ঢাকা, মে ৭, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ২৩:১৩:৩৬

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে স্মার্ট কার্ড দেয়া হবে

| ১৮ অগ্রহায়ন ১৪২৩ | Friday, December 2, 2016

ঢাকা : দেশের সকল বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে স্মার্ট কার্ড দেয়া হবে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর সম্প্রতি সারাদেশে জরিপ চালিয়ে ১৫ লাখ ১০ হাজার বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিকে (প্রতিবন্ধী) শনাক্ত করেছে। তাদের সকল তথ্যাবলী নিয়ে একটি শক্তিশালী ডাটাবেজ তৈরি করছে অধিদপ্তর।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ জিল্লার রহমান বাসসকে জানান, ডাটাবেজের এ তালিকা ধরে আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সবাইকে স্মার্ট কার্ড দেয়ার পরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে যদি সম্ভব না হয়, তাহলে ২০১৮ সালের ফাস্ট কোয়ার্টারের মধ্যে তা সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে জরিপ তালিকা ধরে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সাময়িক পরিচয়পত্র দেয়ার কাজ অধিদপ্তর শুরু করেছে । সেই সাথে অধিদপ্তর ডাটাবেজ তৈরির কাজও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি আশা করছেন, আগামী বছরের মে মাসের মধ্যে এ কাজ শেষ হবে।
সচিব বলেন, নতুন বছরের জুন থেকে যে কোন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তির কোডনম্বর ধরে ডাটাবেজে ঢুকলে তার সকল তথ্য জানা যাবে। ওই সব তথ্যের মধ্যে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা, অটিজমের প্রকৃতি, পরিবারে বর্তমানে অটিজম আর কেউ আছে কিনা, অতীতে কেউ ছিল কিনা, পরিবারের অটিজমের হিস্ট্রি, পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি, সরকার প্রদেয় কোন কোন ভাতা ও সুবিধা তিনি পাচ্ছেন, কোনটি পাচ্ছেন না, তিনি কর্মক্ষম কিনা বা কর্মক্ষমের সামর্থ আছে কিনা ইত্যাদি থাকবে।
তিনি বলেন, ডাটাবেজের কাজটি সম্পন্ন হলে ওইসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সরকারের পক্ষ থেকে আরো গবেষণা করা হবে, যাতে প্রতিবন্ধীতার কারণ উদঘাটন ও তার রাশ টেনে ধরা যায়।
জিল্লার রহমান বলেন, তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের যতবেশি সম্ভব বাস্তবানুগ সুবিধা প্রদান করা যায়, সে লক্ষ্যেও তারা কাজ করছে। যেমন, কোন চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি যদি তার যোগ্যতানুযায়ী সরকারী কোন দফতরে চাকরির জন্য আবেদন করেন এবং তার আবেদনের একটি কপি যদি মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দেয়া হয়, তাহলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তার চাকরি পাওয়ার ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবধার কথা উল্লেখ করে ভারপ্রাপ্ত এ সচিব বলেন, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সারাদেশে ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্যকেন্দ্রের মাধ্যমে দৈনিক প্রায় ১০ হাজার প্রতিবন্ধী বা প্রতিবন্ধীর ঝুঁকিতে থাকা মানুষ বিনামূল্যে বিভিন্ন থেরাপিউটিক সেবা নিচ্ছেন, নিচ্ছেন কাউন্সিলিং ও প্রশিক্ষণ, পাচ্ছেন সহায়ক সামগ্রী।
তিনি বলেন, এসব কেন্দ্রে নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী শিশু ও ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে এনডিডি কর্ণার। এছাড়া এ ফাউন্ডেশনের আওতায় সারাদেশে বিনামূল্যে পড়াশুনার লক্ষ্যে অটিজম শিশুদের জন্য ১০টি স্কুল রয়েছে। পরিচালিত হচ্ছে ৬২টি বিশেষ স্কুল। দেশব্যাপী ৩২টি মোবাইল থেরাপি ভ্যান দেশের প্রত্যন্ত জনপদে ‘আরলি স্ক্রিনিং, এ্যাসেসমেন্ট ও ইন্টারভেনশন’ নিশ্চিত করছে, অনেক উন্নত দেশেও যা বিরল। এ ফাউন্ডেশনটি শেখ হাসিনার সরকারের প্রথম মেয়াদে অর্থাৎ ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বলে তিনি জানান।
সচিব জিল্লার বলেন, এ বছর সরকার সাড়ে ৭ লাখ অস্বচ্ছল বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিকে মাথাপিছু ৬শ’ টাকা করে মোট ৫৪০ কোটি টাকার ভাতা প্রদান করেছে। দেশের ৭০ হাজার প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীর মাঝে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে উপবৃত্তি দিয়েছে।
তিনি বলেন, ৬৪ জেলায় সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় ৬৪০ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য বিনামূল্যে আবাসিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এছাড়া দেশে ১২টি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী স্কুলে প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য বিনামূল্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও চলছে।
ভারপ্রাপ্ত সচিব আরো বলেন, এটুআই প্রোগ্রামের আওতায় ৬টি ই-লার্নিং সেন্টারে প্রতি কোর্সে ১শ’ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য তথ্য প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ চালু করা হয়েছে। এর ফলে দেশের প্রতিবন্ধী শিশুরা পরিণত হচ্ছে দক্ষ জনশক্তিতে।
তিনি বলেন, পিছিয়ে পড়া এ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তাঁর পিতার মতই অন্তহীন মমতা হৃদয়ে ধারণ করে তাদের উন্নয়নে দেশ ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী প্রজ্ঞার জন্য মূল জনগোষ্ঠীর সাথে অটিজম ব্যক্তিরাও আগামীতে সমান তালে এগিয়ে যাবে।