ঢাকা, মে ৬, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৪:০১:১৫

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

যথাযথ সেবা প্রদানে পুলিশের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহবান

| ১২ মাঘ ১৪২৩ | Wednesday, January 25, 2017

ঢাকা : রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আইনের রক্ষক হিসাবে গণবান্ধব মনোভাব সৃষ্টি করতে যথাযথ সেবা প্রদানে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করা আপনাদের প্রধান দায়িত্ব। তিনি বার্ষিক পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭ উপলক্ষে আজ বঙ্গভবনে পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, পুলিশ বাহিনীকে গণমুখি এবং গণবান্ধব মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালনকালে মানবাধিকার ও গনতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, জান-মালের নিরাপত্তা পাওয়া জনগনের অধিকার। এটি ক্ষমার বিষয় নয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি হামিদ প্রথম পুলিশ সপ্তাহে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া ভাষন স্মরন করে বলেন, জনগনের দুঃসময়ে তাদের সেবা, ভালবাসা ও সহায়তা করতে তিনি পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়েছিলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশ ও জাতির উন্নয়নে অভ্যন্তরীন শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি সন্ত্রাস অথবা জঙ্গিবাদ দমনে এবং অনেক স্পর্শকাতর মামলার আসামীদের দ্রুত আটক করে বিচারের সম্মুখিন করার ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, এতে সাধারন জনগনের মধ্যে পুলিশের প্রতি আস্থা বেড়েছে।
রাষ্ট্রপতি জাতিসংঘ শান্তি মিশনে পুলিশের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, এতে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে (আইসিটি) এবং অন্যান্য কারিগরি বিষয়ে, বিশেষ করে সাইবার অপরাধ বন্ধে আরো দক্ষতা ও জ্ঞান অর্জণের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, অপরাধ বন্ধে এলাকাভিত্তিক অপরাধের ধরন সনাক্ত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
রাষ্ট্রপতি সমাজে শান্তি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় দায়িত্ব পালনে পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, কোন প্রকৃত অপরাধী যেন বিচারে সাজা পাওয়া থেকে রেহায় পেয়ে না যায়, আবার কোন নিরপরাধী লোক অপরাধ না করেও যেন সাজা না পায়, সেদিকটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি দেশের সীমানা ছাড়িয়ে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের প্রকৃতি পরিবর্তনের প্রতি পুলিশ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং সন্ত্রাসবাদের বৈশ্বিক দিক মোকাবেলায় তাদের ক্ষমতা বাড়ানোর আহবান জানান।
তিনি ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে জঙ্গিবাদের মোকাবেলায় জনগণের অংশগ্রহণ বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণেরও পরামর্শ দেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় পুলিশের সাফল্যের প্রশংসা করে বলেন, তাদের কার্যক্রম দেশে বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘মাদকের অপব্যবহারও একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। সামাজিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে এই সমস্যা থেকে সমাজকে মুক্ত করতে আপনাদের আরো বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।’
তিনি কমিউনিটি পর্যায়ে অপরাধ প্রতিরোধে কমিউনিটি পুলিশিংয়ে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মাদক অপব্যবহারের খপ্পর থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি উপজেলা অথবা প্রতিটি উপজেলার একটি ইউনিয়নকে মুক্ত করতে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দেন।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, স্থানীয় জনগণ, তাদের প্রতিনিধিবৃন্দ ও সংশ্লিষ্টরা এই ব্যাপারে সার্বিক সহায়তা দেবে।
রাষ্ট্রপতি নারী পুলিশিং-এর পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নের উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশের নারী সদস্যদের জন্য আমরা গর্বিত।’
তিনি বলেন, ‘জাতির জনক ১৯৭৪ সালে পুলিশ বিভাগে ১৪ জন নারীকে নিয়োগদানের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো এই উদ্যোগ নেন এবং দিনে দিনে এই সংখ্যা বাড়ছে।’
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ নিজ নিজ বিভাগে কৃতিত্বপূর্ণ অবদান ও বীরোচিত ভূমিকা রাখার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) ও প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম) প্রাপ্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে একটি গণতান্ত্রিক, সমতা, ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সমাজ বিনির্মাণে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সততা, আন্তরিকতা ও ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সকল সদস্য কাজ করবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোজাম্মেল হক খান ও আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন।