ঢাকা : মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় ১৬ আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা অপেক্ষমান রয়েছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে বিচারিক প্যানেল একটি মামলায় প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ১৯ জুন রায় ঘোষণা অপেক্ষমান (সিএভি) রেখে আদেশ দেয়। এ মামলার আসামিরা হলেন জামালপুরে আলবদর বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আশরাফ হোসাইনসহ আট রাজাকার। অন্যরা হলেন এডভোকেট শামসুল আলম ওরফে বদর ভাই, এস এম ইউসুফ আলী, অধ্যাপক শরীফ আহমেদ ওরফে শরীফ হোসেন, মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, মোহাম্মদ আবদুল বারী, মো. হারুন ও মোহাম্মদ আবুল হাসেম। এর মধ্যে এডভোকেট শামসুল আলম ও ইউসুফ আলী ছাড়া অন্যরা পলাতক।
গত বছরের ১৮ নভেম্বর এ আট আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে গত ১৪ জুন শেষ হয়। মোট ২৫ জন সাক্ষী ৮ আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন। তাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা, গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, লুটপাট ও মরদেহ গুমের পাঁচটি সুনির্র্দিষ্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
অন্য একটি মামলায় এ ট্রাইব্যুনালে জাতীয় পার্টির নেতা ও যশোরের সাবেক সংসদ সদস্য সাখাওয়াত হোসেনসহ আট আসামির যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় ঘোষণাও অপেক্ষমান রয়েছে। প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে গত বৃহস্পতিবার ১৪ জলাই এ মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমান রেখে আদেশ দেয়া হয়। আট আসামির মধ্যে সাখাওয়াত ও মো. বিল্লাল হোসেন বিশ্বাস ছাড়া অন্যরা এখনো পলাতক। পলাতক ছয় আসামি হলেন-মো. ইব্রাহিম হোসাইন, শেখ মো. মজিবুর রহমান, এম এ আজিজ সরদার, আব্দুল আজিজ সরদার, কাজী ওহিদুল ইসলাম এবং মো. আব্দুল খালেক।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগ গঠন করা হয়। গত ১৫ ফেব্রæয়ারি থেকে ৭ জুন পর্যন্ত আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১৬ জন সাক্ষী। আসামিপক্ষে কোনো সাফাই সাক্ষী ছিলো না।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালে এর আগে ২৪ মামলার রায় হয়েছে।
এদিকে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আনা আপিলেও মৃত্যুদন্ড বহাল রায় রিভিউ চেয়ে জামায়াতের আরেক নেতা মীর কাসেম আলীর আবেদন শুনানির জন্য ২৫ জুলাই দিন ধার্য রয়েছে। আপিলের আরেক রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গতবছর ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়। রায় রিভিউ চেয়ে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ ইতোমধ্যে আবেদন দাখিল করেছে যা এখন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।