বন্দরে ৩ সহযোগীসহ থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদ গ্রেফতার হয়েছে।
পুলিশের অস্ত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগে শনিবার বিকেলে দীর্ঘ ৩ ঘন্টা শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান শেষে স্থানীয় লেজারার্স আবাসিক এলাকার একটি ৬তলা ভবনের কক্ষ থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় পুলিশ ওই ভবনের অন্যান্য কক্ষ থেকে ১৪টি দেশীয় অস্ত্র, ১০ রাউন্ড গুলি, ২৪ বোতল ফেন্সিডিল ও ২২ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে পৃথক দু’টি মামলা রুজু হয়েছে। বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাব-ইন্সপেক্টর অখিল চন্দ্র বিশ্বাস শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় থানার একটি মামলার আসামী ধরার জন্য কনষ্টেবল মান্নান ও আমিরুলকে নিয়ে বন্দর খেয়াঘাট সংলগ্ন বাংলা ডকইয়ার্ড এলাকায় যায়। সেখানে আসামী মাসুদ ওরফে ছোট মাসুদকে হাতে নাতে আটক করতে সক্ষম হলে মাসুদের সহযোগীরা দারোগা অখিলের সঙ্গে দস্তাদস্তি করে। এক পর্যায়ে মাসুদ ও তার সহযোগীরা অখিল চন্দ্র বিশ্বাস ও তার কনস্টেবল মান্নান ও আমিরুলকে পিটিয়ে অখিলের কোমড়ে থাকা অস্ত্রটি লুটে নেয়। আহত পুলিশ সদস্যদের ডাক চিৎকারে আশ পাশের লোকজন ঘটনাস্থলে জড়ো হওয়ার আগেই সন্ত্রাসীরা চম্পট দেয়। অস্ত্র লুটের খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোখলেছুর রহমান, সিনিয়র সার্কেল এএসপি মাসুদুর রহমান, বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল কালামের নেতৃত্বে গোয়েন্দা(ডিবি)সহ প্রায় ২ প্লাটুণ পুলিশ নিয়ে গোটা লেজারার্স আবাসিক এলাকায় কমান্ডে স্টাইলে অভিযান চালানো হয়। পরে ওই এলাকার সৌদী প্রবাসী আলমগীর হোসেনের বাড়ির ২য় তলার একটি কক্ষ থেকে খান মাসুদ এবং তার ৩ সহযোগী যথাক্রমে শামীম, সাচ্চু ও মোশারফকে গ্রেফতার করে। অপরদিকে খান মাসুদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে বন্দর ১নং খেয়াঘাটের অটোরিকশা-সিএনজি ও বেবী চালকরা তাদের গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে যাত্রী সাধারণকে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে শ্রমিকরা অবস্থান ধর্মঘট ও মিছিলের প্রস্তুতি নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব একেএম সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্দেশ দিলে ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহাম্মদ দুলাল প্রধাণ,বন্দর পৌর আওয়ামীলীগ নেতা কাজী শহীদ আহাম্মদ, পৌর যুবলীগ নেতা কাজী জহিরুল ইসলাম ও মহানগর ছাত্রলীগের ১ম যুগ্ম আহবায়ক হাসনাত রহমান বিন্দু দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিকে গ্রেফতারের পর পরই পুলিশ খান মাসুদকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে বেড়িয়ে পড়ে। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী একরামপুর ইস্পাহানী এলাকার একটি বাড়ি হতে দারোগা অখিল চন্দ্র বিশ্বাসের লুন্ঠিত অস্ত্রটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারাভিযান শেষে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার বন্দর থানা কম্পাউন্ডে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রেসব্রিফিং করেন। তিনি অস্ত্র লুন্ঠন ও উদ্ধারের নাটকীয় বর্ণণা উপস্থাপন করেন।