ঢাকা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১২:৫২:৪২

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র পুনর্বাসন না করে বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা হবে না: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি হিসেবে ফের নিয়োগ পেলেন বিপ্লব বড়ুয়া সংসদ অধিবেশন উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ আপিলে দ্বিতীয় দিনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৫১ জন নির্বাচনে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি সেনাবাহিনী চায় ইসি : পিএসও আদালত আবমাননায় বিচারক সোহেল রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর ২১টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ জন গ্রেফতার : ডিএমপি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কিনা, জানালেন ইসি

সরকারি খরচে আইনী সহায়তা পেয়েছেন ১ লাখ ২৩ হাজার ৬২৯ জন

| ২৪ বৈশাখ ১৪২৩ | Saturday, May 7, 2016


ঢাকা : জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার অধীনে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সরকারি খরচে আইনি সহায়তা পেয়েছেন ১ লাখ ২৩ হাজার ৬২৯ জন অসমর্থ বিচারপ্রার্থী।
সংস্থার ওয়েবসাইটে সরকারি আইনি সেবা গ্রহিতার এ তথ্য ও পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে। ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন’Ñ অনুযায়ী গঠিত জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার অধীনে সারাদেশে ২০০৯ সালে ৯হাজার ১৬০ জন, ২০১০ সালে ১১ হাজার ২৬৬ জন, ২০১১ সালে ১২ হাজার ৫৬৮ জন, ২০১২ সালে ১৫ হাজার ৪৫০ জন, ২০১৩ সালে ১৯ হাজার ৪৯৩ জন ,২০১৪ সালে ২৫ হাজার ২৮৩ জন এবং ২০১৫ সালে ৩০ হাজার ৪০৯ জন অস্বচ্ছল বিচারপ্রার্থী আইনি সেবা পেয়েছেন। সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ ও প্রচারের ফলে সরকারি আইনি সেবা গ্রহণে অসমর্থ বিচার প্রার্থীর হার দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ ছাড়া সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টেও বিনা খরচে আইনি সুবিধা পাচ্ছেন আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচার প্রাপ্তিতে অসমর্থ বিচার প্রার্থীগণ। এ লক্ষ্যে গত বছর ৮ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইড অফিস স্থাপন করেছেন। এর আগেই দেশের ৬৪ জেলায় লিগ্যাল এইড অফিস স্থাপন করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম জানান, সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইড অফিস স্থাপনের পর ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ২১০টি মামলা লিগ্যাল এইডের জন্য আবেদন করে। এর মধ্যে ১৭১ মামলা লিগ্যাল এইডের আওতায় আসে। এর মধ্যে ৭৪টি মামলা চূড়ান্তভাবে নিস্পত্তি হয়ে গেছে ও ৯৭টি মামলা এখনো চলমান রয়েছে।
দেশে বিচার ব্যবস্থায় অতীতে আইনগত সহায়তার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। মানুষের সব মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি বিচার পাওয়ার অধিকারও প্রতিষ্ঠিত করতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করে। গত ২৮ এপ্রিল দেশে চতুর্থবারের মতো ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস’ পালিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় আইনগত সুবিধা প্রদান দিবসের’ অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী লিগ্যাল এইড কলসেন্টার জাতীয় হেল্পলাইনের উদ্বোধন করেন। এ হেল্পলাইনে ১৬৪৩০ নম্বরে ফোন করে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার মাধ্যমে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পাবেন দেশের স্বল্প আয়ের ও অসহায় বিচারপ্রার্থী নাগরিকরা।
সংবিধানের তৃতীয় ভাগের ২৭ অনুচ্ছদে বলা হয়েছে সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান ও আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। বঞ্চনার শিকার বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচার প্রাপ্তির লক্ষ্যে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বধীন সরকার ২০০০ সালে প্রণয়ন করে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন ২০০০’। তারপরের সরকারগুলো আইনটি কার্যকরে উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর আবারো আওয়ামী লীগ দরিদ্র ও অস্বচ্ছল জনগণের বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিতে আইনটি কার্যকরে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ আইনের আওতায় প্রণয়ন করা হয়েছে বিধিমালা। প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’। রাজধানীর ১৪৫, নেউ বেইলী রোডে এ সংস্থার প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকে নানা প্রচারণা, সেমিনার ও কর্মশালা আয়োজনের মধ্যদিয়ে এ সেবা বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টির ওপর বিস্তারিত জানার জন্য ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার’ নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে (িি.িহষধংড়.মড়া.নফ)। এ ওয়েবসাইটে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান বিষয়ে সকল তথ্য জানা যায়।
এ সংস্থার অধীনে সুপ্রিম কোর্টসহ প্রতিটি জেলায় গঠন করা হয়েছে কমিটি। বর্তমানে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও রয়েছে এ আইনি সহায়তা কমিটি। যার লক্ষ্য হলো আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, সহায় সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারনে বিচার প্রাপ্তিতে অসমর্থ ব্যক্তিগণের আইনী অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।
কারা এ সুবিধা পাবেন তা আইনগত সহায়তা প্রদান আইনে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল ব্যক্তি (সুপ্রিম কোর্টের ক্ষেত্রে যার বার্ষিক গড় আয় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে নয় ও অন্যান্য আদালতের ক্ষেত্রে যার বার্ষিক গড় আয় ১ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে নয়), কর্মক্ষম নন, আংশিক কর্মক্ষম, কর্মহীন বা বার্ষিক ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে আয় করতে অক্ষম এমন মুক্তিযোদ্ধা, যে কোনো শ্রমিক যার বার্ষিক গড় আয় ১ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে নয়, বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন এমন কোনো ব্যক্তি, ভিজিডি কার্ডধারী দুস্থ মাতা, পাচারের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত নারী বা শিশু, দুর্বৃত্ত দ্বারা অ্যাসিড দগ্ধ নারী বা শিশু, আদর্শ গ্রামে গৃহ বা ভূমি বরাদ্দপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি, অস্বচ্ছল বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা এবং দুস্থ নারীরা বিনামূল্যে আইনি সেবা পাবেন। এ ছাড়া উপার্জনে অক্ষম এবং সহায় সম্বলহীন প্রতিবন্ধী, আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে আদালতে অধিকার প্রতিষ্ঠা বা আত্মপক্ষ সমর্থন করতে অসমর্থ ব্যক্তি, বিনাবিচারে আটক এমন ব্যক্তি যিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, আদালত কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অস্বচ্ছল বলে বিবেচিত ব্যক্তি এবং জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অস্বচ্ছল বলে সুপারিশ করা বা বিবেচিত কোনো ব্যক্তি সরকারি খরচে এ আইনি সহায়তা পাবেন।