ঢাকা, মে ২, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৬:৩৯:৪৭

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে সক্ষম হবো : প্রধানমন্ত্রী

| ১৭ অগ্রহায়ন ১৪২৩ | Thursday, December 1, 2016

ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
পার্বত্য শান্তি চুক্তির ১৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
আগামীকাল ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের ১৯ বছর পূর্তি হবে। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য শান্তি চুক্তির ১৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান এবং শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দীর্ঘদিনের সংঘাতময় পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই আওয়ামী লীগ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে এই ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বিশ্বে এটি একটি বিরল ঘটনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামাত জোট সরকার ঐতিহাসিক এই চুক্তির চরম বিরোধিতা করে পার্বত্য অঞ্চলকে পুনরায় অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল। তাদের এ হীন উদ্দেশ্য সফল হয়নি। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সর্বত্র শান্তি বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার শান্তি চুক্তির আলোকে এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ গঠন করা হয়েছে। সরকার এ অঞ্চলের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, অবকাঠামো, মোবাইল নেটওয়ার্কসহ সকলখাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি বলেন, পাহাড়ি জনগণের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মানোন্নয়নে রাঙ্গামাটিতে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছি এবং ভূমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বোর্ডের কার্যক্রম আরো গতিশীল ও সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে আমাদের সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড অধ্যাদেশ, ১৯৭৬ বাতিল করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন, ২০১৪ প্রণয়ন করেছে। আমরা এই বোর্ডের বরাদ্দ বহুগুণে বৃদ্ধি করেছি।
তিনি বলেন, পার্বত্য জেলাসমূহের নৈসর্গিক সৌন্দর্য সমুন্নত রাখা ও পর্যটন শিল্পের প্রসারেও আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের সময়োচিত উদ্যোগ গ্রহণের ফলে আজ পার্বত্য জেলাসমূহ কোন পিছিয়ে পড়া জনপদ নয়। দেশের সার্বিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এ অঞ্চলের জনগণ সম-অংশীদার।
প্রধানমন্ত্রী বাণীতে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম আধুনিকতার ছোঁয়া বিবর্জিত পশ্চাৎপদ পার্বত্য জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূলধারায় ফিরিয়ে আনেন। তাঁদের ভাগ্যোন্নয়নে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেন। আঞ্চলিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীদের সম-সুযোগ প্রদানের ব্যবস্থা নেন। এ লক্ষ্যে জাতির পিতা ১৯৭৩ সালে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও করিগরি প্রতিষ্ঠানসমূহে পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীদের জন্য সুনির্দিষ্ট আসন সংরক্ষণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো পার্বত্য অঞ্চলের সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পরিবর্তে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বাঙালি-পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে। খুন, রাহাজানি, অন্যের সম্পদ জবরদখল এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহারের মাধ্যমে এ অঞ্চলকে আরও অস্থিতিশীল করে তোলে। এমনি প্রেক্ষাপটে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি দেশের অখ-তা ও জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার লক্ষ্যে একটি সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ হিসেবে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির মাধ্যমে এ অঞ্চলের দীর্ঘদিনের জাতিগত হানাহানি বন্ধ হয়। অনগ্রসর ও অনুন্নত পার্বত্য অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় শান্তি ও উন্নয়নের ধারা। ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কার অর্জন এই চুক্তির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির স্মারক।