১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫,টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে মা ও ছেলে নির্যাতনের প্রতিবাদে উত্তেজিত জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হওয়ার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। উপজেলা সদর দিয়ে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল করলেও শহরের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোতায়েন রয়েছে।
শুক্রবার বিক্ষুদ্ধ জনতা ও পুলিশের সংঘর্ষে নিহতরা হলেন, কালিহাতী উপজেলার কুষ্টিয়া গ্রামের ছানু শেখের ছেলে ফারুক হোসেন (৩৮), ঘাটাইল উপজেলার কালিয়া গ্রামের মৃত ওসমান এর ছেলে শামিম (৩২) ও আঠারদানা গ্রামের রবি চন্দ্র পালের ছেলে শ্যামল চন্দ্র পাল (৩৮)।
নিহতদের দেহে গুলি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন, টাঙ্গাইল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আশরাফ আলী।
সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়াও এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলার প্রস্ততি চলছে বলে জানিয়েছেন সদর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার হাফিজ আল আসাদ।
ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। ডিসি মোঃ মাহবুব হোসেন এবং পুলিশ সুপার হাফিজ তদন্ত কমিটি শনিবার থেকে তদন্ত শুরু করবে বলে জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত ৩ জনের লাশ তাদের পরিবারের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনোও কোনো মামলা হয়নি।
শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৬ টার দিকে ঘাটাইল উপজেলার আঠারদানা ও হামিদপুর এলাকার ৪-৫ শ লোক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কালিহাতী থানা ঘেরাওয়ের উদ্দেশে কলেজগেট এলাকায় পৌঁছলে পুলিশের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া ইটপাটকেলের জবাবে পুলিশ টিআরসেল, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও গুলি ছুঁড়েন। এতে ৬ জন গুলিবিদ্ধ সহ ২৫-৩০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে তিনজন নিহত হয়।
গত ১২ সেপ্টেম্বর কালিহাতী পৌর এলাকার সাতুটিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম রেমার স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের টানে ঘাটাইলের আঠারদানা গ্রামের আলামিনের সাথে চলে যায়। ১৫ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুরে আলামিন ও তার মাকে কৌশলে ডেকে এনে মাকে ছেলের সামনে শ্লীলতাহানী ও বিবস্ত্র করে অমানবিক নির্যাতন করে রফিকুল ইসলাম ও তার ভগ্নিপতি হাফিজ।