সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব আজ বুধবার শুরু হচ্ছে। ১৪ জুলাই উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ উৎসব।
এ উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এবং মন্দির নানা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। রাজধানী ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) রথযাত্রা উপলক্ষে ৯ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। তবে প্রতিবারের মতো এবারও দেশের সবচেয়ে বড় রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে মানিকগঞ্জের ধামরাইয়ে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস জগন্নাথ দেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছে জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এ বিশ্বাস থেকেই রথের ওপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমা রেখে রথযাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
সকালে বিভিন্ন মাঙ্গলিক আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে শুরু হবে রথযাত্রার অনুষ্ঠানমালা। এর মধ্যে রয়েছে হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, পদাবলি কীর্তন, আরতি কীর্তন, ভাগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পাঠ, ধর্মীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও ধর্মীয় নাটক মঞ্চায়ন।
ঢাকার ইসকন আশ্রমে বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মধ্য দিয়ে রথযাত্রা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এ উপলক্ষে দুপুরে স্বামীবাগ ইসকন আশ্রমে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনা সভা শেষে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে রথযাত্রা উৎসবের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
পরে সেখান থেকে বর্ণাঢ্য সাজে তিনটি বিশাল রথে জগন্নাথ দেব, শুভদ্রা ও বলরামের প্রতিকৃতিসহ শোভাযাত্রা বের করা হবে। শোভাযাত্রা টিকাটুলি, ইত্তেফাক মোড়, শাপলা চত্বর, দৈনিক বাংলা, পুরানা পল্টন, জাতীয় প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট, দোয়েল চত্বর, টিএসসি, জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে পলাশী হয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হবে।
রথযাত্রা উপলক্ষে রাজধানীর জয়কালী রোডের রামসীতা মন্দিরেও অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। বিকেলে এ মন্দিরে রথযাত্রা শুরু হবে। পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার কমিটি আয়োজিত রথযাত্রাটি শাঁখারীবাজার থেকে শুরু হয়ে মাধব গৌড়ীয় মঠে গিয়ে শেষ হবে। জগন্নাথ জিউ মন্দিরের রথযাত্রা তাঁতীবাজার থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করবে।
এ ছাড়া রাজধানীর অন্যান্য মন্দিরসহ দেশের বিভিন্ন মন্দিরেও রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ রথযাত্রা অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করার স্বার্থে ওই সময় বিকল্প সড়কে যানবাহন চলাচলের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। রথযাত্রা চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সবার সহযোগিতাও কামনা করেছে ডিএমপি।
এদিকে রথযাত্রা উপলক্ষে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা সর্বস্তরের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।