শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা কোনো উগ্রবাদী চক্রের কবলে পড়েছে কিন্তু সরাসরি কোনো অপরাধ করেনি তাদের খুঁজে বের করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট নাগরিকরা। তারা বলেছেন, শুধু নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহই নয় এমন উদ্যোগ নেয়াও রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব।
গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলার পর ঈদের দিন কেঁপে উঠলো শোলাকিয়া। দু’টি ঘটনাতেই বিশেষ একটি দু’টি নামী বিদ্যালয়-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জড়িত থাকার অভিযোগ। এরই মধ্যে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী নিখোঁজ থাকার কথা জানাচ্ছে।
বিশিষ্ট নাগরিকরা বলছেন, শুধু নিখোঁজ থাকার তথ্য জানিয়ে দিলে কাজ হবে না। তাদের ফিরিয়ে আনতে কাজ শুরু করা প্রয়োজন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, এদের মূল কথা হচ্ছে মুসলমানদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে সুতরাং আমরা প্রতিশোধ নিব। এবং সেই অত্যাচারের ছবিগুলো কোমলমতি বালকদের দেখানো হচ্ছে, তাদের উত্তেজিত করা হয়েছে।
সর্বোপরি তাদের একমুখী চিন্তার শিকারে পরিণত করা হয়েছে। যারা আঠারো বয়সের কম তাদের শাস্তির চেয়ে শোধনাগারে পাঠানো উচিত। আঠারো থেকে চব্বিশের মধ্যে যারা আছে তাদেরকে চব্বিশের বেশি যারা তাদের চেয়ে হালকাভাবে দেখা উচিত। বিচারের ক্ষেত্রে এই ধরণের তারতম্য বজায় রাখলে সত্যিই যারা বিভ্রান্ত হয়েছে তারা ফিরে আসতে সাহস বোধ করবে।
মানবাধিকার কর্মী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারে উপদেষ্টা সুলতানা কামালও বলেছেন একই কথা। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের অবশ্যই কর্তব্য আছে, তবে পরিবারের সঙ্গে মিলেই সেটা করতে হবে। পরিবারের সহযোগিতা করতে হবে রাষ্ট্রকে এবং রাষ্ট্রের সহযোগিতা করতে হবে পরিবারকে।এবং তাদেরকে ফিরিয়ে আনার যে পদ্ধতিগত নিয়মকানুন আমাদের সংবিধানসম্মতভাবে রয়েছে সেভাবেই তাদের ফিরিয়ে আনা উচিত। অবশ্য যদি তারা অনুতপ্ত হয়, যদি আমরা নিশ্চিত হই, তারা আর এ ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবে না, তবে তাদেরকে সাধারণ জীবন যাপন করতে দেওয়া উচিত।
শিক্ষাবিদ ও মানবাধিকারকর্মীরা মনে করেন, শিক্ষার্থীরা হঠাৎ করেই জঙ্গি হয়ে ওঠেনি। বাংলা কিংবা ইংরেজি- সব মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই কেউ কেউ উগ্রপন্থা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। তাদেরও খুঁজে বের করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।