ঢাকা, মে ৫, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১২:৫৭:৩৮

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

প্রাণ কুমার গং কর্তৃক রূপগঞ্জ ইস্কন মন্দিরের দেয়াল ভাংচুর : অভিযোগ দিলেও মামলা হয়নি।

| ২৬ ভাদ্র ১৪২৪ | Sunday, September 10, 2017

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনা মৃত সংঘ (ইসকন) পরিচালিত শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে রাতের আঁধারে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় তারা বাউন্ডারী দেয়াল ভাঙচুর সহ মন্দিরের পূজারী ও পরিচালকদের মন্দির ছেড়ে চলে যাবার জন্য হুমকি দেয়। ৬ সেপ্টেম্বর বুধবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার ভিংরাবো এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।  স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভিংরাবো এলাকায় অবস্থিত ইসকন পরিচালিত শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির নিয়ে পরিচালকদের সাথে ওই এলাকার প্রাণ কুমার বিশ্বাস সহ আরো কিছু লোকজনের দ্বন্ধ চলছিল। উক্ত বিরোধের জের ধরে ইতোপূর্বে কয়েকদফা হামলা মামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে।  এদিকে এবছর সেখানে দূর্গা পূজা পালন করার জন্য ইসকন মন্দিরের কমিটির পরিচালদের সাথে কথা না বলে প্রাণ কুমার বিশ্বাস ও তার লোকজন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরারর একটি লিখিত আবেদন পেশ করান। এ ঘটনা জানার পর বুধবার সকালে মন্দির পরিচালনা কমিটি রূপগঞ্জ থানার ওসি ইসমাইল হোসেনের শরনাপন্ন হয়। দুপুরে ওসি মন্দিরের ভিতরে উভয় পক্ষের লোকজন দিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চালায়। এসময় প্রাণ কুমার বিশ্বাস সহ তার লোকজন মন্দির পরিচালকদের উপর চড়াও হয়। এমনকি বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে সেখান থেকে তারা চলে আসেন।  এর জের ধরে রাত ১২টায় প্রাণ কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে গোপাল অধিকারী, রাজকুমার বিশ্বাস,উজ্জল বিশ্বাস, কমল সরকার, শ্যামল সরকার সহ আরো কিছু লোকজন শাবল, খুন্তি নিয়ে মন্দিরে হামলা চালায়। এসময় মন্দিরের বাউন্ডারী দেয়ালের পূর্ব দিকের গেইটের পাশে দেয়ালের বেশ কিছু অংশ ভেঙ্গে ফেলে তারা।  এক পর্যায়ে মন্দিরের পূজারী ও পরিচালকদের মন্দির ছেড়ে চলে যাবার জন্য হুমকি দিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরের মন্দির পরিচালন বিধান কৃষ্ণ সমদ্দার বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায়  একটি অভিযোগ দায়ের করেন।  প্রাণ কুমার বিশ্বাসের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমরা ওসি সাহেবের কাছে গিয়েছিলাম। সেখানে সমঝোতা না হওয়ায় ইউএনও সাথে ব্যাপারটা নিয়ে বসবেন বলে কথা দিয়েছেন। এ অবস্থায় আমাদের ফাঁসানোর জন্য মন্দিরের ভিতরে লোকজনই মন্দিরের দেয়াল ভেঙ্গেছে।  রূপগঞ্জ থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, ইসকন মন্দির নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে বুধবার মন্দিরের ভিতরে উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে আমি বিরোধ নিস্পত্তির চেষ্টা করে না পেরে চলে আসছিলাম। মন্দির বাউন্ডারী দেয়াল ভাঙচুরের ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।অভিযোগটি হবুহু তুলে ধরা হল……..

বরাবর,
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
রূপগঞ্জ থানা
রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

বিষয় ঃ অভিযোগ প্রসঙ্গে।

মহোদয়,
যথাবিহীত সম্মান প্রদর্শন পূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, আমি বিধান কৃষ্ণ সমাদ্দার (৩৯), সেবায়েত-শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, পিতা-মৃত পুলিন সমাদ্দার, স্থায়ী ঠিকানা- নতুন পালপাড়া, থানা ও জেলা-নারায়ণগঞ্জ, বর্তমান ঠিকানা- শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, ভিংরাব, থানা-রূপগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ। আপনার থানায় উপস্থিত হইয়া এই মর্মে অভিযোগ করিতেছি যে, বিগত কয়েক বছর যাবৎ মন্দির সংক্রান্ত বিষয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিবাদী (১) প্রাণ কুমার বিশ্বাস (৬৫), (২) রাজ কুমার বিশ্বাস (৪৫), উভয় পিতা- নন্দ কুমার বিশ্বাস, (৩) গোপাল গোস্বামী, পিতা-চিন্তা হরন গোস্বামী, (৪) উজ্জ্বল সরকার (৩০), পিতা- রমেশ সরকার, (৫) শ্যামল সরকার (২৮), (৬) কমল সরকার (২৫), উভয় পিতা- স¤ভুনাথ সরকার, সর্ব সাং- ভিংরাব, থানা-রূপগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ সহ ১৫-২০ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজন নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ইং তারিখ দুপুরে হঠাৎ মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করিয়া দুর্গাপূজা করিবে বলিয়া আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং তাতে আমরা অস্বীকৃতি জানিয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর তাদের বেআইনী কর্মকান্ডের বিবরণ দিয়া অভিযোগ প্রেরণ করি। উক্ত আবেদন দেওয়ায় উপরোল্লিখিত বিবাদীগণ ক্রোধান্বিত হইয়া মন্দিরের শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও মন্দিরে অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ইং তারিখ দিবাগত রাত আনুমানিক ১২:০০ ঘটিকায় মন্দিরের (পূর্ব পার্শ্বের) বাউন্ডারি দেয়ালের বেশ কিছু অংশ ভেঙ্গে ফেলে। আমি ও মন্দিরের ভক্তরা দেয়াল ভাঙ্গার শব্দ পেয়ে সেখানে গিয়ে তাহাদের বাঁধা দিলে তাহারা বলে যে,       ২৪ ঘন্টার মধ্যে মন্দির ত্যাগ না করিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হইবে বলিয়া আমাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। বিবাদীগণের হাতে দেশীয় অস্ত্র দেখে আমরা আর্ত চিৎকার করলে তাহারা দ্রুত পলায়ন করে। ইতিপূর্বে তাহাদের বিরুদ্ধে আপনার থানায় একাধিক জিডি ও আদালতে মামলা রহিয়াছে। তাদেরকে কোনভাবেই মন্দির দখলের অপচেষ্টা থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না। তাহারা কখন যে কি করিয়া ফেলে তা বলা যায় না। ইহাতে আমাদের মন্দিরের দৈনন্দিন পূজা-পার্বন ও শান্তি-শৃঙ্খলার বিঘ্নিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

অতএব মহোদয় সমীপে বিনীত প্রার্থনা এই যে, উপরোক্ত বিষয়টি তদন্ত পূর্বক দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসামীদের আইন আমলে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে মহোদয়ের সু-মর্জি হয়।

তারিখ ঃ ০৭/০৯/২০১৭ ইং।

নিবেদক,

(বিধান কৃষ্ণ সমাদ্দার)
মোবাইল-০১৮৩৮-৬৫৫২৮৬