সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম), অধস্তন ম্যাজিস্ট্রেট ও কয়েকজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় বৃহস্পতিবার মামলা রেকর্ড হয়েছে।
হামলার ঘটনায় দুদকের (দুর্নীতি দমন কমিশন) করা জিডির শুনানির পর আদালতের নির্দেশে এ মামলা রেকর্ড হল। এতে ১৮৬, ২৬০, ৩৩২, ৩৫৩, ২১২, ৩৪২, ৩২৩, ৩২৪, ৩০৭ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
সিলেট কোতোয়ালি থানা ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মামলা রেকর্ডের কথা স্বীকার করেছেন। তবে মোট কতজনকে আসামি করা হয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য তারা দেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো দুদকের করা জিডির শুনানি করেন। শুনানির পর তা মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
এ আদেশ পাওয়ার পরই সন্ধ্যায় কোতোয়ালি থানায় মামলাটি রেকর্ড করে পুলিশ। এর আগে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় জেলা প্রশাসনের অফিস সহকারী আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদুক। বৃহস্পতিবার রেকর্ড করা মামলায়ও আজিজুর রহমানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
৯ ফেব্রুয়ারি সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ১০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে দুদক অভিযান চালিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী আজিজুর রহমানকে গ্রেফতার করে।
বাইরে নিয়ে আসার সময় অন্য কর্মচারীদের বাধার মুখে পড়ে দুদকের দল। এক পর্যায়ে হামলা চালিয়ে আজিজুর রহমানকে ছিনিয়ে নেয় কর্মচারীরা। এ সময় দুদকের ৪ জনকে আহত করে জেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে দুদক পরিচালক শিরিন পারভিনসহ অন্য কর্মকর্তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যান। এ ঘটনায় দুদকের পক্ষ থেকে সেদিন কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন দুদক পরিচালক শিরিন পারভিন।
এর আগে নগরীর ১নং দক্ষিণ বাগবাড়ী এলাকার মেসার্স পায়েল এন্টারপ্রাইজের অকিল চন্দ্র সূত্রধর দুদকের কাছে ব্যবসা-বাণিজ্য শাখায় কর্মরত আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। এই অভিযোগের পর দুদক গোপনে অনুসন্ধান করে অবৈধ লেনদেনের বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
কর্মচারী আজিজুর রহমানের সঙ্গে ২০ হাজার টাকার চুক্তি হয় অকিল চন্দ্র সূত্রধরের। ফাইল ছাড়িয়ে নিতে ৯ ফেব্রুয়ারি বিকালে ঘুষের ১০ হাজার টাকা দেয়ার সময় ওঁৎ পেতে থাকা দুদকের কর্মকর্তারা হাতেনাতে গ্রেফতার করে পুলিশের হাতে তুলে দেন আজিজুর রহমানকে।
পুলিশ হাতকড়া পরিয়ে নিচে নেমে আসার পরই ডিসি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাধার মুখে পড়ে। একপর্যায়ে ডিসি অফিসের কর্মচারীরা হামলা চালায় দুদকের কর্মকর্তাদের ওপর।
এ সময় পুলিশ বাধ্য হয়ে হাতকড়া খুলে দেয় আজিজুর রহমানের। আত্মরক্ষার্থে দুদকের অভিযান পরিচালনাকারী টিম ডিসির কক্ষে আশ্রয় নেয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ দুদকের অভিযান পরিচালনাকারী টিমকে উদ্ধার করে।