ঢাকা, মে ৬, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৩:৪৬:৫৩

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

পাকিস্তানি হানাদারদের আত্মসমর্পণের পর্ব

| ৩ পৌষ ১৪২৩ | Saturday, December 17, 2016

আত্মসমর্পণ পর্ব

 

সেদিন সারাবিশ্বের শুধুমাত্র সকল বাঙালি নয়, সকল মানবতাবাদী জনগণও অধীর প্রতীক্ষায় অপেক্ষারত ছিল পাকিস্তানি হানাদারদের আত্মসমর্পণের খবরটি শুনার জন্য। ১৬ ডিসেম্বর সকাল আটটায় রাজধানী ঢাকা শহরের প্রান্তসীমায় পৌঁছে ঢাকা-মিরপুর সড়কের হেমায়েতপুর সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে মেজর জেনারেল নাগরা এক টুকরো কাগজ জিপের বনেটে রেখে শত্রুপক্ষের কমান্ডার পাকিস্তানি পূর্বাঞ্চলের কমান্ডার আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজিকে যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে আত্মসমর্পণের জন্য লিখলেন। তিনি লিখলেন—

 

প্রিয় আবদুল্লাহ,

 

আমরা এসে গেছি। তোমার সব ভেল্কি খতম হয়ে গিয়েছে। আমরা তোমাকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেছি। বুদ্ধিমানের মত আত্মসমর্পণ কর। না হলে তোমার ধ্বংস অনিবার্য। আমরা কথা দিচ্ছি, আত্মসমর্পণ করলে জেনেভো কনভেনশন অনুযায়ী তোমাদের সাথে আচরণ করা হবে। তোমাকে বিশেষভাবে লিখছি, আত্মসমর্পণ করলে তোমার জীবনের নিশ্চয়তা দেয়া হবে।

 

তোমারই

 

মেজর জেনারেল নাগরা

 

১৬/১২/৭১ইং

 

০৮.৩০ মিনিট।

 

যৌথবাহিনীর চার সদস্য, তিন জন মিত্রসেনা ও একজন মুক্তিযোদ্ধা নাগরার লেখা বার্তা নিয়ে সাদা পতাকা না থাকায় একটি সাদা জামা উড়িয়ে শত্রু-অবরুদ্ধ ঢাকা নগরীর দিকে দুটি জিপে ছুটল। আত্মসমর্পণের আহবানের বার্তা নিয়ে চার সাহসী যোদ্ধা চলে যাওয়ার পরে যৌথবাহিনী আমিন বাজার স্কুলের পাশের পুল পর্যন্ত এগিয়ে যেতে থাকে।

 

আগেরদিন রাত চারটার দিকে মিত্রবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার ক্লেরের বেতারে নিয়াজির আত্মসমর্পণের ইঙ্গিতসূচক কিছু বার্তা ধরা পড়েছিল। নিয়াজি আত্মসমর্পণ করতে পারে এ ধরনের আভাস-ইঙ্গিত ভারতীয় হাইকমান্ডও পেয়েছিল। কিন্তু মিরপুরের এই যৌথবাহিনীর কাছে এই বিষয় সম্পর্কে তখনো হাইকমান্ডের কোনো পরিষ্কার বার্তা ছিল না। উত্তর দিক থেকে ঢাকার উপকণ্ঠে এগিয়ে যাওয়া যৌথবাহিনীর কাছে কেবল খবর ছিল ১৬ ডিসেম্বর সকাল এগারোটার পর যৌথবাহিনী ঢাকার ওপর মরণ আঘাত হানবে। ওই আক্রমণে সাহায্যের জন্য ঠিক এগারোটায় বিমানবাহিনী ঢাকার ওপর বোমাবর্ষণ করবে। অন্যদিকে মানসিক চাপ সৃষ্টির জন্য ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল মানেকশ পাকিস্তান বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করতে আহ্বান জানাচ্ছিলেন। আকাশবাণী থেকে মানেকশ’র আহ্বান ‘হাতিয়ার ডাল দো’ বার বার প্রচার করা হচ্ছিল। ঢাকার আকাশে লক্ষ লক্ষ লিফলেট ছাড়া হয়। মিরপুরের যৌথবাহিনীও বেতারের সেই আহ্বান শুনছিল। আত্মসমর্পণের উদ্দেশ্যে নিয়াজি আমেরিকান দূতাবাস কিংবা জাতিসংঘের সাথে যোগাযোগ করছে কিনা, করলে কী ধরনের যোগাযোগ করছে, লিফলেট ছড়ানো ও মরণ আঘাত হানা ছাড়া হাইকমান্ড শত্রুর আত্মসমর্পণের অন্য কোনো প্রক্রিয়া অবলম্বন করছে কিনা তা মেজর জেনারেল নাগরার নেতৃত্বে অগ্রসর যৌথবাহিনীর জানা ছিল না। নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে বিরাজমান সার্বিক পরিস্থিতিতে পরাভূত শত্রুর মানসিক অবস্থা আঁচ করে এবং উত্তরোত্তর বিজয়ে অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত হয়ে কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় এই দূত পাঠায়।

