১৫ বলে ৬ রান করেন ধাওয়ান। পরের বলেই সুরেশ রায়নাকে বোল্ড করেন সামি।
দলীয় ২৩ রানের মাথায় টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারায় টিম ইন্ডিয়া। তবে, উইকেটে থেকে দলকে জয়ের দিকে নিতে থাকেন বিরাট কোহলি ও যুবরাজ সিং। এ দুই ব্যাটসম্যান ৬১ রানের জুটি গড়েন। ইনিংসের ১২তম ওভারে সাজঘরে ফেরেন ২৩ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২৪ রান করা যুবরাজ সিং। ওয়াহাব রিয়াজের বলে মোহাম্মাদ সামির তালুবন্দি হন যুবরাজ।
বিরাট কোহলি অর্ধশতক হাঁকিয়ে অপরাজিত থাকেন। ৫৫ রান করা কোহলির ৩৭ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার আর একটি ছক্কা। ধোনি ৯ বলে একটি ছক্কায় ১৩ রান করে অপরাজিত থাকেন।