ঢাকা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৯:৫৭:৪৬

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

নির্বাচনী প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ শুরু করেছেন বিদেশীরা

| ২৭ মাঘ ১৪২৩ | Thursday, February 9, 2017

বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ শুরু করে দিয়েছেন বিদেশীরা। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সম্প্রতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন; এ বিষয়টিও তাদের পর্যালোচনার মধ্যে আছে। যদিও নবগঠিত নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে কোনো বিদেশী কূটনীতিক সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে এ কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে তাদের গভীর দৃষ্টি থাকবে।
ঢাকায় বিদেশী দূতাবাসগুলো নতুন নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়েছে। তাদের ব্যাপারে বিদেশীরা সতর্ক অবস্থানই নিয়েছে। নতুন নির্বাচন কমিশনকে স্বাগত জানানো কিংবা সমালোচনা কোনোটাই করেনি বিদেশী কূটনীতিক মহল। বরং বিদেশী কূটনীতিকরা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে নতুন নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ দেখতে চাইছেন। এটা শুধু নির্বাচনের দিনের ঘটনা নয়, বরং গোটা প্রক্রিয়াকে তারা নিবিড় ও গভীর মনোযোগে পর্যবেক্ষণ করবেন। আন্তর্জাতিক মহল আগামীতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন দেখতে চায় না। বরং একটি অর্থবহ নির্বাচনেই তাদের আগ্রহ।
জানতে চাইলে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া ব্লুম বার্নিকাট বুধবার যুগান্তরকে বলেছেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ভোটের দিনে যা ঘটে তার চেয়ে বেশি কিছু। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হল একটি নির্বাচনী প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়া এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করে যাতে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও বিতর্ক জোরের সঙ্গে সম্পন্ন করার স্থান পায়।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘নির্বাচনী প্রক্রিয়া হল এমন একটি পরিবেশ যেখানে গণমাধ্যম নিরপেক্ষভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে পারে। এবং নাগরিকরা তাদের বিবেক অনুযায়ী ভোট দেয়ার অধিকার পান, তাদের ভোটকে গণনার মধ্যে আনতে পারেন এবং প্রার্থীদেরকে তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার পূরণের লক্ষ্যে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে পারেন।’
নতুন নির্বাচন কমিশনের নাম ঘোষণার ঠিক আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদোন বলেছেন, তারা নতুন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। নতুন নির্বাচন কমিশন চাইলে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা এবং আধুনিকায়নে সহায়তা দেবেন। প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ইইউসহ বিভিন্ন দাতাদেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প নিয়ে কাজ করছিল। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর ওইসব প্রকল্পের অনেকগুলো বন্ধ হয়ে যায়। অনেক প্রকল্প সংকুচিত করা হয়। আধুনিক ডিজিটাল ভোটার তালিকা প্রণয়নসহ নানা কর্মসূচি ছিল এসব প্রকল্পের অধীন। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন করে প্রকল্পগুলো পুনরায় শুরু হয় কিনা সেটি নির্ভর করবে নতুন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার বৈঠকের ফলাফলের ওপর।
জাতিসংঘের নেতৃত্বে বেশ কিছু দেশের কূটনীতিক গত নভেম্বরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন। ওইসব কূটনীতিক রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। কিন্তু এতে সরকারের সাড়া মেলেনি। জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী রবার্ট ওয়াটকিনসন সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে তারা রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়েছিলেন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা প্রকল্প সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির পরামর্শও জানতে চেয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি তখনও তাদের আলোচনার মধ্যে ছিল বলে তিনি জানিয়েছিলেন।
ঢাকায় অপর একজন ইউরোপীয় কূটনীতিক যুগান্তরকে বলেছেন, তারা গত নভেম্বরে যে সময়ে রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়েছিলেন; ওই সময়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনেকটা ধোঁয়াশা ছিল। কী ঘটতে যাচ্ছে সে সম্পর্কে কেউ কিছু জানতেন না। তারপর রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছেন। সার্চ কমিটি গঠন করেছেন। সার্চ কমিটি শুধু রাজনৈতিক দল নয়; সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করেছে। ফলে প্রক্রিয়া অনেক অগ্রসর হচ্ছে।
ওই কূটনীতিক আরও বলেন, তারা এমন কিছু করতে চান না যাতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ মনে হতে পারে। বরং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী সহায়তা দিতে চান। ফলে এখন নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তারা সহায়তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।