২০ জুলাই অভিভাবক সমাবেশ; ২১ জুলাই নারী সমাবেশ
‘জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ চাই’ স্লোগানে গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন হাজারো মানুষ। রাজধানীর গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে ডাকা ১৪ দলের এ সমাবেশে অংশ নিতে দুপুর সোয়া ৩টা থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও দলের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা দলে দলে মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার এলাকায় জমায়েত হন।
লোকেলোকারণ্য হয়ে যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও এর আশপাশের এলাকা। কিন্তু হঠাৎ সেখানে হানা দেয় আষাঢ়ের বৃষ্টি। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সমাবেশে অংশ নেন ১৪ দলের নেতাকর্মীরা। সমাবেশ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনের রাস্তায়, টিএসসি, চানখাঁর পুল, হাইকোর্ট এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সমাবেশে অংশ নিতে আসা প্রতিটি নেতাকর্মীকে তল্লাশি করা হয়। ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারে ছেয়ে যায় শহীদ মিনার এলাকা। নেতাকর্মীদের সবার মুখে একটাই স্লোগান ‘জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ চাই’।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় হামলার দিন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে পাকিস্তান থেকে টেলিফোন করা হয়েছিল।’
হানিফ বলেন, ‘তারেক রহমানের কর্মচারী পরিচয়ে খালেদা জিয়াকে গুলশান হামলার দিন পাকিস্তান ও লন্ডন থেকে টেলিফোন করা হয়- হামলার ঘটনায় খালেদা জিয়া জড়িত এটাই কি প্রমাণ করে না?’
বিএনপি চেয়ারপার্সনের জাতীয় ঐক্য আহ্বানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তিনি প্রথম দিন জাতীয় ঐক্যের কথা বললেন। দুই দিন পর বললেন, এই সরকার ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচন দিলে সন্ত্রাস বন্ধ হয়ে যাবে। তাহলে কি আপনার নির্দেশে এই হামলা? যখন সারাবিশ্বে সন্ত্রাসবাদ তখন নির্বাচন দিয়ে আপনি কিভাবে সন্ত্রাস বন্ধ করবেন? প্রশ্ন রাখেন হানিফ।’
সমাবেশে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘১৯৭১ সালে যারা মা-বোনের গায়ে হাত তুলেছে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ আপস করেনি, জঙ্গিদের সঙ্গেও আপস করবে না।’
তিনি বলেন, ‘যারা ইসলামের ক্ষতি করেছে, তারা মানুষের ক্ষতি করেছে। এ আক্রমণের সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। যারা ইসলাম পালন করে তারা নামাজের সময় মানুষ খুন করতে যায় না বলেও মন্তব্য করেন ইনু।
৩১ দলীয় জোটের নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেছেন, ‘জঙ্গিবিরোধী আন্দোলনে আপনারা কেন খালেদা জিয়াকে নিয়ে আলাপ করেন! বারবার বলেও কিছু হয়নি, আপনারা কেন তাকে এতো গুরুত্ব দেন!’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এতো গুরুত্ব দেবেন না। জঙ্গিবাদবিরোধী এই সমাবেশ ও আন্দোলনের সঙ্গে ৩১ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে সংহতি প্রকাশ করেন তিনি।’
কর্মসূচিতে অংশ নিতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং দলের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মতো শহীদ মিনারে আসেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
সমাবেশ মঞ্চ শহীদবেদিতে না উঠে খালি পায়ে তিনি মৌন প্রতিবাদ জানান। এ সময় অন্যান্য নারী নেতাকর্মীও তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনের রাস্তায়, টিএসসি, চানখাঁর পুল, হাইকোর্ট এলাকায় বসানো হয় চেকপোস্ট। এছাড়াও বকশিবাজার এলাকায় দুই প্লাটুন বিজিবিকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।
এদিকে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে আগামী ২০ জুলাই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অভিভাবক সমাবেশ ও ২১ জুলাই নারী সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল।