ঢাকা, মে ৫, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৮:০২:৫৭

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

ভোরের পাতায় সংবাদ প্রকাশের পর তোপের মুখে মন্ত্রী-এমপিরা!

| ২৭ আষাঢ় ১৪২৩ | Monday, July 11, 2016

p_119565

:: ভোরের পাতা অনলাইন ::

‘জঙ্গিবিরোধী ভূমিকায় নীরব এমপিরা!’’ শিরোনামে রবিবার (১০ জুলাই) দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর আজ সোমবার (১১ জুলাই) ঈদ-পরবর্তী প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠকে তোপের মুখে  পরেছেন মন্ত্রী-এমপিরা।

মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদেরকে এলাকায় গিয়ে জঙ্গিবাদ বিরোধী জনসচেতনতা গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকার ঘোষিত তিনদিন ছুটি শেষে সোমবার খুলছে সরকারি অফিস-আদালত। ঈদের ছুটির পর প্রথম কর্মদিবসেই সচিবালয়ে সকাল ১১টায় শুরু হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক।

গুলশানের অভিজাত রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে এবং শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতের আড়ালে জঙ্গি হামলার পর এই প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠকে বসে। বৈঠকে উপস্থিত মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “প্রতিটি স্থানে দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি এলাকা যেন আমাদের নজরদারিতে থাকে সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “দেশি-বিদেশি চক্র বাংলাদেশের বদনাম করতে আপ্রাণ চেষ্টায় নেমেছে। তরুণদের একাংশকে নানাভাবে তারা মগজ ধোলাই করে নিজেদের দলে টানছে। এক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার পাশপাশি সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়ানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।”

ভোরের পাতায় প্রকাশিত ঐ রিপোর্টটিতে যা বলা হয়েছিল, “দেশে একের পর এক ঘটছে সন্ত্রাসী হামলা। শহর থেকে গ্রামে। সর্বত্রই এখন ছড়িয়ে পড়ছে ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে কতিপয় বিপথগামী তরুণের সন্ত্রাস। ঈদের আগে ও পরে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানী ঢাকার স্পর্শকাতর জোন হিসেবে খ্যাত গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসীদের বর্বর হামলায় প্রাণ গেছে বেশ কজন অসহায় মানুষের।

যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ ও বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে ঢাকার গুলশানে জিম্মি সঙ্কট ও কিশোরগঞ্জে প্রকাশ্যে পুলিশের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের বন্দুকযুদ্ধ সবই নতুন ঘটনা। যেসব ঘটনা আগে পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তানে ঘটেছে, এখন সেসব ঘটনা বাংলাদেশে ঘটনানোর চেষ্টা করছে সন্ত্রাসীরা।

তবে সব থেকে বিস্মরকর বিষয় হলো যেসব সন্ত্রাসী সরাসরি বন্দুকযুদ্ধ করছে, তারা সবাই সমাজের বিত্তশালী পরিবারের সন্তান। তারা সবাই শিক্ষিত। পড়াশোনা করেছে নামি-দামি স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাংলাদেশে থেকেও গায়ে লাগিয়েছে প্রাচ্যের হাওয়া। অথচ এসব তরুণকে বিভ্রান্ত করে শান্তির ধর্ম ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আত্মঘাতী করে তৈরি করেছে কিছু মানুষ।

তাদের শনাক্ত করতে পাড়া-মহল্লায় কমিটি গঠন করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণার পরও দেশের অধিকাংশ এলাকায় সাংসদদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।

তাঁরা নিজেদের ব্যক্তিগত কাজে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ খোদ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। শুধু তাই নয়, অভিযোগ উঠেছে এমপি-মন্ত্রীদের অনেকেই এলাকার নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করার কারণে দলে বিভেদ বাড়ছে। বর্তমান সরকারের দুই-তৃতীয়াংশ আসন থাকলেও অধিকাংশ এমপি জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারে এখনও নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছেন।

আমাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকান্ড রুখতে সাংসদদের যেখানে ভূমিকা রাখার কথা, অথচ তাঁরাই এখন জড়িয়ে পড়ছেন কোন্দলে। বখে যাওয়া তারুণ্যের হাতে যখন আমাদের এই দেশ ক্ষতবিক্ষত, যখন বিপথগামী একদল সন্ত্রাসীর হাতে অসহায় ও নিরপরাধ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে বুলেটের আঘাতে, তখন প্রশ্ন উঠেছে- নীরব কেন সরকারের সাংসদরা!

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঈদের নামাজ পড়তে অনেক সাংসদই এখন তাঁদের গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন। কিন্তু তাঁদের জঙ্গিবিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পটুয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ মাহবুবুর রহমান তালুকদার, কুমিল্লা-৮ আসনের সাংসদ মিলন, ময়মনসিংহ-২ আসনের সাংসদ শরীফ আহম্মদ, বগুড়া-৬ আসনের সাংসদ নজরুল ইসলাম ওমর, কক্সবাজার সদর আসনের সাংসদ সাইমুন সারোয়ার কমল, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া আসনের সাংসদ আবু রেজা মুহাম্মদ নদভী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ গোলাম রব্বানী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২ আসনের গোলাম মোস্তাফা বিশ্বাস এলাকায় থাকলেও জঙ্গিবিরোধী কোনো কর্মসূচিতে ছিলেন না।

তাঁদের মতো বিভিন্ন আসনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বেশিরভাগ সাংসদ জঙ্গিবিরোধী প্রচারের জন্য কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেননি। ফলে প্রশ্ন উঠেছে- সরকারের আন্তরিকতা থাকলেও সাংসদরা প্রচারে না নামলে কি করে জঙ্গিবিরোধী অভিযান সফল হবে।”

মন্ত্রিসভা বৈঠকে গুলশানের আর্টিজান হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে গুলশানের ঘটনা মোকাবেলা করেছে। দেশের বাইরে অনেকে মনে করতে পারে যে আমরা সক্ষম নই। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমরা যে কোনো পরিস্থিতি নিজেরাই মোকাবেলা করতে পারি। আমরা ভালোভাবেই গুলশানের ঘটনা সামাল দিতে পেরেছি।