ঢাকা, মে ৫, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৬:৫৫:২৩

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

ভাস্কর্য সরানোয় প্রধানমন্ত্রীকে হেফাজতের ধন্যবাদ

| ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৪ | Friday, May 26, 2017

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ সরকারকে ধন্যবাদ জানাবে।’

বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর ভাস্কর মৃণাল হকের নেতৃত্বে ১৩ জন কর্মীসহ মোট ২০ শ্রমিক সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেন।

সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে থেমিস দেবীর মূর্তি (ভাস্কর্য) বসিয়ে দেওয়া মানে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সাথে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়া এবং দেবীর মূর্তি স্থাপন সংবিধান বিরোধী, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বোধ-বিশ্বাসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ, নির্বাহী বিভাগের আওতাধীন এলাকায় এককভাবে থেমিস দেবীর মূর্তি স্থাপন করা মানে অনধিকার চর্চা, মূর্তিকে সার্বজনীনতা দেওয়ার অপচেষ্টা, যা নৈতিকতা ও আইনবিরোধী , মূর্তি স্থাপন গণতন্ত্রের প্রতি চরম কুঠারাঘাত,দেবীর স্থাপন সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক,এই মূর্তি দেশ, জাতি ও গণমানুষের চেতনার পরিপন্থী।’
ফয়জুল্লাহ বলেন, জাতীয় ঈদগাহ-এর দেয়াল ঘেসে থেমিস দেবীর মূর্তি স্থাপন অসঙ্গতিপূর্ণ,থেমিস দেবীর মূর্তি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্ম অবমাননা, থেমিস দেবীর মূর্তিকে শাড়ি পড়িয়ে বঙ্গীয় রূপ দেয়ার অপচেষ্টা করা মানে দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি চরম অবজ্ঞা করা,মূর্তি স্থাপন করে প্রমাণ করা হয়েছে বাংলাদেশে ন্যায় বিচার নেই,থেমিস দেবীর মূর্তি থেকে একজন নিষ্ঠাবান পৌত্তলিকের সুর, দর্শন, বর্ণনা এবং আকুতি ধ্বণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ঈদগাহ’র সম্মুখভাগে মূর্তি স্থাপনের মধ্য দিয়ে কোটি কোটি বিশ্বাসী মানুষের হৃদয়ে ছুরি চালিয়ে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন- তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ দেশবাসীর শান্তি ও স্বস্তির জন্যেই প্রয়োজন। তাদের অমার্জনীয় এই পাপের দায় সরকার নিতে পারে না। কাজেই মূর্তি অপসারণে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও নন্দিত হচ্ছে। জনগণ মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ও সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে।

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ওলামা কেরামকে আস্থা ও ভরসা রাখতে বলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কথা প্রতিফলন ঘটেছে, সেজন্য তাকে ধন্যবাদ। দেশের মানুষের ধর্মীয় চেতনা বোধকে মূল্য দিয়ে মূর্তি সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। সরকারে শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে। মূর্তি নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করেছে সরকার।’

এদিকে, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, “বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আমাকে ডেকেছিলেন। এসময় ড. কামাল হোসেন, খন্দকার মাহবুব হোসেনসহ সুপ্রিম কোর্টের বারের বর্তমান ও সাবেক দায়িত্বশীলরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সামনের ভাস্কর্যকে কেন্দ্র করে আমি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা চাই না। এটি সরিয়ে নেওয়া হোক। এবং এমন জায়গায় স্থাপন করা হোক যেন প্রশ্ন না ওঠে ।’’

১১ এপ্রিল গণভবনে  হেফাজতে ইসলামের নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপন করা ভাস্কর্য সরিয়ে নিতে দাবি জানান। সে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সামনে সম্প্রতি স্থাপন করা থেমিসের মূর্তি আমিও পছন্দ করিনি। থেমিসের মূর্তিতে আবার শাড়ি পরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের মূল ফটকের সামনে গত ডিসেম্বর মাসে এই ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছেন ভাস্কর মৃণাল হক। ডান হাতে নিচের দিকে ধরা একটি তলোয়ার আর বাম হাতে দাঁড়িপাল্লা নিয়ে দাঁড়ানো নারী। এই ভাস্কর্য স্থাপনের পর থেকেই বিভিন্ন ইসলামি সংগঠন তা অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছে।

তথ্য- http://www.banglatribune.com/