 

দূত পাঠানোর এক ঘণ্টা পরে ঠিক সাড়ে ন’টায় মিরপুর সেতুর দিক থেকে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটে আসা গাড়ির গর্জন শোনা গেল। দ্রুত ধেয়ে আসা গাড়ির গর্জন শুনে যৌথবাহিনীর সৈনিকেরা উদ্বিগ্ন ও উত্কণ্ঠিত হয়ে ওঠে। পরক্ষণেই মাটি কাঁপিয়ে কয়েক ঝাঁক গুলির শব্দ শোনা গেল। চার-পাঁচটি মেশিনগান একসঙ্গে বিকট শব্দে গর্জে ওঠে থেমে যায়। চকিতে ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার পরে আবারো থমথমে নীরবতা। ছুটে আসা গাড়ির ওপর গুলি ছুড়তেই দ্রুত অগ্রসরমাণ দু’টি গাড়িই নিশ্চল হয়ে যায়। যৌথবাহিনীরও ভুল ভাঙল। গাড়ি দুটো শত্রুর নয়, যৌথবাহিনীর গাড়ি দুটোই ফিরে আসছিল। গাড়ির ওপর কোনো সাদা পতাকা বা কাপড় না থাকায় শত্রুরা ধেয়ে আসছে ভেবে অগ্রবর্তী দলের সৈন্যরা গুলি ছুড়েছে।

 

প্রতিনিধিদল নিয়াজির কাছে নাগরার চিঠি পৌঁছে দিলে, নিয়াজি আত্মসমর্পণে রাজি আছে বলে জানিয়ে দেয়। সামনে রক্তক্ষয়ী বিরাট যুদ্ধ হচ্ছে না এবং পাকিস্তান হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করছে জেনে আনন্দে প্রতিনিধি দল নিজেদের সেনাপতিদের কাছে এই দারুণ সুখবরটি পৌঁছে দিতে হাওয়ার বেগে ছুটে আসছিল। আসার পথে আনন্দে-উদ্বেল আবেশে আনমনা হয়ে গাড়িতে লটকানো সাদা জামাটি কখন যে প্রচণ্ড বাতাসে উড়ে গেছে তা তারা জানতেই পারে নি। তাই এই বিভ্রাট। ভুল যখন ভাঙল তখন যা হবার হয়ে গেছে! তিন জন সঙ্গে সঙ্গে শহীদ হলো। যৌথবাহিনী আমিন বাজার স্কুলের পাশে দৌড়ে গিয়ে দেখল, দুটি জিপই বিকল হয়ে থেমে রয়েছে। একটিতে তিন জনের মৃতদেহ। রক্তে সমস্ত জিপটি ভেসে গেছে। তখনও তাদের দেহ থেকে রক্ত চুইয়ে পড়ছে। এত দুঃখের মাঝেও অন্যজন আহত অবস্থায় জিপের স্টিয়ারিং ধরে বসে ছিলেন। দারুণ সুখবরটি যত তাড়াতাড়ি দিতে পারবেন, তত তাড়াতাড়ি যেন সহযোদ্ধা হারানোর দুঃখ ও গুলিতে আহত হওয়ার নিদারুণ যন্ত্রণার উপশম হবে। আহত অবস্থায় গলার স্বর জড়িয়ে আসা সত্ত্বেও যতদূর সম্ভব স্পষ্টভাবে প্রত্যয় মেশানো কণ্ঠে বিজয়ীর ভঙ্গিতে বললেন, ‘শত্রুরা, আত্মসমর্পণে রাজি হয়েছে। তাদের দিক থেকে এখনই কোনো জেনারেল আত্মসমর্পণের প্রথম পর্ব সারতে আসছেন।’ যে মিত্রসেনা এই সংবাদ দিলেন, তাঁর হাঁটুর নিচের অংশ বুলেট বিদ্ধ হয়ে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গেছে। তাঁর ক্ষতস্থান দু’হাতে চেপে ধরে যৌথবাহিনীকে সর্বশেষ সংবাদ দিলেন।

