ঢাকা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৩:৪৮:৪৮

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

শিক্ষায় নতুন পরিকল্পনা, কলেজে ১০ হাজার নতুন শিক্ষক, ৪৫ নতুন বিষয়

| ২৯ আষাঢ় ১৪২২ | Monday, July 13, 2015

ছবি লোড হচ্ছে

ঢাকা: সরকারি কলেজে নতুন করে আরো দশ হাজার শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা করছে সরকার। শিক্ষক সংখ্যা বাড়িয়ে করা হচ্ছে প্রায় ২৫ হাজার। একই সঙ্গে সম্মান ও সমমানের শিক্ষাব্যবস্থায় অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে নতুন আরো ৪৫টি বিষয়। উচ্চশিক্ষাকে আধুনিক, যুগোপযোগী ও উন্নত করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।

সরকারি কলেজে পদ সৃজন ও বিভিন্ন পর্যায়ে নতুন বিষষ খোলার লক্ষ্যে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সারাদেশে একটি সমীক্ষা করে। ২৩টি অঞ্চলের ২৩ জন মনোনীত কর্মকর্তাকে নিয়ে গঠিত কমিটি দেশের প্রতিটি সরকারি কলেজে গিয়ে এই সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করে। সমীক্ষাটি নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ এবং নতুন বিষয় যুক্ত করার বিষয়টিকে সামনে রেখে করা হয়েছে। সেই সঙ্গে উপজেলা পর্যায়ে সরকারি কলেজগুলোতে প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামো না থাকায় স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্স উচ্চ শিক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারছে না উল্লেখ করে, সমীক্ষা কমিটি জেলা শহরে অবস্থিত সরকারি কলেজগুলোতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করার পক্ষে সুপারিশ করে।

রোববার সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সমীক্ষা প্রতিবেদন পেশ করা হয়। তারপর অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রতিবেদনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মূল আলোচনা ছিল নতুন শিক্ষক পদ সৃষ্টি। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সমীক্ষা প্রতিবেদনে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে ৩০৫টি সরকারি কলেজে ১২ লাখ ৯০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব কলেজে শিক্ষক রয়েছেন ১৪ হাজার ৮২০ জন। অর্থাৎ ৮৭ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে আছেন গড়ে মাত্র এক জন শিক্ষক। ফলে শিক্ষক বৃদ্ধি করা জরুরি। কমিটি সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে ১৪ হাজার ৮২০ শিক্ষক থেকে ১০ হাজার ১৪৭ জন বাড়িয়ে ২৪ হাজার ৯৬৭ জন করার প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে বর্তমানে অধ্যাপক রয়েছেন ৫০৩ জন, প্রস্তাব করা হয়েছে ২ হাজার ৬০৬ জন; সহযোগী অধ্যাপক রয়েছেন ২ হাজার ২০১ জন, প্রস্তাব করা হয়েছে ৫ গাজার ৭৯৪ জন; সহকারী অধ্যাপক রয়েছেন ৪ হাজার ১৮৮ জন, প্রস্তাব করা হয়েছে ৭ হাজার ৯২৮ জন এবং প্রভাষক হিসেবে রয়েছেন ৭ হাজার ৯২৮ জন, প্রস্তাব করা হয়েছে ৮ হাজার ৫১৭ জন।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (কলেজ) মোল্লা জালাল উদ্দিন বাংলামেইলকে বলেন, ‘নতুন শিক্ষক পদ সৃষ্টি ও নতুন বিষয় অন্তর্ভূক্ত করার বিষয়ে এটিই প্রথম বৈঠক ছিল। সেখানে এসব বিষয়ে প্রস্তাব হিসেবে এসেছে। এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে, সেমিনারের আয়োজন করে সবার মতামত নেয়া হবে। সুতরাং কোনো কিছুই এখনো চূড়ান্ত নয়।’

সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিচ্ছিন্নভাবে সরকারি কলেজগুলোতে বিভিন্ন বিভাগে পদ সৃষ্টি ও নতুন বিষয় খোলার বিষয়ে সম্বনয়হীনতা ছিল। উপজেলা পর্যায়ে সরকারি কলেজগুলোতে প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রয়েছে যা মানসম্মত উচ্চশিক্ষা বাস্তবায়নে কার্যকর ও যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাই সমীক্ষা কমিটি জেলা শহরে অবস্থিত সরকারি কলেজগুলোতেই স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রাখার পক্ষে সুপারিশ করেছে।

বর্তমানে সরকারি কলেজগুলোতে ৬৭টি বিষয়ে পাঠ দান করা হয়। আরো ৪৫টি বিষয় বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে সমীক্ষা প্রতিবেদনে। এ বিষয়ে মোল্লা জালাল উদ্দিন বলেন, ‘কিছু নতুন বিষয় অন্তর্ভূক্তির প্রস্তাব এসেছে। এগুলো আমরা বিবেচনা করছি। আমরা বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার মতো বিষয় যুক্ত করার চিন্তা করছি।’

নতুন করে যুক্ত করার ব্যাপারে প্রস্তাবিত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে: ফিসারিজ, ফরেস্ট্রি, ল্যান্ড স্কেপিং, ব্যাংকিং অ্যান্ড বিমা, নৃ-বিজ্ঞান, নৃত্যকলা, শব্দপ্রযুক্তি, লোক প্রশাসন, প্রফেশনাল এথিকস, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, সঙ্গীত ও যোগাযোগ, তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব, আদ-দাওয়া আল ইসলামিয়া, ইসলামি দর্শন, মঞ্চ ও অনুষ্ঠান যোগাযোগ, গার্মেন্টস অ্যান্ড টেকনোলিজ, ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়াটেটিক্স, আরপি চাইল্ডহুড কেয়ার অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান, ইনটেরিয়র ডিজাইনিং অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি, কম্পিউটার সায়েন্স, অ্যাপারাল মার্চেন্ডাইজিং, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ বিজ্ঞান, আইন, ফ্যাশন ডিজাইনিং, গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান, ফার্মেসি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, শিক্ষা, সঙ্গীত ও নাট্যতত্ত্ব, মানব সম্পদ উন্নয়ন, গৃহ ব্যবস্থাপনা ও শিশুবর্ধন, ড্রামা অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ, গাইডেন্স অ্যান্ড কাউন্সিলিং, চারু ও কারুকলা, প্রকৌশল অঙ্কন ও ওয়ার্কশপ প্রাকটিস, ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম, শিক্ষা ও গবেষণা, ব্যবসায় শিক্ষা, আরিব সাহিত্য এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ।

নতুন করে অন্তর্ভূক্তির প্রস্তাব করা বিষয়গুলোর জন্য ২ হাজার ৩২৫ জন শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এর মধ্যে অধ্যাপক ২২৭ জন, সহযোগী অধ্যাপক ৪৬৫ জন, সহকারী অধ্যাপক ৭২৬ জন এবং প্রভাষক ৯০৭ জন।