ঢাকা, এপ্রিল ২৮, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১২:১৩:৪৫

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র পুনর্বাসন না করে বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা হবে না: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি হিসেবে ফের নিয়োগ পেলেন বিপ্লব বড়ুয়া সংসদ অধিবেশন উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ আপিলে দ্বিতীয় দিনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৫১ জন নির্বাচনে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি সেনাবাহিনী চায় ইসি : পিএসও আদালত আবমাননায় বিচারক সোহেল রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর ২১টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ জন গ্রেফতার : ডিএমপি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কিনা, জানালেন ইসি

৩৪ কম্পানির ওষুধ বাজার থেকে দ্রুত তুলে নিতে হবে

| ২৫ শ্রাবণ ১৪২৩ | Tuesday, August 9, 2016

 

 

 

 

৩৪ কম্পানির ওষুধ বাজার থেকে দ্রুত তুলে নিতে হবেমানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থ ২০টি কম্পানির সব ধরনের ওষুধ ও ১৪টি কম্পানির অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ অতি দ্রুত বাজার থেকে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই সব কম্পানির ওষুধ সরবরাহ ও বিক্রি বন্ধ করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার এ আদেশ দেন। স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসনের পরিচালক ও বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ বিবাদীদের এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শশাঙ্ক শেখর সরকার।

হাইকোর্ট এর আগে ৭ জুন এক আদেশে ২০টি কম্পানিকে সব ধরনের ওষুধ এবং ১৪টি কম্পানিকে অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এক সপ্তাহের মধ্যে নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছিল। এরপর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছিল চারটি কম্পানি। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগ গত ১৬ জুন ওই আবেদন নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন। একই সঙ্গে ১৮ আগস্টের মধ্যে হাইকোর্টে রুল নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ অবস্থায় ওই সব কম্পানির ওষুধ বাজারজাত করা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ‘মানহীন ৩৪ কম্পানির ওষুধ এখনো বাজারে’ শিরোনামে গত ২৮ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ৩১ জুলাই আদালতে রিট আবেদন করে এইচআরপিবি। গতকাল এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত আদেশ দেন।

আদেশের পর অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরও ওই ৩৪ কম্পানির ওষুধ বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। এ কারণে আদালতে নতুন করে আবেদন করা হয়।

হাইকোর্ট যে ২০টি প্রতিষ্ঠানের ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দেন সেগুলো হলো—এক্সিম ফার্মাসিউটিক্যাল, এভার্ট ফার্মা লিমিটেড, বিকল্প ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ডলফিন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ড্রাগল্যান্ড লিমিটেড, গ্লোব ল্যাবরেটরিজ (প্রাইভেট) লিমিটেড, জলপা ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, কাফমা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, মেডিকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ন্যাশনাল ড্রাগ ফার্মা লিমিটেড, নর্থ বেঙ্গল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, রিমো কেমিক্যালস লিমিটেড (ফার্মা ডিভিশন), রিদ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, স্কাইল্যাব ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, স্পার্ক ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, স্টার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, সুনিপুণ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, টুডে ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ট্রপিক্যাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং ইউনিভার্সেল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।

যে ১৪টি কম্পানির এন্টিবায়োটিক (নন-পেনিসিলিন, পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন গ্রুপ) ওষুধ উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেন সেগুলো হলো—আদ-দ্বীন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, আলকাদ ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, বেলসেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, বেঙ্গল ড্রাগস অ্যান্ড কেমিক্যালস (ফার্মা) লিমিটেড, ব্রিস্টল ফার্মা লিমিটেড, ক্রিস্ট্যাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, মিল্লাত ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, এমএসটি ফার্মা অ্যান্ড হেলকেয়ার লিমিটেড, অরবিট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ফার্মিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, ফনিক্স কেমিক্যাল ল্যাবরেটরি (প্রা.) লিমিটেড, রাসা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং সেভ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।

আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন। রুলে ওই ৩৪টি কম্পানির লাইসেন্স ও অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদনের অনুমোদন কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না এবং অনুমোদন বাতিলে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, র‌্যাবের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতির সেক্রেটারি জেনারেলসহ সাতজনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির করা পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে এ রিট আবেদন করা হয়।

সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের ওই বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। ওই কমিটি দেশের ৮৪টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে প্রতিবেদন তৈরি করে। এ প্রতিবেদন চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সংসদীয় কমিটির কাছে জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থ হওয়া ২০টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করার সুপারিশ করা ছাড়াও ১৪টি কম্পানির সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক (নন-পেনিসিলিন, পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন গ্রুপ) ওষুধ উৎপাদনের অনুমতি বাতিল চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় রিট আবেদন করা হয়।