 

কয়েক হাজার বছর আগের ইতিহাস যেন ভিন্ন প্রেক্ষিত ও ভিন্ন পটভূমিতে জীবন্ত হয়ে উঠল। ম্যারাথন থেকে এথেন্স নয়, ঢাকা থেকে মিরপুরে গৌরবোজ্জ্বল মনপ্রাণ অথচ গুলিবিদ্ধ যন্ত্রণাক্লিষ্ট দেহের দ্রুত নিঃশেষিত শক্তি শেষবারের মতো জড়ো করে শত্রু সেনাদের আত্মসমর্পণ তথা পূর্ণ বিজয়ের দারুণ সংবাদ দিলেন এ যুগের বীর সেনানী, এই শতাব্দীর ফিডি পাইডিস। (স্বাধীনতা ’৭১, কাদের সিদ্দিকী)

 

বাঙালির বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিজয়ের বার্তায় সেদিন হাজার বছরের আগের গ্রিসের ইতিহাসের পুনরুজ্জীবন ঘটেছিল। সমগ্র জাতি আত্মসমর্পণের মহালগ্নের প্রতীক্ষায় উন্মুখ। পাকিস্তানের কমান্ডার নিয়াজির জনসংযোগ কর্মকর্তা সিদ্দিক সালিক তার ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ গ্রন্থে সে বিবরণ দিয়ে লিখলেন—

 

‘বিকেলের শুরু হতেই জেনারেল নিয়াজী গাড়ি করে ঢাকা বিমানবন্দরে গেলেন ভারতীয় পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিত্ সিং অরোরাকে অভ্যর্থনা জানাবার জন্য। তিনি পত্নীকে সঙ্গে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে এলেন। এক বিপুল সংখ্যক বাঙালি ছুটে গেল তাদের ‘মুক্তিদাতা’ ও তার পত্নীকে মাল্যভূষিত করতে। নিয়াজী তাকে সামরিক কায়দায় স্যালুট দিলেন এবং করমর্দন করলেন। সে ছিল এক হূদয়স্পর্শী দৃশ্য। বিজয়ী এবং বিজিত দাঁড়িয়ে আছে প্রকাশ্যে বাঙালির সামনে। আর বাঙালিরা অরোরা’র জন্য তাদের গভীর ভালোবাসা এবং নিয়াজীর জন্য তীব্র ঘৃণা প্রকাশে কোনরূপ গোপনীয়তার আশ্রয় নিচ্ছে না। উচ্চকণ্ঠে চিত্কার ও স্লোগানের মধ্য দিয়ে তাদের গাড়ি রমনা রেসকোর্স-এ এলো। সেখানে আত্মসমর্পণের জন্য মঞ্চ তৈরি করা হয়। বিশাল ময়দানটি বাঙালি জনতার উদ্বেগ আবেগে ভাসছিল। তারা প্রকাশ্যে একজন পশ্চিম পাকিস্তানি জেনারেলের অবমাননার দৃশ্য দেখবার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছিল।’

 

জেনারেল নিয়াজি  তার ‘দ্য বিট্রেয়াল অব ইস্ট পাকিস্তান’ গ্রন্থে লিখেছেন—

 

“১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। মেজর জেনারেল ফরমান ও এডমিরাল/ শরীফ এ অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন। আমি (নিয়াজি) কম্পিত হাতে আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করি। তখন আমার অন্তরে উত্থিত ঢেউ দু’চোখ বেয়ে অশ্রু হয়ে গড়িয়ে পড়ে। অনুষ্ঠানের একটু আগে একজন ফরাসি সাংবাদিক এগিয়ে এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘এখন আপনার অনুভূতি কী, টাইগার? জবাবে বললাম, আমি অবসন্ন’। অরোরা আমার পাশেই ছিলেন।”

