ঢাকা: বিএনপির অফিসিয়াল পেজ থেকে প্রচারিত পুলিশের ওপর দলটির নেতাকর্মীদের হামলার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রকাশিত হওয়া এই ভিডিওর কমেন্টে অনেকে মন্তব্য করেছেন ‘ক্ষমতায় আসার জন্য সহিংসতা বিএনপির একমাত্র অস্ত্র’।
‘রংপুর জেলাধীন গংগাছড়া উপজেলা বিএনপির সমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা পরবর্তী প্রতিরোধের মুখে পালিয়ে যায় পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী’ ক্যাপশন দিয়ে ভিডিওটি ছাড়া হয়।
এই ভিডিও প্রকাশের পর বিএনপির নৈতিক মানদ- নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এটিকে ক্ষমতায় যাওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপি’র সহিংসতাকে ‘প্ররোচনা’ দেয়ার অংশ হিসেবে দেখছেন অনেকে। এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা এই পোস্ট থেকে শিক্ষা নিয়ে তা ‘কার্যকর করার’ কথাও বলছেন পোস্টটির কমেন্টে, যার মাধ্যমে তাদের সহিংসতায় ফিরে আসার প্রবণতা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
‘সাবাস, আমরা জিয়ার সেনা’, ‘আমাদের নেতা তারেক জিয়ার নাম নিয়ে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ওপর আক্রমণ করতে হবে’- এ ধরণের বেশ কিছু মন্তব্যও দেখা যায় কমেন্ট সেকশনে। এর আগে বিএনপি স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন নেতা বলেছিলেন, ‘পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’, যেখানে একজন মন্তব্য করেন,’ এর বেশি বিএনপি’র থেকে আশাও করা যায় না।’
দেশের প্রথম সামরিক জান্তা জেনারেল জিয়ার হাত ধরে গঠিত হয় বিএনপি। এই দল এবং তাদের সহযোগী জামায়াত ইসলাম বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ইনডেমনিটি প্রদান করে।
এই ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে বিএনপি ও তাদের মৌলবাদী সঙ্গী জামায়াত ইসলাম নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়ে আবারও সহিংসতার মাধ্যমে সরকার পতনের চিন্তা করছে।
বিএনপি এই ভিডিও প্রকাশের পর আওয়ামী লীগ তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে এক পোস্টের মাধ্যমে এটিকে ‘বিএনপি’র সাইবার সন্ত্রাস’ হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেছে। ২০১৩ সালে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়ে এভাবেই দেশ জুড়ে সহিংস কার্যক্রম শুরু করে বিএনপি-জামায়াত। এ বিষয়টিকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে একজন কমেন্টে লেখেন, ‘এটি স্পষ্ট যে ব্যালটে ভোটের পরিবর্তে বিএনপি-জামায়াত আবারও সহিংসতা শুরু করতে যাচ্ছে।
বিএনপিকে ‘বাংলাদেশ বিরোধী’ অ্যাখ্যা দিয়ে একজন লেখেন, ‘প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সময় এই দেশে ১৯টির বেশি সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে। অন্যদিকে তারেক রহমান আসার পর এই দল বর্তমান সরকারের পতনের জন্য যাচ্ছেতাই আচরণ করেছে।’
এই পোস্টে জিয়াউর রহমান, তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং সর্বশেষ তারেক জিয়ার ‘দেশ বিরোধী অবস্থানের কথা স্মরণ করে এমন মন্তব্যও করেছেন অনেকে, ‘ছেলে তার বাবার মতই।’
২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কথা স্মরণ করে একজন মন্তব্য করেন, ‘সিরিজ বোমা হামলা থেকে শুরু করে প্রগতিশীল চিন্তাধারার মানুষ, লেখক, সাংবাদিক এবং প্রগতিশীল রাজনীতিবিদদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে হত্যার মাধ্যমে অপরাধের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন তারেক রহমান ও তার বেছে নেয়া লুৎফুজ্জামান বাবর। ইতোমধ্যে বাবর জেলে রয়েছেন তার সন্ত্রাস কার্যক্রমের জন্য এবং তারেক জিয়া পলাতক।
অনেকে এভাবেও লিখেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন জেনারেল জিয়া, যা আজ বেশ কিছু গোয়েন্দা প্রতিবেদনে স্পষ্ট। অন্যদিকে তার ছেলে তারেক রহমান বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে হত্যা করতে চেয়েছিলেন।’