ঢাকা : বহুল আলোচিত সিলেটে শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলামসহ চারজনের মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ রাজন হত্যা মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আসামীপক্ষে আনা আপিলের শুনানি শেষে আজ এ রায় দেয়।
এর আগে এ বেঞ্চে ১৯ কার্যদিবস মামলাটির শুনানি হয় বলে সাংবাদিকদের জানান ডেপুটি এটর্নি জেনারেল জহিরুল হক । গত ১২ মার্চ মামলার শুনানি শেষে রায়ের জন্য ধার্য ছিল।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত অন্য তিনজন হলেন- চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না, তাজ উদ্দিন বাদল ও পলাতক জাকির হোসেন পাভেল। হত্যাকান্ডের ভিডিওচিত্র ধারণকারী নূর মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড কমিয়ে ছয়মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। বিচারিক আদালতের দেয়া দন্ডপ্রাপ্ত ১০ জনের মধ্যে অন্য ৯ জনকে সাজার পুরোটাই বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।
আসামিদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী এসএম আবুল হোসেন, বেলায়েত হোসেন ও শহীদ উদ্দিন চৌধুরী।
গতবছর ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে ১৩ বছরের শিশু রাজনকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরা এ ঘটনা মোবাইলে ভিডিও করে তা ইন্টারনেটে প্রকাশ করে। পরে এ হত্যার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঘটনার দেড় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে ১৬ অগাস্ট ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। রাজন হত্যার পরপরই গত বছর ১০ জুলাই সৌদি আরব পালিয়ে যান মূল অভিযুক্ত কামরুল। সেখানেই আটক করা হয় তাকে। গতবছর ১৫ অক্টোবর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে পরদিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। রায়ে শিশু রাজন হত্যার মূল হোতা কামরুল ইসলামসহ চারজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত।
এ ছাড়া রায়ে একজনকে যাবজ্জীবন, কামরুলের তিন ভাইকে সাত বছর এবং অন্য দুজনকে এক বছর করে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড করা হয়েছে। তিনজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
এ মামলা বিচারিক আদালতে দ্রুত সময়ে নিস্পত্তি দেশে বিচারের ইতিহাসে একটি নজির বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।