ঢাকা, মে ৩, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০০:১৭:২১

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র পুনর্বাসন না করে বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা হবে না: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি হিসেবে ফের নিয়োগ পেলেন বিপ্লব বড়ুয়া সংসদ অধিবেশন উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ আপিলে দ্বিতীয় দিনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৫১ জন নির্বাচনে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি সেনাবাহিনী চায় ইসি : পিএসও আদালত আবমাননায় বিচারক সোহেল রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর ২১টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ জন গ্রেফতার : ডিএমপি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কিনা, জানালেন ইসি

সাতক্ষীরার জবেদ আলীকে ক্ষতিপূরণ প্রদান প্রশ্নে রুল

| ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৩ | Tuesday, May 24, 2016

ঢাকা : উচ্চআদালতে খালাসের রায়ে কারামুক্তির আদেশের পরেও সাতক্ষীরার জবেদ আলীকে ১৩ বছর সাজা খাটার ঘটনায় তাকে কেন ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে না-তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আজ রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মঈনলু ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো.ইকবাল কবির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এক রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়। এছাড়াও অবৈধভাবে ১৩ বছর ধরে জবেদ আলীকে জেল খাটানো বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা, ব্যর্থতা ও অবহেলাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-রুলে তাও জানতে চেয়েছে আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, আইজি প্রিজন, সাতক্ষীরার তৎকালীন অতিরিক্ত দায়রা জজ তাপস কুমার, হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার ও সংশ্লিস্ট জেল সুপারকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিটের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল হালিম বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করে আজ বলেন, একজন অতিরিক্ত দায়রা জজের ভুলের কারণে জবেদ আলীকে ১৩ বছরের সাজাভোগ করতে হয়েছে। সভ্য সমাজে এ আচরণ অকল্পনীয়। উচ্চ আদালতের খালাসের রায়ের পরেও একজন ব্যক্তিতে মুক্তি না দিয়ে নথি আটকে রাখা সংবিধানের লংঘন।
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কয়লা গ্রামের মৃত আমজেল বিশ্বাসের ছেলে জবেদ আলী বিশ্বাস। স্ত্রী ফরিদা খাতুন মারা যাওয়ার পর তার দুই মেয়ে লিলি (৮) ও রেক্সোনা (৫) জেলার তালা উপজেলার মানিকহার গ্রামে মামা আবুল কাসেমের বাড়িতে থাকতো। ১৯৯৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর জবেদ আলী শ্যালকের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ওইদিন লিলি মারা যায়। এ ঘটনায় শ্যালক আবুল কাসেম বিষ খাইয়ে লিলিকে হত্যার অভিযোগ এনে জবেদ আলীর বিরুদ্ধে তালা থানায় হত্যা মামলা করেন। পরদিন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরপর ওই মামলায় জবেদ আলীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। নিজ মেয়েকে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগে ২০০১ সালের পয়লা মার্চ বিচারিক আদালত জবেদ আলীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে জবেদ আলী হাইকোর্টে আপিল করেন। শুনানিশেষে ২০০৩ সালের ১৯ মার্চ হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করে তাকে বেকসুর খালাস দেয়। ওই বছরের ২৬ মার্চ হাইকোর্টের এ রায়ের অনুলিপি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত দায়রা জজ-৩ আদালতের বিচারক তাপস কুমারের বরাবর পৌঁছায়। কিন্তু তিনি খালাস আদেশ জেল কর্তৃপক্ষের কাছে না পাঠিয়ে আদালতের রেকর্ড রুমে সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। এ কারণে জবেদ আলীকে ১৩ বছর বিনাবিচারে জেলে থাকতে হয়।
সূত্র জানায়, জবেদ আলী বিশ্বাস বিভিন্ন সময় এ খালাসের বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ ও বিচারিক আদালতকে জানালেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সম্প্রতি জবেদ আলী সাতক্ষীরার অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি (পিপি) জিল্লুর রহমানকে একটি চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানান। এরপর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি জিল্লুর রহমান ও আরেক অতিরিক্ত পিপি ফাহিমুল হক সাতক্ষীরার দ্বিতীয় অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে জবেদ আলীর মুক্তির জন্য আবেদন করেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি আবেদনটির ওপর শুনানি হয়। আদালতের নির্দেশে ২৯ ফেব্রুয়ারি জবেদ আলীকে যশোর থেকে সাতক্ষীরা কারাগারে আনা হয়। এরপর ২ মার্চ আদালত তাকে মুক্তির আদেশ দিলে মুক্তি পান জবেদ আলী।
এ ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দীর্ঘ ১৩ বছর বিনাবিচারে কারাভোগের ঘটনায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে বেসরকারী সংস্থা চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন । জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়।