ঢাকা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ২২:২২:১৮

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র পুনর্বাসন না করে বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা হবে না: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি হিসেবে ফের নিয়োগ পেলেন বিপ্লব বড়ুয়া সংসদ অধিবেশন উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ আপিলে দ্বিতীয় দিনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৫১ জন নির্বাচনে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি সেনাবাহিনী চায় ইসি : পিএসও আদালত আবমাননায় বিচারক সোহেল রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর ২১টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ জন গ্রেফতার : ডিএমপি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কিনা, জানালেন ইসি

সুন্দরবনের বনদস্যু আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : সরকার দেশকে সন্ত্রাস ও দস্যুমুক্ত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ

| ১ শ্রাবণ ১৪২৩ | Saturday, July 16, 2016

বাগেরহাট : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, সরকার বাংলাদেশকে সন্ত্রাস ও দস্যুমুক্ত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, বনদস্যুরা সুন্দরবনে ভয়ঙ্কর রুপে বিচরণ করছিল। তারা তাদের কৃতকর্মের ভুল বুঝতে পেরে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রতিজ্ঞা করেছে, আমরা তাদের স্বাগত জানাই। তিনি বলেন, সরকার সারা দেশের মতো সুন্দরবনেও সন্ত্রাস-দস্যুতা করতে দেবে না।
শুক্রবার দুপুরে মংলা বন্দরের বিএফডিসি জেটিতে আতœসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, র‌্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফরিদুল আলম, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজ) এম মনিরুজ্জামান, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলমসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সুন্দরবনের বনদস্যু ‘মজনু ও ইলিয়াস’ বাহিনীর দুই প্রধানসহ তাদের অপর নয় সহযোগী আজ বিএফডিসি জেটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। এসময় তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে অস্ত্র ও গোলাবারুদ তুলে দেন।
মন্ত্রী বলেন, র‌্যাবসহ সমস্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। উদ্দেশ্যে দেশ থেকে সবধরনের সন্ত্রাস নির্মূল করা।
তিনি বলেন, সুন্দরবন বিশ^ ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখানে প্রতিনিয়ত দেশি-বিদেশী অসংখ্য পর্যটক বেড়াতে আসেন। সুন্দরবন মৎস্যজীবীদের জন্যও একটি আদর্শ জায়গা। এই সুন্দরবন বিপদ মুক্ত, দস্যুমুক্ত করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। যারা দস্যুতা ছেড়ে ফিরে আসছেন তাদের আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করছি, আর যারা এখনো ফিরে আসেননি তারা শিগগিরই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের র‌্যাব যেমন সক্রিয় তেমনি অন্যান্য বাহিনীগুলোও সক্রিয় রয়েছে। আমরা সুন্দরবনে কোন ধরনের দস্যুতা করতে দেব না। এটা আমাদের সরকারের অঙ্গীকার। আজকে যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদেরকে আমরা সব ধরনের আইনী সহায়তা দেব। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার যে প্রতিজ্ঞা তারা করেছেন তা যেন অক্ষুণœ রাখেন। আমরা কারও সাথে যুদ্ধ করতে চাইনা, যারা আত্মসমর্পণ করতে চায়, ক্ষমা চায় তাদেরকে আমরা স্বাগত জানাব।
জমা দেয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ১১ টি বিদেশি একনলা বন্দুক, তিনটি দোনলা বন্দুক, দুটি এয়ার রাইফেল, তিনটি ওয়ান স্যুটারগান, পাঁচটি সার্টারগান, একটি রিভলবর ও বিভিন্ন ধরনের এক হাজার কুড়িটি গুলি।
আত্মসমর্পণ করা দস্যুদের মধ্যে রয়েছেন, খুলনা মহানগরীর দৌলতপুরের পাবলা সবুজ সংঘ এলাকার আমির আলী গাজীর ছেলে মজনু বাহিনীর প্রধান মজনু গাজী, তার দলের সদস্য বাবুল হাসান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন রহমত, মো. ইদ্রিস আলী, ইসমাঈল হোসেন, মজনু শেখ, মো. রবিউল ইসলাম, মো. আবুল কালাম আজাদ, মো. এনামুল হোসেন এবং খুলনার কয়রা উপজেলার মহেশ^রীপুর গ্রামের আবু বক্কও গাজীর ছেলে ইলিয়াস বাহিনীর প্রধান মো. ইলিয়াস গাজী ও তার সহযোগী মো. নাসির হোসেন। সদস্যদের বাড়ি খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
র‌্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. ফরিদুল আলম তার বক্তৃতায় বলেন, সুন্দরবনে আরও কয়েকটি দস্যু বাহিনী রয়েছে- তাদেরও স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে আমরা কাজ করছি।
র‌্যাব জানিয়েছে গত পাঁচ বছরে সুন্দরবনে র‌্যাব বরিশাল-৮ এর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১৬৭ জন জলদস্যু-বনদস্যু নিহত হয়েছেন। নিহত ওই দস্যুদের মধ্যে ৩৮ জন ছিলেন বাহিনী প্রধান। এসময়ে দস্যুদের ব্যবহৃত প্রায় ৪০০টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং কয়েক হাজার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া দস্যুদের ব্যবহৃত দেশীয় ধারালো অস্ত্র, বিপুল পরিমাণ খাদ্য সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল উদ্ধার করে র‌্যাব।
বনদস্যু মাস্টার বাহিনীর পর বনদস্যু মজনু এবং ইলিয়াস বাহিনীর আত্মসমর্পণের এটি দ্বিতীয় ঘটনা।
এর আগে গত ৩১ মে সুন্দরবনের আরেক বনদস্যু ‘মাস্টার বাহিনী’র প্রধান মোস্তফা শেখ ওরফে কাদের মাস্টার ও তার দশ সহযোগী আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় মাস্টার বাহিনী ৫২ টি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ও পাঁচ হাজার রাউন্ড গুলি জমা দেয়। বনদস্যু মাস্টার বাহিনীর সদস্যরা বর্তমানে বাগেরহাট জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন।