ঢাকা, এপ্রিল ২৬, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১১:০৩:২১

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

বারদীতে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তিরোধান উৎসব অনুষ্ঠিত হিন্দু মহজোট ও মইনোরিটি ওয়াচের সেবাদান

| ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২২ | Wednesday, June 3, 2015

নারায়ণগঞ্জ: লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১২৫তম  তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বারদীতে অনুষ্ঠিত হল তিরোধান উৎসব। লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রমে সমাগম ঘটে দেশ বিদেশের লাখো ভক্তের।  মুখরিত হল আশ্রম চত্বর। লক্ষ পুণ্যার্থীর মাঝে সেবা দিতে সেবাক্যাম্প  স্থাপন করে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। তারমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট  একটি। বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট যে সকল সেবা দানে নিয়োজিত ছিল তা হল- দূর-দুরান্ত থেকে আগত পুণ্যার্থীর সুবিধার্থে শৃঙ্খলা রক্ষা করা,বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করা,পুণ্যার্থীর সুবিধার্থে সকলের জন্য তরল দুধ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা। (চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছেন ডাঃ মনোরঞ্জন মনা ডাঃ প্রনজিৎ ভৌমিক,ডাঃ সাইফুল ) আগত পুণ্যার্থী ভক্তদের ছিনতাইকারীদের হাত থেকে মুক্ত থাকার সতর্ক করণ ব্যবস্থা করা শিশু, যেকোন মালামাল হারানো গেলে তা উদ্ধারে মাইকে ঘোষণা সহ নানাবিধ সেবা দানে নিয়জিত ছিল বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট সেচ্ছা টিম।উক্ত সেবাক্যাম্প অনুষ্ঠানে মান্যবর অথিতি হিসাবে উপস্হিত ছিলেন এডভোকেট রবীন্দ্র ঘোষ সভাপতি বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ(বি ডি এম ডাব্লিও) ,মানিক চন্দ্র সরকার সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও -সেবাক্যাম্প সভাপতি বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট,আরো উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ  উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতিঅসিত কুমার দাস,দৈনিক আজকালের জেলা প্রতিনিধি মাহাববুল ইসলাম,বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট নারায়নগঞ্জ মহানগর শাখার সহ-সভাপতি প্রদীপ রায়,নারায়নগঞ্জ জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক গোপাল মন্ডল,সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয়  দাস কাব্য,হিন্দু ছাত্র মহাজোট নারায়নগঞ্জ জেলা শাখার অথ সম্পাদক বিকাশ দাস,দপ্তর সম্পাদক পবিত্র দাস,সহ-দপ্তর সম্পাদক সৌরভ সাহা,বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট সোনারগাঁ  উপজেলা সভাপতি সুবাস  সূত্রধর,বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট সোনারগাঁ উপজেলা সভাপতি কৃষ্ণ চন্দ্র শীল ও সাঃ সম্পাদক নিরমল দাস সহ যুব ও ছাত্র মহাজোটের কেন্দ্রীয়,জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ ।

বাবা লোকনাথের আদ্যোপান্ত

রামকানাই ঘোষাল ও কমলাদেবীর কনিষ্ঠ পুত্র লোকনাথ ব্রহ্মচারী ১১৩৭ বঙ্গাব্দের (১৭৩০ খ্রি.) জন্মাষ্টমীর দিন উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাট থানার স্বরূপনগর-কচুয়া গ্রামে আবির্ভূত হন। লোকনাথ ব্রহ্মচারীর বয়স যখন এগারো বছর, তখন গুরু ভগবান গাঙ্গুলি তাকে ও তার বাল্যবন্ধু বেণীমাধব বন্দ্যোপাধ্যয়কে উপনয়ন ও সন্ন্যাস দীক্ষা দেন। পরে তাদের সঙ্গে নিয়ে গৃহত্যাগ করেন (১১৪৮ বঙ্গাব্দ, ১৭৪১ খ্রি.)।

প্রথমে তারা আসেন কালীঘাটে, সেখান থেকেই দুই নবীন সন্ন্যাসীর সাধনা আরম্ভ হয়। গুরু ভগবান গাঙ্গুলী শিষ্যদের নানা ব্রত পালন করতে শেখান। অর্থাৎ সারাদিন উপবাস থেকে রাতে আহার, এভাবে একদিন, তিনদিন, পাঁচদিন, বারোদিন, পনেরদিন, শেষে টানা একমাস উপবাসের পরে আহার। এভাবেই নানা ব্রত উদযাপনের পর তারা যান হিমালয় পর্বতে।

এরপর দীর্ঘ নব্বই বছর বরফের উপর কঠোর সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন। এভাবে পূর্ণ-ব্রহ্মত্ব লাভের পর লোকহিতার্থে পৃথিবীর নানা দেশে পর্যটন করেন পায়ে হেঁটে। বিভিন্ন ধর্মের তত্ত্ব ও তথ্য সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে মক্কা-মদিনাসহ বিশ্বপরিক্রমা করেন।

বিশ্বপরিক্রমার পর বন্ধু বেণীমাধবকে সঙ্গে নিয়ে ১৩৩ বছর বয়সে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যান (১৮৬৩ খ্রি.)। সেখান থেকে বেণীমাধব চলে যান কামাখ্যায় আর লোকনাথ ব্রহ্মচারী লোকহিতার্থে অবতরণ করেন সমতলে- তার লীলাক্ষেত্র নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার বারদী গ্রামে।

আপনভোলা এই সন্ন্যাসীকে প্রথমে কেউ চিনতে পারেনি। কথিত আছে একদিন দুই ব্রাহ্মণ যুবকের পৈতেয় প্যাঁচ লেগে যায়। যখন যুবকদ্বয় সেই প্যাঁচ খুলতে পারছিল না তখন তাদের অনুরোধে সন্ন্যাসী শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী গায়ত্রী মন্ত্র জপের পর হাততালি দিতেই পৈতের প্যাঁচ খুলে যায়। এরপরই চারদিকে প্রচার হয়ে গেল অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন মহাপুরুষের কথা। পরিচিত হন বারদী ব্রহ্মচারী নামে।

এমন কিছু অলৌকিক ঘটনার মধ্য দিয়ে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি প্রায়শই বলতেন, আমাকে ঠাকুরের আসনে বসিয়ে তিনবেলা পূজা করার প্রয়োজন নেই। শুদ্ধ ভক্তিতে স্মরণমাত্র প্রত্যেকেই আমার সাড়া পাবে।

১২৯৭ বঙ্গাব্দের (১৮৯০ খ্রি.) ১৯ শে জ্যৈষ্ঠ ১৬০ বছরে মহাপ্রয়াণে যাবার আগে বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী সকলকে বলেন, “আমি নেই এ কথা তোমরা কখনো মনে করবে না। আমি ছিলাম, আমি আছি, আমি থাকবো।”

‘শুধু সুখের সময় নয়, রণে-বনে, জলে-জঙ্গলে যখনই বিপদে পড়িবে আমাকে স্মরণ করিও আমিই রক্ষা করিব’- লোকনাথ ব্রহ্মচারীর এই বাণীই ভক্তদের কাছে অভয়মন্ত্র আজও।

Hindu MohaJote- এর ছবি