গাজীপুরের টঙ্গী বিসিক এলাকার টাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেড কারখানায় আজ শনিবার সকালে বয়লার বিস্ফোরণে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
আগুনের তীব্রতায় চারতলা ভবনের একাংশ ধ্বসে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা কারখানা ছাড়িয়ে আশপাশের বাসাবাড়ি, গোডাউন, ব্যাংক ও কারখানায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
এতে মহিলা ও শিশুসহ ২৩ জন নিহত ও শতাধিক শ্রমিক ও পথচারী আহত হয়েছে। আহতদের টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও উত্তরার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে টঙ্গী, জয়দেবপুর, ঢাকার কুর্মিটোলা ও আশুলিয়া ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে সকাল সোয়া ১১টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।
এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ডিডি বদিউজ্জামানের নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীরা জানায়, গতকাল সকাল ৫টা ৫৫মিনিটে কারখানার নিচতলায় মূলফটকের পাশে স্থাপিত বয়লার বিস্ফোরণের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা কারখানায় রক্ষিত ট্যাবলেটের স্ট্রিপ্ট, পটেটো চিপস ও বিস্কুটের ফয়েলপ্যাক তৈরির বিভিন্ন কাঁচামাল ও কেমিক্যালের ড্রামে ছড়িয়ে পড়ে।
ঈদের আগমুহূর্তে প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ শ্রমিক ওই কারখানায় রাতভর কাজ করছিলেন। হঠাৎ আগুন লাগায় হতভম্ব হয়ে পড়েন এবং দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করতে থাকেন। আটকে পড়া শ্রমিকরা হুড়োহুড়ি করে বের হতে গেলে আগুনে পুড়ে ও দেয়াল চাপায় কারখানার শিফট ইনচার্জ সুভাষ চন্দ্র দাস, ইদ্রিস আলী, আল মামুন, নিরাপত্তাকর্মী জাহাঙ্গীর আলম, দেলোয়ার হোসেন, আব্দুল হান্নান, শ্রমিক জাহিদুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, রফিকুল ইসলাম, দুইজন অজ্ঞাত পথচারী, শিশু ও মহিলাসহ অন্তত: ২০ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
এতে আহত হয়েছে শতাধিক শ্রমিক। আহত আসিফ, রোকন, দিলিপ চন্দ্র রায়, ফেরদৌস আলম, আবু সাঈদ, আকবর আলী, শহিদুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, লিটন, মাহবুব, কামরুল ইসলাম, জাকির হোসেন, মিজানুর রহমার, নিজামউদ্দিন, শহিদুল, শাহআলমসহ অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছে। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রায় ৩০জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. পারভেজ হোসেন বলেন, ওই কারখানার বিস্ফোরিত বয়লারের আঘাতে ও আগুনে দগ্ধ হয়ে ১৩ জনের লাশের নাম ঠিকানা হাসপাতালে নথিভুক্ত হয়েছে।
তা ছাড়া শতাধিক আহত ব্যক্তির চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ৩০জনকে ঢামেকে পাঠানো হয়েছে আর ১১জন রোগী আমাদের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক আনিস মাহমুদ বলেন, ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে। বয়লারটি কারখানার মূলফটকে থাকায় বিস্ফোরণে দেয়াল ধ্বসে পড়ায় এবং কালো ধোয়ার কুণ্ডলীর কারণে শ্রমিকরা বের হতে পারেনি। সকাল ১১টা পর্যন্ত