 

সেদিন আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ‘এস ফোর্স’ প্রধান, ৩ নং সেক্টর কমান্ডার জেনারেল (লে. কর্নেল) কে. এম সফিউল্লাহ বীর উত্তম। তিনি তাঁর ‘মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ’ গ্রন্থে লেখেন—

 

‘লে. জেনারেল নিয়াজী শর্তাবলিতে ২টা ৪৫ মিনিটে অনুস্বাক্ষর করলে আত্মসমর্পণ দলিলে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরের সময়সূচি নির্ধারিত হয় ৪টা ৩০ মিনিট। ১টা ৪৫ মিনিটে ডেমরায় অবস্থানরত পাকিস্তানি সৈন্যরা সম্মিলিত বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। বেলা ২টায় ডেল্টা সেক্টর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার সাবেগ সিং আমাকে (সফিউল্লাহ) জানায় মিত্র বাহিনীর ৫৭তম মাউন্টেন ডিভিশন থেকে তার কাছে বার্তা এসেছে— বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সম্মিলিত বাহিনীর প্রধান লে. জেনারেল জগজিত্ সিং অরোরাকে স্বাগত জানানোসহ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য। ৩১১তম মাউন্টেন ব্রিগেডিয়ার কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার মিস্ত্রাও অনুরূপ সংবাদ আমাকে পৌঁছায়।… লে. কর্নেল খিলজির সহায়তায় বাধা অতিক্রম করে ৩টা ৩০ মিনিটে বিমানবন্দরে পৌঁছি। ঢাকা বিমানবন্দর যুদ্ধবিধ্বস্ত মাঠের আকার ধারণ করেছে। তবু বিজয় দিবসে এর মধ্যে স্বাগতসূচক মৃদু হাসির ঝলক যেনো ফুটে উঠেছে।

 

সম্মিলিত বাহিনী প্রধান লে. জেনারেল অরোরাকে যারা সাদর সম্ভাষণ জানাতে এসেছেন এদের মধ্যে লে. জেনারেল নিয়াজী হচ্ছেন সকল দৃষ্টির কেন্দ্র। বিষণ্ন এবং অবদমিত তার মুখাবয়ব। পরাজিত একজন সেনাপতিকে প্রত্যক্ষ করার মতো এ হচ্ছে এক অভিজ্ঞতা— এমন এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা— যিনি যুদ্ধক্ষেত্রেই শুধু পরাজয়ের গ্লানি স্বীকার করেননি, যার রয়েছে আরো এক লজ্জাকর গণহত্যার সদ্য-অতীত ইতিহাসও।

 

তার পরাজয় শুধু পরাজয় নয়— পরাজয়েও এক ধরনের দীপ্তি আছে— লে. জেনারেল নিয়াজীর তাও ছিল না। আমি (সফিউল্লাহ) যখন তার দিকে ঘৃণার দৃষ্টি নিক্ষেপ করি তখন তার পুরো অস্তিত্ব অবিন্যস্ত এবং সম্পূর্ণ কালিমালিপ্ত আকারে আমার দৃষ্টিতে ভেসে ওঠে। …

 

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। এ হচ্ছে উত্সবের দিন। এ হচ্ছে আনন্দের দিন। এ হচ্ছে বিধাতার উদ্দেশে শোকরিয়া জ্ঞাপনের দিন। এ হচ্ছে এক সমুদ্র রক্ত থেকে উত্থিত বাংলাদেশের বিজয় দিবস।’

 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সবচেয়ে বড় সংখ্যক সৈনিকের আত্মসমর্পণের ঐতিহাসিক ঘটনা ১৬ ডিসেম্বর। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহর থেকে শুরু করা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতি ১৬ ডিসেম্বরে এসে পরিণতি লাভ করে। বিশ্ব ইতিহাসে এই বিজয়ের বার্তা সকল মানবতাবাদী নিপীড়িত জনগণের কাঙ্ক্ষিত বিজয়। আর এর মধ্য দিয়েই রচিত হয়েছে বাঙালির অবিস্মরণীয় মুক্তিসংগ্রামের গৌরবগাথা।