আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, ‘ভারতের সাথে আমাদের আদর্শের মিল আছে। তারাও ধর্মনিরপে রাষ্ট্র, আমরাও ধর্মনিরপে রাষ্ট্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতের ১৮ হাজার সৈন্য রক্ত দিয়েছে। এই রক্তের বন্ধন কেউ কখনো ছিন্ন করতে পারবে না। এটা চিরস্থায়ী বন্ধন।’
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ঢাকা মহানগর পূজা কমিটির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ দেশের সব জঙ্গি হামলা ও গুপ্ত হত্যার সাথে বিএনপি-জামায়াত জড়িত মন্তব্য করে বলেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে গুপ্তহত্যায় জড়িতরা ধরা পড়ার পর দেখা যায় তারা ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতা। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়, যারা গুপ্তহত্যা ও জঙ্গিবাদ করছে তারা বিএনপি- জামায়াতের। এখানে আইএস কিংবা বিদেশী কোনো হাত নেই।’
ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে. এল. ভৌমিকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার আদর্শ সাইকা, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত সেন দীপু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ডি এন চ্যাটার্জি, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ সাহা মনি, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের সেবায়েত প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ।
বিচারিক আদালতের বিচারক মো: মোতাহার হোসেনকে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান তিন কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন অভিযোগ করে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘ঘুষ দিয়ে তারেক বলেছেÑ আমারে কোনোভাবে বাঁচায়া দাও। আর ওই ব্যাটা (বিচারক) করছে কী; যেদিন রায় দিছে ওই দিন রাতেই পালাইয়া গেছে। কারণ, তিনি জানেন নি¤œ আদালত যে রায় দিছে তা ঠিকমতো দেননি।’
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন। কিন্তু কার সাথে জাতীয় ঐক্য? খালেদা জিয়ার জঙ্গি সংগঠনের সাথে? এটা সম্ভব নয়, ঐক্য হবে জনগণের সাথে। জনগণকে সাথে নিয়ে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করা হবে।’
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত ভেবেছিল আমাদের পার্শ্ববর্তী হিন্দু বধ্যুষিত দেশ ভারতের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করতে পারলে রাষ্ট্রমতায় যেতে পারবে। আর তাই বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক নষ্ট করতে এ দেশের হিন্দু, বৌদ্ধ ও পুরোহিতদের গুপ্তহত্যা করা হয়েছে।’
হানিফ আরো বলেন, আজকে যে সাম্প্রদায়িক বিষবৃরে ফল ভোগ করছি, তা ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে জিয়াউর রহমান বপন করে গেছেন। সময় এসেছে এসব বিষবৃ উপড়ে ফেলার। আমরা বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী শক্ত হাতে এ বিষবৃ উপড়ে ফেলবেন।
হিন্দু সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এ দেশটা যেমন আমাদের, তেমনি হিন্দু সম্প্রদায়ের। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসবাদমুক্ত করবো। এখানে আপনাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।